উচ্ছেদ আতঙ্কে মালপাহাড়িয়ারা

2 hours ago 6

রাজশাহীর মোল্লাপাড়ার মালপাহাড়িয়া জনগোষ্ঠীর মানুষরা নিজেদের ৫৩ বছরের বসতভিটা থেকে উচ্ছেদের আশঙ্কায় দিন কাটাচ্ছেন। ভয় আর অনিশ্চয়তার মধ্যে তারা ধরছেন শেষ আশ্রয়— মানবিকতার।

মোল্লাপাড়ার ১৬ কাঠা জমিতে ছয়টি পাহাড়িয়া পরিবার প্রথম বসতি গড়ে। এখন সেখানে বসবাস করছে ১৬টি পরিবার। সম্প্রতি স্থানীয় সাজ্জাদ আলী দাবি করেন, তিনি ১৯৯৪ সালে জমিটি কিনেছেন এবং এর দখল নিতে চান। এ দাবিকে কেন্দ্র করে পরিবারগুলোর ওপর চাপ সৃষ্টি করা হয়— এমনকি ৩০ লাখ টাকায় তাদের ‘বিদায় সংবর্ধনা’ আয়োজনের কথাও শোনা যায়। 

শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) ছিল খাসি জবাইয়ের প্রস্তুতি, আর রোববার তাদের চলে যাওয়ার দিন নির্ধারিত ছিল।

তবে সেই আয়োজন ভেস্তে যায় স্থানীয় নাগরিকদের প্রতিবাদে। শুক্রবার সকালে মানববন্ধনে অংশ নেন শিক্ষক-শিক্ষার্থী, মানবাধিকারকর্মী, আদিবাসী সংগঠন ও সাধারণ মানুষ। তারা বলেন, ‘এ জমি পাহাড়িয়াদের। উচ্ছেদ মেনে নেওয়া হবে না।’

এক পাহাড়িয়া নারী বলেন, ‘আমরা এখানেই থাকতে চাই। এ জায়গা আমরা ছাড়ব না।’

সংবাদের পর একে একে পাশে দাঁড়ায় রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান স্থানীয় নেতাদের নির্দেশ দেন পাহাড়িয়াদের পাশে দাঁড়াতে। জাতীয় নাগরিক পার্টিও (এনসিপি) সমর্থন জানিয়েছে।

আইন সহায়তায় এগিয়ে এসেছে ব্লাস্ট, সংহতি জানিয়েছে জাতীয় আদিবাসী পরিষদ, পাহাড়িয়া ছাত্র পরিষদ, বরেন্দ্র ইয়ুথ ফোরামসহ আরও অনেকে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. গোলাম সারোয়ার ও গবেষক নজরুল ইসলাম বলেন, ‘৫৩ বছর ধরে বসবাসরত মানুষদের উচ্ছেদ মানবিক বিপর্যয়। এ জমি তাদের।’

কাশিয়াডাঙ্গা থানার ওসি আজিজুল বারী জানান, ‘পাহাড়িয়ারা নিরাপত্তা চেয়েছেন। আমরা আছি। তাদের আপাতত কোনো নিরাপত্তা সংকট নেই।’

উন্নয়নকর্মী জোসেফ হাঁসদা বলেন, ‘সংবাদমাধ্যমের জন্যই ঘটনা জানি। আমাদের একটাই দাবি—এ মানুষগুলো যেন ভয় ছাড়া বাঁচতে পারে।’ এক পাহাড়িয়া তরুণীর কণ্ঠে তাদের আবেগ ঝরে পড়ে, ‘আমরা এখানেই থাকতে চাই। এ মাটি আমাদের।’

Read Entire Article