ইতিহাস তৈরির অপেক্ষায় দুই দল, কে হবে চ্যাম্পিয়ন?

5 hours ago 5

এর আগে আরও দু‘বার নারী বিশ্বকাপ ক্রিকেটের ফাইনালে খেলেছিল ভারতীয় ক্রিকেট দল। ২০০৫ এবং ২০১৭ সালে। কোনোবারই শিরোপা হাতে তুলে নিতে পারেনি তারা। প্রথমবার অস্ট্রেলিয়রা কাছে, দ্বিতীয়বার ইংল্যান্ডের কাছে হেরে শিরোপাহীন থাকতে হয়েছে তাদের।

অন্যদিকে দক্ষিণ আফ্রিকা নারী ক্রিকেট দল এবারই প্রথম বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠেছে। দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করে ফাইনালে উঠে আসার পর শিরোপার অন্যতম ফেবারিটও তারা। ঘরের মাঠে ভারতীয় নারী ক্রিকেট দল নাকি দুর্দান্ত ফর্মে থাকা দক্ষিণ আফ্রিকা নারী ক্রিকেট দল, কে জিতবে বিশ্বকাপ? যেই জিতুক, তারা নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করবে, প্রথমবারের মত বিশ্বকাপ জয় করে।

২০২৩, ২০২৪ সালের পর ২০২৫। ক্রিকেটের আরও একটি বিশ্বকাপ ফাইনালে ভারত। রোহিত শর্মা-বিরাট কোহলিদের পর এবার হারমানপ্রিত কৌর-স্মৃতি মন্ধানাদের ঘিরে স্বপ্ন দেখছে ভারতীয়রা। দেড় বছরে আগে এই দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিতেছিলেন রোহিত শর্মার দল। এবার নারীদের ওয়ানডে বিশ্বকাপ ট্রফি এবং ভারতীয়দের সামনে বাধা সেই প্রোটিয়ারাই। ছেলেদের ক্রিকেটে দক্ষিণ আফ্রিকা পারেনি। এবার কী তারা পারবে নারীদের ক্রিকেটে ভারতকে টপকে শিরোপা জিততে?

২০০৫ এবং ২০১৭ সালে ফাইনালে উঠেও চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি ভারত। দু’বারই অধিনায়ক ছিলেন মিতালি রাজ। সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে মিতালির কীর্তি ছুঁয়ে ফেলেছেন হারমানপ্রিত। এবার তার সামনে পূর্বসূরির ‘রাজ’ ছিনিয়ে নেওয়ার সুযোগ।

বিশ্বকাপ শুরুর আগে ভারতীয় অধিনায়ক বলেছিলেন, এবার সমর্থকদের দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান ঘটাতে তারা বদ্ধপরিকর। বিশ্বকাপের মাঝে টানা তিন ম্যাচ হারে আশাভঙ্গের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল বটে। তবু এক সময় চাপে পড়ে যাওয়া ভারতীয় দলের সামনে প্রতিশ্রুতি রক্ষার সুযোগ।

ভাগ্যও ভালো ভারতের। বৃষ্টিতে নিউজিল্যান্ডের দু’টি ম্যাচ ভেস্তে না গেলে হয়তো সেমিফাইনালে জায়গাই হত না ভারতের। তবে ভাগ্যের ফেরে পাওয়া সুযোগ কাজে লাগাতে ভুল করেনি ভারতীয় দল। সেমিফাইনালের আগে চোট পেয়ে ছিটকে গিয়েছেন প্রতিকা রাওয়াল। সাতবারের চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ম্যাচের আগে কিছুটা চাপে পড়ে গিয়েছিল ভারতীয় শিবির। কিন্তু ঠিক সময়ে সেরা ফর্মে উদয় হয়েছেন জেমাইমা রদ্রিগেজ। রানে ফিরেছেন অধিনায়ক হারমানপ্রীতও। তাই মন্ধানার রান না পাওয়া বা হঠাৎ দলে ঢোকা শেফালি বার্মার ব্যর্থতা প্রভাব ফেলতে পারেনি।

দক্ষিণ আফ্রিকাও নিশ্চিত ভাবে চাইবে ইতিহাস তৈরি করতে। ফাইনালে উঠে একবার ইতিহাস গড়েছেন লরা উলভারডটরা। জিততে পারলে সেই ইতিহাসই সোনার অক্ষরে লিখে রাখতে পারবেন তারা। ভারতের মাটিতে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রধান সমস্যা ধারাবাহিকতার অভাব। কোনও ম্যাচে দারুণ ভাল তো পরেরটাতেই অতি সাধারণ। দলটার সাফল্য মূলত নির্ভরশীল চার-পাঁচ জন ক্রিকেটারের উপর। অধিনায়ক উলভারডট ছাড়া ভারতকে বিপদে ফেলতে পারেন ব্যাটার তাজমিন ব্রিটস, অলরাউন্ডার মারিয়ানা কাপ, নাদিনে ডি ক্লার্ক এবং স্পিনার ননকুলুলেকো এমলাবা। অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার ক্লো ট্রায়ন দলে থাকলেও খুব ভাল ফর্মে নেই।

লিগ পর্বের ম্যাচে প্রোটিয়াদের বিরুদ্ধে রিচা ঘোষ ছাড়া ভারতের কোনও ব্যাটার সুবিধা করতে পারেননি। উলভারডট, ক্লার্ক, ট্রায়নেরা জিতিয়েছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকাকে। তছাড়া ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৬৯ এবং অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ৯৭ রানে অলআউট হওয়া দল ফাইনালে শেষ কামড় দেওয়ার চেষ্টা করবেই। ফাইনালের আগে আত্মবিশ্বাসী দক্ষিণ আফ্রিকা শিবির। তবে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে জয়ের পর ফুটছে ভারতের সাজঘরও। জয় ছাড়া কিছু ভাবতে চাইছেন না হারমানপ্রিতরা। ভাববেন কেন? ২০২৪ সাল থেকে দু’দলের ছ’টি ম্যাচের মধ্যে পাঁচটিই জিতেছেন ভারত!

নারীদের এক দিনের ক্রিকেটে ভারত এবং দক্ষিণ আফ্রিকা মুখোমুখি হয়েছে মোট ৩৪ বার। ২০টি ম্যাচ জিতেছে ভারত। ১৩টি দক্ষিণ আফ্রিকা। ফলাফল হয়নি একটি ম্যাচের। জয়-পরাজয়ের নিরিখে পাল্লা ভারি ভারতেরই। তবু বিশ্বকাপ ফাইনাল নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করা যায় না। ইতিহাস তৈরির সুযোগ দু’দলের সামনেই। ক্রিকেটপ্রেমীরা নতুন বিশ্বচ্যাম্পিয়নের অপেক্ষায় রয়েছেন।

আইএইচএস/জেআইএম

Read Entire Article