ইফাত আমার ছেলে নয়, আইনি পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি রাজস্ব কর্মকর্তার

4 months ago 48

কোরবানি উপলক্ষে ১৫ লাখ টাকায় ছাগল কিনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচিত হয়েছেন তরুণ মুশফিকুর রহমান ইফাত। ফেসবুকে এবং কয়েকটি গণমাধ্যমে দাবি করা হয়েছে, ইফাতের বাসা ধানমন্ডি এবং তিনি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কাস্টমস, এক্সসাইজ ও ভ্যাট অ্যাপিলেট ট্রাইবুনারের প্রেসিডেন্ট ড. মো. মতিউর রহমানের ছেলে।

তবে এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, ড. মো. মতিউর রহমানের এ নামে কোনো ছেলে নেই। এছাড়া মতিউর রহমানের বাসাও ধানমন্ডিতে নয়। তার ছেলের নাম আহমেদ তৌফিকুর রহমান অর্ণব আর মেয়ের নাম ফারহানা রহমান। তারা দেশের বাইরে থাকেন।

এ বিষয়ে মতিউর রহমান গণমাধ্যমকে জানান, ইফাত নামে আমার কোনো ছেলে নেই। এমনকি আত্মীয় বা পরিচিতও নন। আমার একমাত্র ছেলের নাম তৈাফিকুর রহমান। একটি গোষ্ঠী আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার করছে। আমি এ বিষয়ে পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগের সহায়তা চেয়ে আইনি পদক্ষেপে যাচ্ছি। সামাজিক মাধ্যমে আমার ছবি ও নাম ব্যবহার করায় আমি বিব্রত। আমি অবশ্যই আইনি পদক্ষেপে যাবো।

ভাইরাল ওই সব পোস্টে বলা হয়, ‘ধানমন্ডির ওই তরুণ’ ১৫ লাখ টাকার ছাগল ছাড়াও ৪টি গরু কিনেছেন। সব মিলিয়ে অর্ধকোটি টাকার কোরবানি দিচ্ছেন ইফাত। এসব পশু তিনি আলোচিত সাদিক এগ্রো থেকে কিনেছেন।

তবে গণমাধ্যমকে সাদিক এগ্রো ফার্মের কর্ণধার মোহাম্মদ ইমরান হোসাইন জানিয়েছেন, আলোচিত তরুণ শুধু এক লাখ টাকা দিয়ে ছাগলটি বুক করেছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি পুরো টাকা পরিশোধ করে ছাগলটিকে খামার থেকে বাড়িতে নিয়ে যাননি। পাশাপাশি ওই ছেলের বাবাও রাজস্ব কর্মকর্তা নন। তার বাবা বিদেশে থাকেন।

জানা গেছে, ওই তরুণ আগেও সাদিক এগ্রোর বিভিন্ন পশুর সঙ্গে ছবি তুলে ফেসবুকে দিয়েছে। এর আগে ২০২১, ২০২২ সালেও তিনি ছবি দিয়েছেন।

গণমাধ্যমে সাদিক এগ্রোর কর্ণধার জানান, যে ছাগলের দাম নিয়ে এত জল্পনা কল্পনা, তা হলো পৃথিবীর সবচেয়ে বড় জাতের ছাগল। এ জাতের নাম ‘বিটল’ এবং বাংলাদেশে এটি এ যাবৎকালের সবচেয়ে বড় ছাগল।

আলোচিত ওই ধূসর বাদামি রঙের ছাগলটির ওজন ১৭৫ কিলোগ্রাম এবং উচ্চতা ৬২ ইঞ্চি। প্রায় দুই মাস আগে এটিকে যশোরের একটি হাট থেকে ১০ লাখ ৩৫ হাজার টাকায় কেনে সাদিক এগ্রো।

জানা যায়, ঢাকা বিশ্ববিসদ্যালয় থেকে ফিন্যান্সে অনার্স-মাস্টার্স আর এমবিএ করা মতিউর রহমানের কর্মজীবন শুরু হয় পল্লী কর্ম সহয়ক ফাউন্ডেশনে (পিকেএসএফ)। ১৯৯০ থেকে ১৯৯৩ পর্যন্ত কাজ করেন সেখানে। সর্বশেষ উপ-ব্যবস্থাপক পদ থেকেই ১৯৯৩ সালের ১ এপ্রিল যোগ দেন কাস্টমস বিভাগে। ২০১৫ সালে পদোন্নতি পেয়ে কমিশনার হন তিনি।

২০২১ সালের ১২ আগস্ট তাকে কাস্টমস, এক্সসাইজ ও ভ্যাট অ্যাপিলেট ট্রাইবুনালে সদস্য (টেকনিক্যাল) হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। চলতি বছরের ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে তিনি ট্রাইবুনালের প্রেসিডেন্ট হিসেবে কর্মরত।

অন্যদিকে মুশফিকুর রহমান ইফাতের পোস্ট ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ার পর তিনি ফেসবুক, ইন্সটাগ্রাম প্রোফাইল লক করে রেখেছেন। ফলে ল্যান্ড ক্রুজার, হোন্ডা সিভিক, ক্রাউন মেজেন্টার মতো বিলাসবহুল গাড়ি নিয়ে নিয়ে নিয়মিত ছবি দেওয়া ওই তরুণের পরিচয় সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যায়নি।

এসএম/এমএইচআর/জিকেএস

Read Entire Article