টানা কয়েক দিন অন্তত ২০০টি ছোট কম্পনের পর গ্রিসের সান্তোরিনি দ্বীপ শক্তিশালী ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল। বিবিসির বৃহস্পতিবারের (৬ ফেব্রুয়ারি) সকালের প্রতিবেদনে বলা হয়, শক্তিশালী ভূমিকম্পটি কয়েক মিনিট আগে অনুভূত হয়। এর আগে আরও দুটি ছোট কম্পনে কাঁপে দ্বীপটি।
স্থানীয় সময় রাত ৯টা ৯ মিনিটে শক্তিশালী কম্পনটি রেকর্ড করা হয়। এর মাত্রা ছিল ৫.২। যা সাম্প্রতিক দিনগুলোর মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী কম্পন। ধারণা করা হচ্ছে, ৫ কিলোমিটার গভীরে কম্পনটি অনুভূত হয়।
এখনও পর্যন্ত দ্বীপে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। তবে কর্তৃপক্ষ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করছে।
ইউরোপীয়-ভূমধ্যসাগরীয় ভূকম্পন কেন্দ্রের রেকর্ড অনুসারে, রোববার দফায় দফায় কেঁপে উঠে দ্বীপটি। এরপর মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৭টা পর্যন্তই ২০০ কম্পন রেকর্ড করা হয়। এরপরও কম্পন অব্যাহত ছিল।
গ্রিসের মনোরম দ্বীপটি কয়েক বছর ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক প্রচার পায়। এর সুবাধে পর্যটক বাড়ে বহুগুণ। দ্বীপটি বিশ্বে প্রচার পায় ‘ইনস্টাগ্রাম দ্বীপ’ নামে।
এদিকে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে দ্বীপটি ছেড়ে পালাচ্ছেন হাজার হাজার স্থানীয় মানুষ ও পর্যটক। তারা আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাতের আশঙ্কায় বেশ ভীত। যদিও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বারবার ঘটা ভূমিকম্প আগ্নেয়গিরির কার্যকলাপের সাথে সম্পর্কিত নয়।
কম্পনের পর সান্তোরিনি এবং পাশের আনাফি, আইওস এবং আমোরগোস দ্বীপপুঞ্জ ছেড়ে যাওয়ার জন্য হাজার হাজার স্থানীয় এবং ছুটি কাটাতে আসা মানুষ ফেরি এবং বিমানে ভিড় করেছেন। কার আগে কে যাবেন, সে জন্য তাদের হুড়োহুড়ি করতে দেখা গেছে। তারা বলছেন, এই ভূমিকম্পগুলো এখনো পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতি এবং কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটায়নি। কিন্তু হয়তো আরও বড় ভূমিকম্প আসছে বলে ইঙ্গিত দিচ্ছে। মনোরম অর্ধচন্দ্রাকার সান্তোরিনি দ্বীপটি একটি সুপ্ত আগ্নেয়গিরির আবাসস্থল। এখানকার ভবনগুলো ৩,০০০ বছরেরও বেশি সময় আগে আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের ফলে তৈরি পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থিত। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য গঠিত একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি জানিয়েছে, ৩ বা তার বেশি মাত্রার আনুমানিক ২০০টি ভূমিকম্প রেকর্ড করা হয়েছে। এ ঘটনাটি আগ্নেয়গিরির কার্যকলাপের সাথে সম্পর্কিত নয়। কিন্তু ভবিষ্যতে কী হবে তা বলা মুশকিল।
বিবিসির তথ্য বলছে, ১১,০০০ এরও বেশি মানুষ ইতিমধ্যেই সান্তোরিনি ছেড়েছেন। যার মধ্যে প্রায় ৭,০০০ ফেরি এবং ৪,০০০ জন বিমানে চলে গেছেন।