ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের নবীন শিক্ষার্থীদের র্যাগিংয়ের ঘটনায় অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে তদন্ত কমিটি।
রোববার (২৪ নভেম্বর) তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ও লালন শাহ হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. আকতার হোসেন এ কথা জানান।
আজ ভুক্তভোগী ও অভিযুক্তদের মুখোমুখি করে তদন্ত কমিটি। এর আগে ভুক্তভোগী ও অভিযুক্তদের আলাদাভাবে সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়।
তদন্ত চলমান থাকা অবস্থায় বিভাগটির শিক্ষকদের মধ্যস্থতায় দুই পক্ষকে ডেকে ক্ষমা চাওয়ার মাধ্যমে মীমাংসার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।
তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ও হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. আকতার হোসেন বলেন, ভুক্তভোগী ও অভিযুক্তদের সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। প্রতিবেদনের আলোকে প্রশাসন বসে সিদ্ধান্ত নেবে।
তিনি আরও বলেন, ‘ঘটনার সত্যতা রয়েছে। আমরা শুনেছি বিভাগ থেকে বিভিন্ন মাধ্যমে এ ঘটনাকে কোনোরকমে মীমাংসার চেষ্টা করছে। এটি আমাদের দেখার বিষয় না। তদন্ত কমিটি তার গতিতে কাজ করবে।’
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের ভাষ্য, সমঝোতার জন্য ভুক্তভোগী ও অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের দুপুরে বিভাগে ডাকা হয়। বিভাগের সভাপতি ও সিনিয়র শিক্ষার্থীরা অভিযোগ তুলে নেওয়ার জন্য তাদের সঙ্গে সমঝোতার চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে অভিযুক্তরা তাদের অন্যায় স্বীকার করে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন। বিভাগে নিজেদের অন্যায় স্বীকার করলেও তদন্ত কমিটির কাছে অভিযোগগুলো অস্বীকার করেন অভিযুক্তরা।
তদন্ত কমিটির কাছে সাক্ষাৎকার দিয়ে বের হয়ে ভুক্তভোগী কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, ‘সমঝোতার জন্য বিভাগে ডেকেছিল। পরে ক্লাসে বড় ভাইদের সামনে তারা কান্নাকাটি করে ক্ষমা চেয়েছেন।’
তারা আরও বলেন, ‘চেয়ারম্যান স্যার আমাদেরকে অভিযোগ তুলে নেওয়ার জন্য বলেছিলেন। বিভাগের স্যাররাসহ বসে বিষয়টির একটা সমাধান করার কথা জানান। পরে তদন্ত কমিটি অভিযুক্তদের সামনে রেখে আমাদের সঙ্গে কী কী ঘটেছে সেগুলো জানতে চাইলে আমরা সেগুলো বলি। কিন্তু তখন গিয়ে তারা অভিযোগগুলো অস্বীকার করেন।’
এ বিষয়ে অভিযুক্তদের একজন বলেন, ‘যতটুকু ভুল করেছি তার জন্য ক্ষমা চেয়েছি। তবে আমাদের সম্পর্কে অতিরিক্ত বলা হচ্ছে।’
ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের সভাপতি সঞ্জয় কুমার সরকার বলেন, ‘আমরা শুধু বলেছি এসব মীমাংসা করে নাও। কিন্তু মীমাংসা করে দেওয়ার জন্য কোনো কাজ করিনি।’
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের ১০-১২ শিক্ষার্থীকে র্যাগিংয়ের অভিযোগ ওঠে একই বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের কয়েকজন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে। সোমবার (১৮ নভেম্বর) দিনগত মধ্যরাতে র্যাগিংয়ের অভিযোগে পাঁচ শিক্ষার্থীকে আটক করে ইবি থানায় সোপর্দ করা হয়।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় একজন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী মামলা করলে তাদের কুষ্টিয়া আদালতে পাঠায় পুলিশ। বুধবার কুষ্টিয়ার জেলা দায়রা জজ আদালত থেকে তারা জামিনে মুক্তি পান।
মুনজুরুল ইসলাম/এসআর/জিকেএস