‘উচ্চবংশীয়’ ছাগলকাণ্ডে আলোচিত সাদিক অ্যাগ্রোর চেয়ারম্যান ইমরান হোসেনকে আদালতে তোলার সময় ছবি তুলতে গিয়ে হেনস্তার শিকার হয়েছেন সাংবাদিকরা।
মঙ্গলবার (৪ মার্চ) বিকেল তিনটার দিকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের দ্বিতীয় তলায় এ ঘটনা ঘটে। এসময় আসামি ইমরানের ছবি তুলতে গেলে সকাল সন্ধ্যা ডটকমের নিজস্ব প্রতিবেদক আরিফুল ইসলামকে ধাক্কা দেন এক ব্যক্তি। তখন কয়েকজন ব্যক্তি সাংবাদিকদের দিকে তেড়ে এসে ধাক্কাধাক্কি করেন।
জানা গেছে, অভিযুক্তরা সাদিক অ্যাগ্রোর ইমরান হোসেনের অনুসারী। পরে উপস্থিত সাংবাদিক ও ইমরানের অনুসারীদের কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
হেনস্তার শিকার সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম বলেন, আসামিকে আদালতে তোলার সময় পেশাগত দায়িত্বের অংশ হিসেবে আমি তার ছবি নিচ্ছিলাম। তখনই এক ব্যক্তি পাশ থেকে এসে ধাক্কা দেয়। এসময় অনেকেই চিল্লাচিল্লি করে হুমকি দেন। তারা সবাই আসামি ইমরানের অনুসারী। ইমরানকে আদালতে তোলার সময় তারা উপস্থিত হন।
এদিন অর্থপাচারের মামলায় আসামি ইমরানের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এম এ আজহারুল ইসলামের আদালত রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।
আরও পড়ুন
এর আগে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন অনুযায়ী ১৩৩ কোটি টাকা মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগে সাদিক অ্যাগ্রোর মালিক ইমরান হোসেন, তৌহিদুল আলম জেনিথ ও অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠান সাদিক অ্যাগ্রোর বিরুদ্ধে মামলা করে সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট। সংস্থাটির উপ-পরিদর্শক মো. জোনাঈদ হোসেন রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানায় ৩ মার্চ মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে মামলা করেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, সাদিক অ্যাগ্রো চোরাচালান, প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে সরকারি বিধি লঙ্ঘন করে অনুমোদনহীন ব্রাহমা জাতের গরু আমদানি করে। এছাড়াও ভুটান ও নেপাল থেকে চোরাচালানের মাধ্যমে ছোট আকৃতির ভুট্টি গরু দেশে এনে বিক্রির প্রমাণ পাওয়া যায়। প্রতারণার মাধ্যমে দেশীয় গরু-ছাগলকে বিদেশি ও বংশীয় গরু-ছাগল বলে প্রচার করে উচ্চমূল্যে তা কোরবানির পশুর হাটে বিক্রয় করে সাদিক অ্যাগ্রো।
অবৈধভাবে উপার্জিত অর্থ অভিযুক্ত ব্যক্তি ও তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের নামে থাকা বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে প্রায় ১২১ কোটি ৩২ লাখ ১৫ হাজার ১৪৪ টাকা হস্তান্তর, স্থানান্তর করেন ইমরান হোসেন।
এছাড়াও অনুমোদনহীন জোরপূর্বক মোহাম্মাদপুর থানার বেড়িবাঁধ এলাকায় রামচন্দ্রপুর সরকারি খাল ভরাট ও দখল করে সাদিক অ্যাগ্রো। অবৈধভাবে অর্জিত অর্থ ইমরান হোসেন তার মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান জালালাবাদ মেটাল লিমিটেডের নামে এফডিআর খুলে মোট ১১ কোটি ৩৬ লাখ ৯১ হাজার ২০০ টাকা বিনিয়োগ করে রূপান্তর করেছেন। যার সর্বমোট পরিমাণ ১৩৩ কোটি ৫৫ লাখ ৬ হাজার ৩৪৪ টাকা।
এমআইএন/কেএসআর/এমএস