ইউরোপ-লাতিনের দাপটে একমাত্র এশীয় কাণ্ডারি

2 months ago 6

লড়াইটা হতে পারতো ইউরোপ বনাম ব্রাজিলের। হওয়ার কথাও ছিল। কারণ, ম্যানচেস্টার সিটির বিপক্ষে সৌদি ক্লাব আল হিলাল জিততে পারবে, এটা কেউ স্বপ্নেও ভাবতে পারেনি। ম্যানচেস্টার সিটির হয়তো পুরো মৌসুমটা খারাপ গেছে; কিন্তু ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বে পেপ গার্দিওলার শিষ্যরা যেভাবে খেলেছে, তাতে করে তাদেরকে হারানো তো ‍দূরে থাক, ন্যুনতম লড়াই করার চিন্তাও করতে পারার কথা নয় আল হিলালের।

কিন্তু ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর কথাটাইকেই যেন পুরোপুরি সত্য প্রমাণ করার দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছে আল হিলাল। সৌদি প্রো লিগে রোনালদো হয়তো আল হিলালের প্রতিদ্বন্দ্বী হতে পারে; কিন্তু সিআর সেভেন যখন সৌদি প্রো লিগকেই বিশ্বের সেরা ৫ লিগের অন্যতম হিসেবে দাবি করলেন, তখন আল হিলালের দায়িত্ব বৈশ্বিক মঞ্চে সৌদি আরবের লিগের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করা।

সে ব্রত নিয়েই হয়তো সিমোনে ইনজাগির শিষ্যরা ফ্লোরিডার ওরল্যান্ডোর ক্যাম্পিং ওয়ার্ল্ড স্টেডিয়ামে ম্যানসিটির বিপক্ষে খেলতে নেমেছিলো। ১২০ মিনিটের রুদ্ধশ্বাস লড়াইয়ে, ৭ গোলের থ্রিলার ম্যাচে সিটিকে ৪-৩ গোলে হারিয়ে বিদায় করে দিলো। গ্যালারিতে নিল ঢেউ সৃষ্টি করে নিজেরা উঠে গেলো কোয়ার্টার ফাইনালে।

ক্লাব বিশ্বকাপে লাতিন আমেরিকা থেকে অংশ নিয়েছে ৬টি দল। কনকাকাফ, সিএএফ (আফ্রিকা) ও এএফসি (এশিয়া) থেকে ৪টি করে দল অংশ নিয়েছে। বাকি দুটি দল একটি যুক্তরাষ্ট্র থেকে স্বাগতিক হিসেবে (ইন্টার মিয়ামি) ও অন্যটি এসেছে ওশেনিয়ান চ্যাম্পিয়ন হিসেবে (অকল্যান্ড সিটি)।

প্রথম রাউন্ডে ওশেনিয়া ও সিএএফ (আফ্রিকা) থেকে অংশগ্রহণকারী সব দলই বিদায় নিয়েছে। এছাড়া কনকাকাফ, উয়েফা (ইউরোপ) ও এশিয়া থেকে তিনটি করে, লাতিন থেকে দুটি দল বিদায় নেয়। দ্বিতীয় রাউন্ডে কনকাকাফের মন্তেরি, স্বাগতিক ইন্টার মিয়ামি ও এএফসি থেকে আল হিলাল দ্বিতীয় রাউন্ডে ওঠে। লাতিন থেকে আর্জেন্টিনা থেকে অংশ নেয়া দুটি দলই (রিভার প্লেট ও বোকা জুনিয়র্স) বিদায় নেয়। ব্রাজিলের চারটি ক্লাবই উঠে আসে দ্বিতীয় রাউন্ডে।

al hilal

দ্বিতীয় রাউন্ডে মেক্সিকান ক্লাব মন্তেরিকে বিদায় করে দিয়েছে বরুশিয়া ডর্টমুন্ড। পিএসজি বিদায় করে দেয় ইন্টার মিয়ামিকে। লাতিন আর ইউরোপের বাইরে বাকি থাকলো কেবল আল হিলাল। ম্যানসিটির মুখোমুখি তারা। এর অর্থ, দ্বিতীয় রাউন্ড থেকে এশিয়ান প্রতিনিধিও বিদায় নিতে হচ্ছে!

কিন্তু সবাইকে অবাক করে দিয়ে মার্কোস লিওনার্দোর জোড়া গোল, ম্যালকম ও কালিদু কৌলিবালির গোলে পেপ গার্দিওলার শিষ্যদের বিদায় করে দিয়েছে সৌদি ক্লাব আল হিলাল।

কোয়ার্টার ফাইনালে উঠে আসা ৮ দলের ৫টিই ইউরোপের। পিএসজি, রিয়াল মাদ্রিদ, বায়ার্ন মিউনিখ, চেলসি ও বরুশিয়া ডর্টমুন্ড। লাতিন তথা ব্রাজিলের ক্লাব দুটি। পালমেইরাস ও ফ্লুমিনেন্স। এর মধ্যে ফ্লুমিনেন্স দ্বিতীয় রাউন্ডে বিদায় করেছে ইন্টার মিলানকে। বাকি ক্লাবটি এশিয়ার একমাত্র কাণ্ডারি আল হিলাল।

যেখানে হওয়ার কথা ছিল ইউরোপ বনাম ব্রাজিল লড়াই, সেখানে আল হিলালের কারণে সেটা আর বলা যাচ্ছে না। সেমিফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে সিমোনে ইনজাগির শিষ্যদের মুখোমুখি হতে হবে ব্রাজিলিয়ান ক্লাব ফ্লুমিনেন্সের। ৪ জুলাই প্রথম কোয়ার্টার ফাইনালে মুখোমুখি হবে এই দুই দল।

ব্রাজিলিয়ান ক্লাবটিকে হারিয়ে চমক কী তবে অব্যাহত রাখতে পারবে আল হিলাল? নাকি লাতিন ‘জাদু’র মায়ায় পড়ে হারিয়ে যাবে ওরল্যান্ডোর ক্যাম্পিং ওয়ার্ল্ড স্টেডিয়ামের সবুজ ঘাসে! যদিও আল হিলালের জন্য মাঠটা পরিচিত। এখানেই তো ম্যানসিটিকে হারানোর মত অবিশ্বাস্য কাণ্ডের জন্ম দিয়েছে সিমোনে ইনজাগির শিষ্যরা!

আইএইচএস/

Read Entire Article