ইসরায়েলকে ৭৪০ কোটি ডলারের বোমা ও ক্ষেপণাস্ত্র দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র

2 hours ago 4

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন ইসরায়েলের কাছে ৭৪০ কোটি ডলারের বেশি মূল্যের বোমা, ক্ষেপণাস্ত্র ও সংশ্লিষ্ট সামরিক সরঞ্জাম বিক্রির অনুমোদন দিয়েছে।

শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ৬৬ কোটি ডলারের হেলফায়ার ক্ষেপণাস্ত্র এবং ৬৭৫ কোটি ডলারের বোমা, গাইডেন্স কিটস ও ফিউজ বিক্রির অনুমোদন দিয়েছে। রয়টার্স এই খবর প্রকাশ করেছে।

ইসরায়েলের সামরিক সক্ষমতা বাড়াবে এই অস্ত্র 

মার্কিন প্রতিরক্ষা নিরাপত্তা সহযোগিতা সংস্থা (ডিএসসিএ) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, এই অস্ত্রচুক্তি ইসরায়েলকে তার ভূখণ্ডের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে এবং ভবিষ্যৎ হুমকি মোকাবিলায় সহায়তা করবে। এছাড়া, এটি আঞ্চলিক নিরাপত্তা বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর যুক্তরাষ্ট্র সফরের মধ্যেই ট্রাম্প প্রশাসন এই অস্ত্র বিক্রির অনুমোদন দিয়েছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স।

গাজায় ইসরায়েলি হামলা ও মানবিক সংকট 

২০২৩ সালের অক্টোবরে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ গোষ্ঠী হামাস নজিরবিহীন হামলা চালানোর পর, ইসরায়েল গাজায় ব্যাপক সামরিক অভিযান শুরু করে। টানা এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা এই অভিযানে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়।

ইসরায়েলের বোমা ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় গাজার বড় অংশ ধ্বংস হয়ে গেছে। এই যুদ্ধে ৪৭ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। লাখ লাখ মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে বারবার স্থান পরিবর্তন করতে বাধ্য হয়েছে।

বাইডেন প্রশাসনের আগের নিষেধাজ্ঞা ও ট্রাম্পের অনুমোদন 

ইসরায়েলের হামলার কারণে বেসামরিক হতাহতের সংখ্যা বাড়তে পারে—এই আশঙ্কায় সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন ইসরায়েলে দুই হাজার পাউন্ড ওজনের বোমার চালান আটকে দিয়েছিল। তবে ট্রাম্প প্রশাসন ক্ষমতা নেওয়ার পর এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেয় এবং নতুন করে বিশাল অঙ্কের অস্ত্র বিক্রির অনুমোদন দেয়।

কংগ্রেসের অনুমোদন প্রয়োজন, কিন্তু বাধা প্রত্যাশিত নয় 

মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অস্ত্র বিক্রির অনুমোদন দিলেও, এটি কার্যকর করতে কংগ্রেসের অনুমোদন লাগবে। তবে মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ মিত্র ইসরায়েলের কাছে এই অস্ত্র পাঠাতে কংগ্রেসের কোনো কক্ষই বাধা হয়ে দাঁড়াবে না বলেই ধারণা করা হচ্ছে।

যুদ্ধবিরতির ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত 

ট্রাম্পের শপথ গ্রহণের আগে যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষরিত হলেও এটি কতদিন কার্যকর থাকবে তা নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইসরায়েলের হাতে বিপুল পরিমাণ নতুন অস্ত্র চলে যাওয়ার পর যুদ্ধ আরও দীর্ঘায়িত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

ফিলিস্তিনপন্থি মানবাধিকার সংগঠনগুলো এই অস্ত্রচুক্তির বিরুদ্ধে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। তারা বলছে, এই অস্ত্র ইসরায়েলের হাতে নতুন করে ধ্বংসযজ্ঞ চালানোর সুযোগ করে দেবে এবং ফিলিস্তিনের মানবিক সংকট আরও গভীর হবে।

এখন প্রশ্ন হলো, এই অস্ত্রচুক্তির মাধ্যমে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের ভবিষ্যৎ কোন পথে গড়াবে? যুদ্ধবিরতির স্থায়িত্ব নিয়ে শঙ্কা আরও বাড়বে কি না?

Read Entire Article