ঈদ টার্গেট করে লাখ টাকার জাল নোট ১৫ হাজারে বিক্রি

3 months ago 53

রাজধানীর শ্যামপুর এলাকা থেকে জালনোট প্রস্তুতকারী চক্রের মূল হোতা হৃদয় মাতব্বরকে (২২) গ্রেফতার করেছে র‍্যাব-৩। বৃহস্পতিবার দিনগত রাতে অভিযান চালিয়ে জাল নোট তৈরির ব্যবহৃত সরঞ্জামাদি ও বিপুল জালনোটসহ তাকে গ্রেফতার করা হয়। শুক্রবার (৭ জুন) র‍্যাব-৩ এর স্টাফ অফিসার (মিডিয়া) সহকারী পুলিশ সুপার মো. শামীম হোসেন এ তথ্য জানান।

অভিযানে আসামির কাছে জালনোট তৈরিতে ব্যবহৃত একটি সিপিইউ, একটি মনিটর, একটি প্রিন্টার, একটি রাউটার, একটি পেপার কাটার, ৯টি ভুয়া এনআইডি কার্ড, তিনটি ভুয়া ভারতীয় এনআইডি কার্ডের ফটোকপি এবং ৬০ হাজার ৭০০ টাকা মূল্যমানের জাল টাকা (৬০২টি ১০০ টাকার নোট এবং একটি ৫০০ টাকার নোট) উদ্ধার করা হয়।

র‍্যাব জানায়, আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহাকে টার্গেট করে বিপুল পরিমাণ জাল নোট বাজারে সরবরাহ করার প্রস্তুতি নিয়েছিল হৃদয়। প্রতি ১ লাখ টাকার জাল নোট ১০ থেকে ১২ হাজার টাকায় বিক্রি করলেও ঈদে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় ১৫ হাজার টাকায় বিক্রি করছিল হৃদয়।

র‍্যাব-৩ এর স্টাফ অফিসার (মিডিয়া) সহকারী পুলিশ সুপার মো. শামীম হোসেন বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দিয়ে জালনোটের অবাধ কারবার নিয়ে দেশব্যাপী বিভিন্ন গণমাধ্যম এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা হলে র‍্যাব এসব সংঘবদ্ধ জালনোট প্রস্তুতকারী চক্রের সদস্যদের গ্রেফতারে বিশেষ গোয়েন্দা নজরদারি শুরু করে। আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে এমন বেশকিছু জাল নোট প্রস্তুতকারী চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে বলে র‍্যাব গোয়েন্দা সূত্রে জানতে পারে।

এরই ধারাবাহিকতায় র‍্যাব-৩ এর একটি আভিযানিক দল বৃহস্পতিবার দিনগত রাতে রাজধানীর শ্যামপুর থানাধীন পশ্চিম ধোলাইপাড় এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে জালনোট তৈরি ও ব্যবসায়ী চক্রের মূলহোতা হৃদয় মাতব্বরকে গ্রেফতার করে।

ইউটিউব থেকে জালটাকা বানানোর প্রক্রিয়া শেখে হৃদয়
এএসপি শামীম হোসেন জানান, গ্রেফতার আসামি আগে থেকেই কম্পিউটারে পারদর্শী ছিল। তিনি ধোলাইপাড় এলাকার একটি কম্পিউটারের দোকানে কাজ করতেন। হৃদয় ইউটিউব থেকে জালটাকা বানানোর প্রক্রিয়া দেখে এবং নিজের অর্জিত কম্পিউটার দক্ষতা কাজে লাগিয়ে জাল নোট তৈরিতে পারদর্শিতা অর্জন করে।

ঈদ টার্গেট করে লাখ টাকার জাল নোট ১৫ হাজারে বিক্রি

পরবর্তীতে হৃদয় কম্পিউটার, প্রিন্টার, পেপার কাটার এবং জালটাকা তৈরির কাঁচামাল সংগ্রহ করে নিজ বাসায় জালটাকা ছাপানোর কাজ শুরু করে। তিনি বিভিন্ন সোস্যাল মিডিয়া ও অনলাইন মাধ্যম ব্যবহার করে জাল টাকা বিক্রয়ের জন্য নেটওয়ার্ক তৈরি করে এবং এসব পেজ প্রমোট ও বুস্টিং করে অনেক পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতা সংগ্রহ করে।

র‍্যাবের এ কর্মকর্তা আরও বলেন, গ্রেফতার হৃদয় দীর্ঘদিন ধরে জাল নোট প্রস্তুত ও বিক্রি করলেও আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহাকে টার্গেট করে বিপুল পরিমাণ জাল নোট বাজারে সরবরাহ করার প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। প্রতি ১ লাখ টাকা মূল্যমানের জাল নোট ১০ থেকে ১২ হাজার টাকায় বিক্রি করতেন।

তিনি বলেন, ঈদ উপলক্ষে জাল নোটের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় বর্তমানে তিনি প্রতি ১ লাখ টাকার জাল নোট ১৫ হাজার টাকায় বিক্রি করছিলেন বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেন।

এএসপি শামীম বলেন, এছাড়াও তিনি অবৈধভাবে দেশি ও বিদেশী ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করে সেগুলো বিভিন্ন অপরাধী চক্রের কাছে বিপুল পরিমাণ অর্থের বিনিময়ে বিক্রি করে আসছিলেন।

টিটি/এমআইএইচএস/জিকেএস

Read Entire Article