নীলফামারীর উত্তরা ইপিজেডে গ্রেফতার শ্রমিকনেতা সাইফুল ইসলাম ও তার বাবার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে সড়ক অবরোধ করে পুলিশ সুপার ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেছেন এভারগ্রিন প্রোডাক্টস বিডি লিমিটেডের বিক্ষুদ্ধ শ্রমিকরা।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে কয়েকশ শ্রমিক বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ডিসি অফিস-সার্কিট হাউজ সড়ক অবরোধ করে পুলিশ সুপার ও জেলা প্রশাসকরে কাযালয় ঘেরাও করে বিক্ষোভ শুরু করেন।
এসময় দুই ঘণ্টা সৈয়দপুর-নীলফামারী মহাসড়কে যানচলাচল বন্ধ থাকে। পরে কারাবন্দি শ্রমিক সাইফুলসহ তার বাবাকে আদালত জামিনে মুক্তি দিলে অবরোধ তুলে নেন শ্রমিকরা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ১২ সেপ্টেম্বর বেলা সাড়ে ১১টার দিকে স্ত্রীকে উত্তরা ইপিজেড থেকে আনতে গিয়ে নিখোঁজ হন ইপিজেডের এভারগ্রিন প্রোডাক্ট বিডি লিমিটেডের শ্রমিক সাইফুল। এ ঘটনায় তার বাবা ওইদিনই সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। পরের দিন রাত সাড়ে ৯টার দিকে সৈয়দপুর উপজেলা শহরের বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে কর্দমাক্ত অবস্থায় সাইফুলকে উদ্ধার করে পুলিশ। পরে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে শ্রমিক অসন্তোষকে পুঁজি করে মালিক পক্ষের কাছে মুক্তিপণ আদায় করতে আত্মগোপনে যাওয়ার কথা স্বীকার করেন সাইফুল।
এ ঘটনায় সাইফুল ও সহায়তাকারী হিসেবে তার বাবা শফিকুল ইসলামকে গ্রেফতারসহ তাদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায় ডিবি পুলিশ।
এ খবর ছড়িয়ে পড়লে সকাল থেকেই এভারগ্রিন কারখানার শ্রমিকরা ইপিজেডের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। পরে পুলিশ গিয়ে তাদের সেখান থেকে সরিয়ে দিলে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ডিসি অফিসের সামনের সড়ক অবরোধ করেন শ্রমিকরা। একপর্যায়ে পুলিশ সুপার ও জেলা প্রশাসকরে কার্যালয় ঘেরাও করে বিক্ষোভ শুরু করেন তারা। পরে কারাবন্দি শ্রমিক সাইফুল ও তার বাবাকে আদালত জামিনে মুক্তি দিলে দুই ঘণ্টা পর শ্রমিকরা অবরোধ তুলে নিলে সড়কে যানচলাচল স্বাভাবিক হয়।
পরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা ও শ্রমিক প্রতিনিধিদের নিয়ে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে শ্রমিকদের উত্থাপিত যৌক্তিক দাবিগুলো মেনে নেয়া হলে বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) থেকে শ্রমিকরা কাজে ফিরতে সম্মত হন।
নীলফামারী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামান জাগো নিউজকে বলেন, গ্রেফতার শ্রমিক নেতা সাইফুল ইসলামকে নিয়ে শ্রমিকদের মাঝে ভুল বোঝাবুঝি হওয়ায় তাদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়। পরে আইনি প্রক্রিয়ায় তার জামিন হলে সড়ক থেকে সরে যান শ্রমিকরা। যৌক্তিক দাবিগুলো মেনে নেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার থেকে তারা কাজে যোগদান করবেন।
আমিরুল হক/এসআর/জিকেএস