ইসলামে মানব হত্যার ভয়াবহ শাস্তি

মানুষ এ পৃথিবীতে আল্লাহর প্রেরিত মেহমান। মানুষকে দেওয়া প্রাণ এটা আল্লাহর আমানত। মানুষ এর মালিক নয়। এজন্য আল্লাহর হুকুমের বাইরে এ প্রাণ নিঃশেষ করার অধিকার কারো নাই। কারণ, পৃথিবীর মধ্যে যত অপরাধ রয়েছে তন্মধ্যে সর্বোচ্চ অপরাধ হচ্ছে মানবহত্যা। এটি জঘন্যতম ও ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ। মানবহত্যা সম্পর্কে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন পবিত্র কোরআনে বলেন, ‘কেউ যদি কাউকে হত্যা করে এবং তা অন্য কাউকে হত্যা করার কারণে কিংবা পৃথিবীতে অশান্তি বিস্তারের কারণে না হয়, তবে সে যেন সমস্ত মানুষকে হত্যা করল। আর যে ব্যক্তি কারও প্রাণ রক্ষা করে, সে যেন সমস্ত মানুষের প্রাণরক্ষা করল’ (সুরা মায়িদাহ : ৩২)। বিদায় হজের ভাষণে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘তোমাদের রক্ত তথা জীবন ও সম্পদ পরস্পরের জন্য হারাম। যেমন আজকের এই দিনে, এই মাসে ও এই শহরে অন্যের জানমালের ক্ষতিসাধন করা তোমাদের ওপর হারাম।’ (তিরমিজি : ২১৬২) আরেক হাদিসে নবীজি বলেছেন, ‘কোনো মুসলিমকে গালি দেওয়া আল্লাহর অবাধ্যতা এবং তাকে হত্যা করা কুফুরী (বোখারি : ৬০৪৪)। বিনা অপরাধে স্বেচ্ছায় মানবহত্যার পরিণতি জাহান্নাম। ইরশাদ হয়েছে, ‘আর যে ব্যক্তি স্বেচ্ছায় কোনো মুমিনকে হত্যা করে তা

ইসলামে মানব হত্যার ভয়াবহ শাস্তি

মানুষ এ পৃথিবীতে আল্লাহর প্রেরিত মেহমান। মানুষকে দেওয়া প্রাণ এটা আল্লাহর আমানত। মানুষ এর মালিক নয়। এজন্য আল্লাহর হুকুমের বাইরে এ প্রাণ নিঃশেষ করার অধিকার কারো নাই। কারণ, পৃথিবীর মধ্যে যত অপরাধ রয়েছে তন্মধ্যে সর্বোচ্চ অপরাধ হচ্ছে মানবহত্যা। এটি জঘন্যতম ও ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ।

মানবহত্যা সম্পর্কে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন পবিত্র কোরআনে বলেন, ‘কেউ যদি কাউকে হত্যা করে এবং তা অন্য কাউকে হত্যা করার কারণে কিংবা পৃথিবীতে অশান্তি বিস্তারের কারণে না হয়, তবে সে যেন সমস্ত মানুষকে হত্যা করল। আর যে ব্যক্তি কারও প্রাণ রক্ষা করে, সে যেন সমস্ত মানুষের প্রাণরক্ষা করল’ (সুরা মায়িদাহ : ৩২)।

বিদায় হজের ভাষণে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘তোমাদের রক্ত তথা জীবন ও সম্পদ পরস্পরের জন্য হারাম। যেমন আজকের এই দিনে, এই মাসে ও এই শহরে অন্যের জানমালের ক্ষতিসাধন করা তোমাদের ওপর হারাম।’ (তিরমিজি : ২১৬২)

আরেক হাদিসে নবীজি বলেছেন, ‘কোনো মুসলিমকে গালি দেওয়া আল্লাহর অবাধ্যতা এবং তাকে হত্যা করা কুফুরী (বোখারি : ৬০৪৪)।

বিনা অপরাধে স্বেচ্ছায় মানবহত্যার পরিণতি জাহান্নাম। ইরশাদ হয়েছে, ‘আর যে ব্যক্তি স্বেচ্ছায় কোনো মুমিনকে হত্যা করে তার শাস্তি হবে জাহান্নাম। তার মধ্যে সে সদা-সর্বদা থাকবে এবং আল্লাহ তয়ালা তার প্রতি ক্ষুব্ধ হবেন ও তাকে অভিশাপ দেবেন। তেমনিভাবে তিনি তার জন্য প্রস্তুত রেখেছেন ভীষণ শাস্তি’ (সুরা নিসা : ৯৩)। 

হত্যাকারীর জন্য দুনিয়াতে মর্মপীড়া

পরকালের শাস্তি ছাড়াও হত্যাকারীর জন্য দুনিয়াতে রয়েছে মর্মপীড়া দেওয়ার মতো দুঃসংবাদ। যারা নিজের পেশী শক্তি বা অন্যকে সহ্য করতে না পেরে হত্যাকাণ্ডের মতো জঘন্য অপরাধে জরিয়ে পড়ে, তাদের জন্য তওবা কবুল না হওয়ার দুঃসংবাদ দেওয়া হয়েছে হাদিসে। 

বর্ণিত হয়েছে, ‘হত্যাকৃত ব্যক্তি হত্যাকারীকে সঙ্গে নিয়ে কেয়ামতের দিন আল্লাহ তায়ালার সামনে উপস্থিত হবে। হত্যাকৃত ব্যক্তির মাথা তার হাতেই থাকবে। শিরাগুলো থেকে তখন রক্ত পড়বে। সে আল্লাহ তায়ালাকে উদ্দেশ্য করে বলবে, হে আমার প্রভু! এ ব্যক্তি আমাকে হত্যা করেছে। এমনকি সে হত্যাকারীকে আরশের অতি নিকটেই নিয়ে যাবে।’

শ্রোতারা আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাসকে (রা.) হত্যাকারীর তওবা করা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি সুরাহ নিসার ৯৩ নম্বর আয়াতটি তিলাওয়াত করে বললেন, উক্ত আয়াত রহিত হয়নি। পরিবর্তনও হয়নি। অতএব তার তওবা কোনো কাজেই আসবে না। (তিরমিজি : ৩০২৯)

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow