ইসরায়েলি গণহত্যার প্রতিবাদে বুয়েট শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন 

3 days ago 11

গাজায় দখলদার ইসরায়েলির চালানো সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সাধারণ শিক্ষার্থীরা। একই সঙ্গে জেরুজালেম ভূখণ্ডে ফিলিস্তিনিদের পূর্ণ অধিকার রয়েছে এবং তাদের স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম বৈধ ও ন্যায্য বলেও উল্লেখ করেন তারা৷ 

সোমবার (৭ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১১টায় বুয়েটের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে বুয়েটের শতাধিক শিক্ষার্থীর সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে বেশ কয়েকজন শিক্ষক অংশগ্রহণ করেন।

এ সময় আন্দোলনকারীরা ‘ফ্রম দা রিভার টু দা সি প্যালেস্টাইন উইল বি ফ্রি’, ‘ইস্ট টু ওয়েস্ট নো ফ্লো টু জায়োনিস্ট’, ‘ফিলিস্তিন মুক্তি পাক, ইসরাইল নিপাত যাক’; ‘ইনকিলাব ইনকিলাব, আল আকসা জিন্দাবাদ’ ইত্যাদি স্লোগান দেন। 

বুয়েট শিক্ষার্থীরা বলেন, গাজায় নিরীহ শিশু, নারী এবং সাধারণ মানুষের ওপর যে নৃশংসতা চালানো হচ্ছে, তা শুধু একটি রাজনৈতিক সংকট নয়, এটি একটি চরম মানবিক ও নৈতিক সংকট। এমনকি যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন, মানবিক করিডোরে হামলা এবং জরুরি স্বাস্থ্যসেবা কাঠামো ধ্বংসের মতো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড সভ্যতার চরম অবক্ষয়। আমরা ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় চলমান অমানবিক সহিংসতা, নির্বিচারে হত্যা, বোমাবর্ষণ, রাসায়নিক হামলা, এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে গভীর উদ্বেগ ও তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

তারা বলেন, আমরা এই বর্বরতার বিরুদ্ধে সোচ্চার, সংগঠিত হতে এবং কার্যকর অবস্থান নিতে সর্বদা নৈতিকভাবে একতাবদ্ধ। শুধু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিবাদ জানানোই যথেষ্ট নয়, এখন সময় এসেছে রাস্তায় দাঁড়াবার, কণ্ঠে কণ্ঠ মিলিয়ে মানবতার পক্ষে আওয়াজ তোলার। ‘গ্লোবাল স্ট্রাইক ফর গাজা’- এর অংশ হিসেবে আমরা আজ বিশ্বের অন্যান্য সচেতন মানুষের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করছি।

যুক্তরাষ্ট্র ও আরব দেশের নিষ্ক্রিয়তার কারণে এই সংকট দীর্ঘায়িত হচ্ছে উল্লেখ করে তারা বলেন, আমরা দৃঢ়ভাবে নিন্দা জানাই ইসরায়েলের পরিচালিত গণহত্যার এবং সেই সঙ্গে নিন্দা জানাই তথাকথিত মানবতার ঝাণ্ডাধারী যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য পরাশক্তিদের যারা এই হত্যাযজ্ঞে পরোক্ষ বা প্রত্যক্ষভাবে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। একই সঙ্গে আমরা গভীর হতাশা প্রকাশ করছি অর্থনৈতিক এবং সামরিকভাবে শক্তিশালী আরব বিশ্বের দেশগুলোর প্রতি, যারা এই নিষ্ঠুরতার সময়ে নীরবতা পালন করেছে। তাদের এই নিষ্ক্রিয়তা নিপীড়নকে আরও দীর্ঘস্থায়ী করেছে। জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর কার্যকর পদক্ষেপের অভাব বিশ্বমানবতার জন্য হতাশাব্যঞ্জক।

বুয়েট শিক্ষার্থীরা বলেন, ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতি আমাদের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। আমরা আশা করছি, ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধে আন্তর্জাতিক মহল অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ নেবে, যুদ্ধবিরতি ঘোষিত হবে এবং মানবিক সহায়তা নিশ্চিত করা হবে। বাংলাদেশ সরকার ও জনগণের পক্ষ থেকে ফিলিস্তিনের প্রতি অব্যাহত সহমর্মিতা এবং সব প্রকার সহযোগিতা চালু রাখা হোক।

আমরা গাজার মানুষের, আমাদের ভাইয়ের-বোনের পাশে আছি। আমরা বিশ্বাস করি, আমাদের ফিলিস্তিনের ভাইয়ের-বোনের এই পবিত্র ভূমির ওপর পরিপূর্ণ অধিকার রয়েছে এবং তাদের স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম বৈধ ও ন্যায্য।

মানববন্ধনে বুয়েটের উপ-উপাচার্য ড. আব্দুল হাসিব চৌধুরী বলেন, ফিলিস্তিনের দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী পৌনে শতাব্দী ধরে দখলদারিত্ব বজায় রেখেছে, গণহত্যা চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু আরব বিশ্ব ও অন্যান্য ক্ষমতাধর রাষ্ট্রগুলো নীরব রয়েছে। আমি মনে করি, অতি শীঘ্রই ধ্বংসস্তূপ থেকে স্বাধীন ফিলিস্তিনের উত্থান ঘটবে এবং এই উত্থানই সাম্রাজ্যবাদ ও উপনিবেশবাদের ঐতিহাসিক পরাজয়ের সূচনা করবে। এ সময় তিনি গ্লোবাল স্ট্রাইক ফর গাজার প্রতি সমর্থন জ্ঞাপন করেন।

Read Entire Article