ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ ও হল সংসদের গঠনতন্ত্র সিন্ডিকেটে চূড়ান্ত অনুমোদন পেয়েছে। তবে গঠনতন্ত্রে ছাত্রসংসদের পূর্ণ নাম উল্লেখ থাকলেও সংক্ষিপ্ত রূপটি স্পষ্ট না করায় ধোঁয়াশা ও বিতর্ক তৈরি হয়েছে। যা নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৭১তম সিন্ডিকেট সভায় বিশ্ববিদ্যালয় আইন ১৯৮০-এর ধারা ৪১ অনুযায়ী গঠনতন্ত্রটি পাস হয়।
গঠনতন্ত্রের ২য় ভাগের ১ম অধ্যায়ে বলা হয়, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের নাম হবে ‘ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ, কুষ্টিয়া কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ’। এতে সংক্ষিপ্ত নামের বিষয়ে উল্লেখ না থাকায় ইকবকসু, ইবিকসু এবং ইকসু নিয়ে ধোঁয়াশা থেকে যায়।
এ নিয়ে আল ফিকহ্ অ্যান্ড ল বিভাগের শিক্ষার্থী মিশুক শাহরিয়ার বলেন, ঢাকায় ডাকসু, রাবিতে রাকসু, জাবিতে জাকসু। ইবির এমন বিভ্রান্তিকর নাম আগে শুনিনি। সংক্ষিপ্ত নাম চূড়ান্ত করা তো একেবারেই বেসিক বিষয়। যদি পূর্ণ নামেই ‘বাংলাদেশ’ যুক্ত থাকে, তাহলে সংক্ষিপ্ত নামেও তার প্রতিফলন থাকবে। ফলে ভবিষ্যতে অফিসিয়াল রেকর্ড, মিডিয়া এমনকি ব্যালট পেপারেও বিভ্রান্তি তৈরি হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সিএসই বিভাগের শিক্ষার্থী মো. তাহসিন হাসান বলেন, নামের বিষয়টি যথেষ্ট হাস্যকর বলেই মনে হচ্ছে। ‘ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ, কুষ্টিয়া কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ’ এত দীর্ঘ নাম রাখার প্রয়োজন ছিল কিনা এটা নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই পারে। ‘ইসলাম’ নাম বাদ দিতে পারেনি ঠিকই, কিন্তু তারপরে আবার ‘বাংলাদেশ, কুষ্টিয়া’। এভাবে যোগ করতে চাইলে ভবিষ্যতে ‘শৈলকূপা, খুলনা’ও হয়ত যুক্ত করা যেতে পারে।
আরেক শিক্ষার্থী মনজুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, ইকসুর নাম বিভ্রান্তিমূলক। ‘ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ, কুষ্টিয়া ছাত্র সংসদ’ এই নামের সংক্ষিপ্ত রূপ হয় IUBKCU বা IUBCU। তারা যদি বলে এর নাম ‘ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ’ তাহলে সংক্ষেপে এটাই হয়।
এ বিষয়ে গঠনতন্ত্র ও সংবিধি প্রণয়ন কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মিজানূর রহমান বলেন, ছাত্র সংসদের সংক্ষিপ্ত রূপ ইকসুই হবে। ডাকসু, রাকসু, জাকসুসহ কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের গঠনতন্ত্রেই সংক্ষিপ্ত নামের বিষয়ে উল্লেখ নেই। সংক্ষিপ্ত নাম যেটা প্রচলিত থাকে সেটাই। গঠনতন্ত্র ও সংবিধি প্রণয়ন কমিটিতে ঢাবিসহ অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের যারা আছেন তারাও এই বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
উল্লেখ্য, সিন্ডিকেটে অনুমোদিত গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কেন্দ্রীয় সংসদে ২৫টি এবং হল সংসদে ১৫টি পদ থাকবে। কেন্দ্রীয় সংসদের ২৩টি ও হলের ১৩টি পদে শিক্ষার্থীরা সরাসরি ভোট দিবেন। উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি ও কোষাধ্যক্ষ এবং হল সংসদের ক্ষেত্রে প্রাধ্যক্ষ ও সহকারী প্রাধ্যক্ষ (আবাসিক শিক্ষক) দায়িত্ব পালন করবেন। এতে পূর্ণকালীন স্নাতক, স্নাতকোত্তর ও এমফিল শিক্ষার্থীরা সদস্যপদ ফি পরিশোধের মাধ্যমে ভোটার ও প্রার্থী হতে পারবেন। এমফিল শিক্ষার্থীদের বয়সসীমা ৩০ বছর এবং একবারই অংশ নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। সান্ধ্যকালীন, বহিষ্কৃত ও পেশাগত কোর্সের শিক্ষার্থীরা ভোটাধিকার থেকে বাদ পড়বেন।
এছাড়াও,২৫ সদস্যের নির্বাহী কমিটিতে বিভিন্ন সম্পাদকীয় ও ছয় নির্বাহী সদস্য পদ থাকছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ সর্বোচ্চ পাঁচ শিক্ষক নির্বাচন পরিচালনা করবেন এবং কমপক্ষে ২১ দিন আগে তফসিল ঘোষণা করা হবে।
ইরফান উল্লাহ/কেএইচকে/এমএস

16 hours ago
7









English (US) ·