ইসরায়েলি হামলায় লেবাননে ১০ লক্ষাধিক মানুষ বাস্তুচ্যুত হওয়ার শঙ্কা

3 weeks ago 10

লেবাননের প্রধানমন্ত্রী নাজিব মিকাতি বলেছেন, ইসরায়েলের অব্যাহত বিমান হামলার কারণে দেশজুড়ে ১০ লাখ মানুষ এরই মধ্যে ঘরবাড়ি ছাড়তে বাধ্য হয়ে থাকতে পারে। তার মতে, এটাই ‘সবচেয়ে বড়’ বাস্তুচ্যুতির ঘটনা।

লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বৈরুতে হিজবুল্লাহ প্রধান হাসান নাসরাল্লাহ হত্যার দুদিন পর রোববারও বিমান হামলায় ৫০ জন নিহত হয়েছেন। অন্যদিকে হিজবুল্লাহও ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চল লক্ষ্য করে আরও রকেট ছুঁড়েছে।

আরও পড়ুন>>

ইসরায়েল জানিয়েছে, তারা ইয়েমেনে ইরান-সমর্থিত হুথিদের সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে ‘বড় ধরনের’ বিমান হামলা চালিয়েছে।

রোববার হিজবুল্লাহ তাদের শীর্ষ সামরিক কমান্ডার আলী কারাকি এবং একজন জ্যেষ্ঠ ধর্মীয় নেতা শেখ নাবিল কাউক ইসরায়েলের বিমান হামলায় নিহত হয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে।

লেবাননের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বিমান হামলার কারণে বৈরুত ও দক্ষিণাঞ্চলীয় সীমান্ত এলাকাসহ দেশের অন্যান্য স্থানে মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে পালতে বাধ্য হচ্ছে।

স্থানীয় কর্তৃপক্ষ মানুষের প্রয়োজন অনুযায়ী সহায়তার দেওয়ার ক্ষেত্রে সংগ্রাম করছে। চাপ বাড়ছে আশ্রয় শিবির ও হাসপাতালগুলোতে।

২৫ বছর বয়সী আয়া আয়ুব বলেছেন, তাদের ছয় সদস্যের পরিবারের সঙ্গে তাকে বৈরুতের দক্ষিণাঞ্চলীয় তাহউইটেট আল ঘাদির শহরতলীর বাড়ি ছাড়তে হয়েছে। কারণ সেখানে অবস্থান করা বিপজ্জনক হয়ে উঠেছিল।

তার বাড়ির আশপাশে ‘সব ভবন ধ্বংস হয়ে গেছে এবং তিনি এখন বৈরুতের আরেকটি বাড়িতে আরও ১৬ জনের সঙ্গে অবস্থান করছেন।

৩৪ বছর বয়সী সারা তোহমাজ পেশায় সাংবাদিক। তিনি জানান, গত শুক্রবার বৈরুতের কাছে বাড়ি থেকে তার মা ও দুই সহদরসহ তাকে বেরিয়ে আসতে হয়েছে। সিরিয়া হয়ে তাদের জর্ডানে আসতে ১০ ঘণ্টা সময় লেগেছে।

তিনি বলেন, আমি মনে করি আমরা ভাগ্যবান যে, জর্ডানে আমাদের থাকার মতো জায়গা আছে। সেখানে মায়ের দিকে আত্মীয়রা আছে। পরে কী হবে জানি না এবং আবার কখন ফিরতে পারবো তাও জানি না।

এর আগে, ২০২৩ সালের ৮ অক্টোবর আন্তঃসীমান্ত লড়াই বেড়ে গিয়েছিল। হামাস ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা চালানোর পর তখন ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে হিজবুল্লাহ ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে রকেট ছুঁড়েছিল।

এরপর থেকে হিজবুল্লাহ যোদ্ধাসহ বহু মানুষ মারা গেছে এবং উভয়পক্ষে লাখ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।

রোববার ইসরায়েল জানিয়েছে, তারা ইয়েমেনে হুথিদের সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালিয়েছে। সেখানে বিদ্যুৎকেন্দ্র ও বন্দরে হামলা হয়েছে।

ইসরায়েল বলছে, হুথিরা সম্প্রতি যে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা করেছিল, তার পাল্টা জবাবে এই হামলা চালানো হয়েছে।

হুথিরা ইয়েমেনের একটি বড় অংশ নিয়ন্ত্রণ করে। তারা ইসরায়েলের হামলাকে ‘নিষ্ঠুর আগ্রাসন’ হিসেবে উল্লেখ করে এর তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।

সবমিলিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে বৃহত্তর সংঘাতের আশঙ্কা করছেন অনেকে।

হিজবুল্লাহ বা ইরানের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক যুদ্ধের বিষয়ে ইসরায়েলকে সতর্ক করে ওয়াশিংটন বলেছে, বড় ধরনের সংঘাত হলে ইসরায়েলের উত্তরে যেসব মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে, তাদের ঘরে ফেরা অসম্ভব হয়ে দাঁড়াবে।

সূত্র: বিবিসি বাংলা
কেএএ/

Read Entire Article