ইলিশের দাম কমলেও মিলছে না ক্রেতা

11 hours ago 3

ময়মনসিংহের বাজারে কমেছে জাতীয় মাছ ইলিশের দাম। তবে নেই ক্রেতা। দিনভর বসে থেকেও আশানুরূপ ক্রেতা না পাওয়ায় হতাশ বিক্রেতারা।

মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) সকালে সরেজমিন ময়মনসিংহ শহরের গাঙ্গিনারপাড় এলাকায় মেছুয়া বাজার ঘুরে দেখা যায়, অন্যান্য মাছের সঙ্গে ইলিশ নিয়ে বসে আছেন বিক্রেতারা। হাঁকডাকেও ক্রেতাদের সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না। যেসব মাছের দাম কম সেগুলোর দিকেই নজর ক্রেতাদের।

বিক্রেতারা জানান, আড়তে ইলিশের সরবরাহ খুব বেশি নয়। তবে বাজারে ইলিশের চাহিদা কমেছে। ফলে কম লাভেই বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন তারা। গত সপ্তাহে প্রতিকেজি ইলিশ ৯০০-১০০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। তখনো ক্রেতার সংকট ছিল। এখন ৬০০-৮০০ টাকা কেজি বিক্রি হলেও ক্রেতা আরও কমেছে।

ইলিশের দাম কমলেও মিলছে না ক্রেতা

আরও পড়ুন:

বিক্রেতা আব্দুল কাদির জাগো নিউজকে বলেন, ‘আড়তে ইলিশের সরবরাহ বেশি নেই। তবে অনেক ক্রেতা ইলিশ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। দাম কমলেও ক্রেতাদের কাছে বেশি দাম মনে হচ্ছে। এজন্য ক্রেতা এলে সামান্য লাভে বিক্রি করা হচ্ছে।’

ইলিশ কেনার সময় দামাদামি করছিলেন আকরামুল হক। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘শহরে একটি প্রাইভেট হাসপাতালে চাকরি করে পরিবারের ভরণপোষণ করতে হয়। মাস শেষে ঋণ করেও চলতে হয়। তাই যে মাছের দাম কম, সেদিকেই বেশি নজর দেই। ইলিশ কিনতে এসে দেখি, ক্রেতা সংকটের কারণে দাম কিছুটা কমেছে। তবে আমাদের মতো আয়ের লোকজনের পক্ষে বর্তমান দামেও ইলিশ কেনা কঠিন। তাই অন্য মাছ কিনে বাড়ি ফিরবো।’

আরেক ক্রেতা আব্দুল হাদি বলেন, ‘সবচেয়ে বেশি সিন্ডিকেট করেন ইলিশ বিক্রেতারা। যেকোনো মুহূর্তে তারা কেজিতে ৪০০-৫০০ টাকা কমিয়ে বিক্রি করে দেন। এতে স্পষ্টই বোঝা যায়, বিক্রেতারা কম দামে বিক্রি করলেও তারা লাভবান হচ্ছেন।’

ইলিশের দাম কমলেও মিলছে না ক্রেতা

আরও পড়ুন:

গত কয়েকদিন দাম কমে এখন অন্যান্য মাছের দামও স্থিতিশীল। আকারভেদে তেলাপিয়া ১৪০-১৬০ টাকা, রুই ২২০-২৬০, কাতলা ২৬০-৩০০, বাউশ ২৭০-২৯০, সিলভার কার্প ১৪০-১৮০, মৃগেল ১৯০-২০০, ট্যাংরা ২০৮০-৩০০, পাঙাশ ১১০-১৮০, শোল ৪৫০-৫০০, শিং ২১০-২৮০, টাকি ৩৪০-৩৬০, পাবদা ৪০, মলা ৩৮০, রাজপুঁটি ১৬০, দেশি পুঁটি ১৯০, চান্দা ২৭০ ও ইলিশ ৭০০-৯০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

ইলিশের দাম কমলেও মিলছে না ক্রেতা

অন্যান্য মাছ বিক্রেতা শরাফ উদ্দিন বলেন, ‘মাছের দাম নিয়মিত ওঠানামা করে। কয়েকদিন ধরে মাছের দাম সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে। বিক্রি জমজমাট হওয়ায় আমরা খুশি।’

এদিকে উত্তাপ নেই সবজির বাজারেও। কাঁচামরিচ ২৫ টাকা, শসা ৩০, বেগুন ২০, শিম ১৫, মিষ্টিকুমড়া ১৫, করলা ৪০, মটরশুঁটি ৭০, টমেটো ৩০, গাজর ৪০, মুলা ১৫, বরবটি ৫০ ও কচুরলতি ৩০ টাকা কেজি, বাঁধাকপি ২০ ও ফুলকপি ১৫ পিস, পেঁয়াজ পাতা ১০, কাঁচকলা ২০ টাকা ও লেবু ১৫ টাকা হালি এবং লাউ ৩৫-৪০ টাকা পিস বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া হল্যান্ড বড় আলু ২২ টাকা ও দেশি ছোট আলু ৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

ইলিশের দাম কমলেও মিলছে না ক্রেতা

প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ ৫০, দেশি রসুন ২৩৫, চায়না রসুন ২০০, ভারতীয় আদা ১০০, খেসারি ও চিনি ১২০, খোলা আটা ৪০, প্যাকেট ৫০, বুটের ডাল ১২২ টাকা, দেশি মসুর ডাল ১২৫, মোটা মসুর ১১০, মুগডাল ১৬৫, ভাঙা মাসকলাই ৮৫, মাসকলাই ১৩০ ও ছোলা বুট বিক্রি হচ্ছে ১১৫ টাকা দরে।বোতলজাত সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ১৭৫, খোলা সয়াবিন তেল ১৮৭ ও পামওয়েল ১৭৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

আরও পড়ুন:

ব্রয়লার মুরগি কেজিতে পাঁচ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ১৯০ টাকায়। আর সোনালি মুরগি ৩২০, লাল কক ৩২০ টাকা, সাদা কক ৩০০ ও লেয়ার ৩৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। গরুর মাংস ৭৫০ ও খাসির মাংস এক হাজার ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

ইলিশের দাম কমলেও মিলছে না ক্রেতা

ব্যাগভর্তি সবজি কিনেছেন লুৎফর রহমান। তিনি বলেন, ‘সবজির দাম সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে। তাই নিম্ন ও মধ্যবিত্ত আয়ের লোকজন মনে প্রশান্তি নিয়ে বাজার করতে পারছেন।’

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ময়মনসিংহের সহকারী পরিচালক আব্দুস সালাম বলেন, আমরা চাই সারাবছরই ন্যায্য দামে সবকিছু বিক্রি হোক। এজন্য বাজারে আমাদের তদারকিসহ নিয়মিত অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

এসআর/এমএস

Read Entire Article