উদ্বোধনের আড়াই বছরেই দেবে গেছে সংযোগ সড়ক, ভোগান্তি চরমে

3 months ago 9

নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদীর ওপর নির্মিত তৃতীয় সেতুর বয়স মাত্র আড়াই বছর। অথচ এরমধ্যেই দেবে গেছে সেতুটির সংযোগ সড়ক। সৃষ্টি হয়েছে বড় ধরনের গর্ত।

২০২২ সালের ১০ অক্টোবর সেতুটির উদ্বোধন করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেতুটির নাম দেওয়া হয় বীর মুক্তিযোদ্ধা একেএম নাসিম ওসমান তৃতীয় শীতলক্ষ্যা সেতু। ৫ আগস্টের পর সেতুটির নাম মুছে দেয় ছাত্র-জনতা।

উদ্বোধনের আড়াই বছরেই দেবে গেছে সংযোগ সড়ক, ভোগান্তি চরমে

স্থানীয়রা জানান, সেতুটি চালুর ফলে দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের সঙ্গে ঢাকা-চট্টগ্রাম এবং ঢাকা-সিলেট বিভাগের জেলাগুলোর যোগাযোগ সহজ হয়েছে। যানবাহনগুলো নারায়ণগঞ্জ শহরে প্রবেশ না করে মদনপুর হয়ে মুন্সিগঞ্জের মাওয়া দিয়ে পদ্মা সেতু হয়ে দক্ষিণাঞ্চলে চলে যেতে পারছে। একইসঙ্গে মদনপুর হয়ে দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে চলে যাওয়া যায়। তবে হঠাৎ করে সেতুটির সংযোগ সড়কে বড় ধরনের ভাঙন সৃষ্টি হওয়ায় যানবাহন চলাচলে দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে। যানবাহনগুলোকে ধীরে ধীরে চলাচল করতে হচ্ছে। একইসঙ্গে রাতের বেলা বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, কয়েক ঘণ্টার টানা বৃষ্টিতে সেতুটির পশ্চিমাংশে তথা সৈয়দপুর এলাকায় সংযোগ সড়কের অনেকটা অংশ দেবে গেছে। দুর্ঘটনা এড়াতে দেবে যাওয়া অংশের চারপাশে লাল কাপড় দিয়ে সংকেত দেওয়া হয়েছে।

ফরাজিকান্দা এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ লুৎফর জাগো নিউজকে বলেন, ‌‘কাজ করার সময় তাড়াহুড়ো করা হয়েছে। যে কারণে দুই বছরের মধ্যেই সড়কের এই বেহাল অবস্থা।’

স্থানীয় বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘পর্যাপ্ত ড্রেনেজের ব্যবস্থা না করেই সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে। যে কারণে অল্পদিনেই সড়কের এই হাল হয়েছে।’

উদ্বোধনের আড়াই বছরেই দেবে গেছে সংযোগ সড়ক, ভোগান্তি চরমে

নারায়ণগঞ্জ জেলা সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের (সওজ) উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. আল রাজী লিয়ন বলেন, ‘সেতুর ওপরের অংশে একাধিক স্থানে পানি সরানোর জন্য পাইপের ব্যবস্থা করা হলেও পাইপের প্রত্যেকটি মুখ স্থানীয়রা বন্ধ করে দিয়েছেন। ফলে পানি শুধু এই স্থান (দেবে যাওয়া অংশ) দিয়ে সরে যেতো। যে কারণে গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে সড়কটির একটি অংশে ভেঙে গেছে। সংস্কার কাজ শেষ হলে সড়কটি চলাচলের জন্য পুরো উপযোগী হয়ে যাবে।’

সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, তৃতীয় শীতলক্ষ্যার নির্মাণ প্রকল্পটি ২০১০ সালে একনেকে অনুমোদন পেলেও ২০১৮ সালের ২৮ জানুয়ারি নির্মাণকাজ শুরু হয়। সেতু নির্মাণে ব্যয় ধরা হয় ৬০৮.৫৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে ২৬৩.৩৬ কোটি টাকা বাংলাদেশ সরকারের তহবিল থেকে এবং ৩৪৫.২০ কোটি টাকা সৌদি ফান্ড ফর ডেভেলপমেন্ট (এসএফডি) থেকে এসেছে।

ওয়াকওয়েসহ সেতুটিতে ৩৮টি স্প্যান রয়েছে। এগুলোর পাঁচটি নদীতে এবং ৩৩টি পূর্ব ও পশ্চিম প্রান্তে। হাঁটার পথসহ সেতুটির প্রস্থ ২২.১৫ মিটার। এছাড়া ছয় লেনের টোল প্লাজা এবং দেড় কিলোমিটার দীর্ঘ সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে।

মোবাশ্বির শ্রাবণ/এসআর/জিকেএস

Read Entire Article