ইসলামাবাদের ডি-চকেই বিক্ষোভে অনড় বুশরা বিবি
পাকিস্তানের বিরোধী দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)-এর নেতা ইমরান খানের স্ত্রী বুশরা বিবি ইসলামাবাদের ডি-চক এলাকায় বিক্ষোভের জন্য প্রস্তুত রয়েছেন এবং তিনি সেখানে বিক্ষোভ করতে অনড় অবস্থানে আছেন।
পাকিস্তান সরকারের সব ধরনের বাধা উপেক্ষা করে তিনি ডি-চকেই বিক্ষোভ করবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন, যার ফলে বিক্ষোভের স্থান পরিবর্তন করার চেষ্টাগুলো এখন পর্যন্ত সফল হয়নি।
মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) জিও নিউজের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, বুশরা বিবি ইসলামাবাদের সুরক্ষিত ডি-চক এলাকায় অবস্থান নিতে ইচ্ছুক, যেখানে তিনি পিটিআই সমর্থকদের নিয়ে বিক্ষোভ করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
রাজধানী ইসলামাবাদের অন্য একটি জায়গা, সাংজানি এলাকায় বিক্ষোভের চেষ্টা করতে গিয়ে তার এই অনড় মনোভাব কার্যত বাধাগ্রস্ত করেছে।
পিটিআই নেতা এবং খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী আলী আমিন গান্দাপুর ও দলের সিনিয়র নেতা ওমর আইয়ুব বারবার বুশরা বিবির সঙ্গে বৈঠক করেন এবং তাকে বিক্ষোভস্থল পরিবর্তন করতে রাজি করার চেষ্টা করেন। তারা বুশরাকে জানান, অন্য স্থান বেছে নিলে হয়তো বিক্ষোভের কার্যক্রম নির্বিঘ্নে চালানো সম্ভব হবে। কিন্তু বুশরা এই প্রস্তাবে একেবারেই রাজি হননি।
বুশরা বিবি স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, ‘আমরা সরকারের বাধা সত্ত্বেও পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী ডি-চকেই বিক্ষোভ করব। এখানে আমরা আমাদের লক্ষ্য অর্জন করব।’ তার এই অনড় অবস্থানের ফলে পিটিআই নেতাদের প্রচেষ্টা এখন পর্যন্ত সফল হয়নি।
পিটিআই দলের নেতাকর্মীরা বুশরার এই নির্দেশনা অনুসারে ইসলামাবাদ অভিমুখে এগিয়ে যাচ্ছেন। এর আগে, বুশরা বিবি বলেছিলেন, ‘আমরা এখানে এসেছি ইমরান খানকে মুক্ত করার জন্য। আমরা তাকে নিয়েই ফিরে যাব।’
ইমরান খানের মুক্তি এবং সরকারের পদত্যাগের দাবিতে পিটিআই আজকের এই বিক্ষোভ আয়োজন করেছে। ইতোমধ্যে ইসলামাবাদে বিক্ষোভকারীদের সাথে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংঘর্ষে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে।
সোমবার (২৫ নভেম্বর) বিক্ষোভকারীরা ইসলামাবাদের উপকণ্ঠে পৌঁছালে তাদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষ হয়। পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এবং প্রায় চার হাজার পিটিআই কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, এর মধ্যে পাঁচজন সংসদ সদস্যও রয়েছেন।
বিক্ষোভ ঠেকাতে ইসলামাবাদের সব প্রবেশপথ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে, যার মানে হলো কোনো ধরনের জমায়েত নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এর পাশাপাশি, ডি-চকের প্রবেশপথ বন্ধ করতে কার্গো কনটেইনার দিয়ে তা আটকে রাখা হয়েছে। নিরাপত্তার জন্য সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে এবং সংবিধানের ২৪৫ ধারা কার্যকর করা হয়েছে।
এত কিছুর পরও বিক্ষোভকারীদের ওপর নিরাপত্তা বাহিনীর দমনপীড়ন অব্যাহত রয়েছে। পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহসিন নাকবি সতর্ক করে বলেছেন, ইসলামাবাদের ‘রেড জোন’-এ প্রবেশ করলে ইমরান খানের সমর্থকদের গ্রেপ্তার করা হবে।
উত্তাল পাকিস্তানে বর্তমানে পরিস্থিতি বেশ চরম হয়ে উঠেছে এবং এখন পর্যন্ত পাঁচজন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে, এর মধ্যে চারজন নিরাপত্তা সদস্যও রয়েছেন।