সর্বশেষ দুই বিশ্বকাপে ইতালিকে মিস করেছেন বিশ্বব্যাপী অনেক ফুটবলপ্রেমী। দুই বিশ্বকাপের মাঝে কিন্তু তারা আবার ঠিকই পড়েছে ইউরোপ শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট। ইউরো কাপের বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা কী করবে এবার?
একদিন পর জার্মানিতে শুরু হচ্ছে ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপ। শিরোপা ধরে রাখতে পারবে আজ্জুরিরা? কতটা সম্ভাবনাই আছে তাদের? ফুটবল বিশ্লেষকরা কিন্তু ফেবারিটদের তালিকায় ইতালিকে নিচের দিকেই রাখছেন। জার্মানি, স্পেন, ফ্রান্স, ইংল্যান্ডের মাথার ওপর ইতালিকে রাখছেন না কোনো কেউই।
অনেকে আবার মনে করেন, এই ফেবারিট না থাকাটাই শাপেবর হতে পারে ইতালির জন্য। অন্যরা যখন প্রত্যাশার চাপে থাকবে, তখন নিজেদের খেলাটা দিয়ে বাজিমাত করবে চারবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা।
তিন বছর আগে যে দলটি নিয়ে ইউরো চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ইতালি সেই দলে অনেক পরিবর্তন এসেছে। ট্রফি জেতানো কোচ রবার্তো মানচিনি দায়িত্ব ছেড়েছেন গত বছরের শেষের দিকে। তার উত্তরসূরি লুচিয়ানো স্পালেত্তির নেতৃত্বে দলটি নতুনভাবে গতিশীল হয়েছে।
বেশ কয়েকজন অভিজ্ঞ খেলোয়াড় দলে নেই। রক্ষণের গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় জর্জি চিয়েলিনি আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার শেষ করেছেন। সর্বশেষ ইউরো জিততে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করা লিওনার্দো বোনুচ্চি এবং লরেঞ্জো ইনসাইনও দলে নেই। দলটিতে প্রতিভাবান যে ফুটবলাররা আছেন, তারা এখন পুরোপুরি প্রস্তুত কিংবদন্তিদের জুতোয় পা রাখতে।
চ্যাম্পিয়নশিপ জার্মানিতে বলেই মধুর স্মৃতি ভেসে আসবে ইতালিয়ানদের। ২০০৬ সালে এই দেশ থেকেই তারা জিতেছিল সর্বশেষ বিশ্বকাপ।
কোচ মার্সেলো লিপ্পির নেতৃত্বে ফ্যাবিও ক্যানাভারো, জিয়ানলুইজি বুফন এবং ফ্রান্সেস্কো টট্টির মতো অভিজ্ঞ খেলোয়াড়দের সমন্বয়ে গড়া ইতালি জিতেছিল নিজেদের চতুর্থ বিশ্বকাপ।
২০০৬ বিশ্বকাপের আগে ইতালির অবস্থার সঙ্গে মেলানো যায় এই চ্যাম্পিয়নশিপ শুরুর আগের অবস্থা। তখনো ইতালিকে টপ ফেবারিট হিসেবে বিবেচনা করা হয়নি। যেমন করা হচ্ছে না এই চ্যাম্পিয়নশিপেও।
কিন্তু দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দিয়ে ট্রফি জিতে নিয়েছিল তারা। ইতালিয়ানদের কাছে জার্মানির মাটি অনেকটা নিজেদের মতো। এখানে প্রচুর ইতালিয়ান থাকেন। ম্যাচের দিন নিজেদের সমর্থকে ভরা থাকে গ্যালারি। এসবও ইতালির ভালো পারফরম্যান্সের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
পরিষ্কার ফেবারিট না হলেও ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপে আরেকটি চমক দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে ইতালির। অভিজ্ঞ ও তারুণ্যের মিশেলে ভারসাম্যপূর্ণ স্কোয়াড ইতালির। আছেন খেলোয়াড়দের উদ্ধুদ্ধ করার মতো একজন কোচ। সেই সঙ্গে অতীত সাফল্যের মধুর স্মৃতি। ২০০৬ সালের বিশ্বকাপ ও সর্বশেষ ইউরো কাপ এটাই প্রমাণ করেছে, ইতালি সর্বদা একটি চমক দিতে সক্ষম।
ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপে ইতালি পড়েছে শক্ত গ্রুপে। স্পেন ও ক্রোয়েশিয়ার সঙ্গে আছে আলবেনিয়া। ১৬ জুন আলবেনিয়ার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে শুরু হবে আজ্জুরিদের শিরোপা ধরে রাখার মিশন। দ্বিতীয় ম্যাচ ২১ জুন স্পেন ও শেষ ম্যাচ ২৫ জুন ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে।
আরআই/এমএমআর/এএসএম