কৃষি ভিসায় ইতালি পাঠানোর কথা বলে লিবিয়ায় নিয়ে জিম্মি করে পরিবারের কাছ থেকে মুক্তিপণ আদায়ের ঘটনায় মানবপাচার চক্রের এক নারী সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ডিএমপির হাতিরঝিল থানা পুলিশ।
গ্রেফতার নারীর নাম কল্পনা বেগম (৩৬)।
শুক্রবার (১ নভেম্বর) ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান জানান, কামরাঙ্গীরচর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
তিনি বলেন, মুন্সিগঞ্জ জেলার শ্রীনগর উপজেলার বাসিন্দা মো. নুরুল ইসলাম বেপারী গত ২ অক্টোবর হাতিরঝিল থানায় মানবপাচার আইনে মামলা করেন। মামলার এজাহারে বলা হয়, পূর্বপরিচয়ের সূত্র ধরে গ্রেফতার কল্পনা বেগম ও তার সহযোগীরা কৃষি ভিসায় ইতালি পাঠানোর কথা বলে নুরুল ইসলামকে প্রলুব্ধ করে। তাদের প্রলোভনে ইতালি যাওয়ার জন্য সম্মত হয়ে নুরুল ইসলাম তাদের পাসপোর্ট প্রদান করে। এর কয়েকদিন পর চক্রের সদস্যরা তাকে জানায় যে তার ভিসা হয়েছে।
তাদের কথামতো ২০২৩ সালের ২০ জুলাই নুরুল ইসলাম তাদের ১০ লাখ টাকা প্রদান করে। টাকা পাওয়ার পর মানবপাচার চক্রের সদস্যরা ভুক্তভোগী নুরুল ইসলামকে প্রথমে দুবাই ও পরে লিবিয়া নিয়ে যায়।
সেখানে মানবপাচারকারী চক্রের সদস্য জামির ও ইসমাইল নুরুল ইসলামকে ইতালি না পাঠিয়ে জিম্মি করে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে। তারা ভুক্তভোগীর স্ত্রীকে ফোন করে জানায়, বাংলাদেশে ফিরে যেতে চাইলে কিংবা ইতালি যেতে চাইলে দেশে থাকা তাদের সদস্য আব্দুল লতিফের কাছে আরও ১৫ লাখ টাকা দিতে হবে।
ডিসি তালেবুর রহমান আরও বলেন, বাধ্য হয়ে নুরুল ইসলামের স্ত্রী জমি বিক্রি করে ১৫ লাখ টাকা দেশে থাকা পাচারকারী চক্রের সদস্যদের বিভিন্ন ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ও বিকাশের মাধ্যমে প্রদান করে। টাকা পাওয়ার পরও তারা ভুক্তভোগী নুরুল ইসলামকে দেশে বা ইতালি পাঠায়নি। পরবর্তী সময়ে গত ১১ জুন লিবিয়া পুলিশের সহায়তায় ছাড়া পেয়ে নুরুল ইসলাম দেশে ফিরে আসেন।
তদন্তাধীন মামলায় গোয়েন্দা তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় এজাহারভুক্ত আসামি কল্পনা বেগমকে কামরাঙ্গীরচর এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন। মামলার সুষ্ঠু তদন্ত ও মানবপাচারে জড়িত চক্রের অন্যান্য সদস্যদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান ডিএমপির এই কর্মকর্তা।
টিটি/এমএইচআর/এএসএম