‘উন্নত দেশ গড়তে ডিম-দুধ-মাংসের প্রাপ্যতা বাড়াতে হবে’

3 months ago 49

বুদ্ধিমান ও স্বাস্থ্যবান জাতি গড়তে হলে প্রোটিনের প্রাপ্যতা বাড়াতে হবে। উন্নত দেশের মানুষ যেখানে বছরে গড়ে প্রায় ৩০০ থেকে ৪০০টি ডিম খায়, সেখানে সরকারি হিসাবে আমাদের দেশে এ সংখ্যা ১৩৬টি। শুধুমাত্র হাঁস ও মুরগির ডিমের হিসাব করলে প্রকৃত সংখ্যা আরও অনেক কম। মুরগির মাংসের প্রাপ্যতা উন্নত দেশের তিন ভাগের এক ভাগ। দুধের মাথাপিছু দৈনিক প্রাপ্যতা ২৫০ মি.লির বিপরীতে মাত্র ২২২ মি.লি.। তাই ২০৪১ সালের স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য পূরণ করতে হলে ডিম, দুধ, মাংসের মাথাপিছু প্রাপ্যতা বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই।

রাজধানীতে ‘ডক্টরস ডায়ালগ অন রাইট টু প্রোটিন’ শীর্ষক এক সেমিনারে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়। বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব হেলথ সাইন্সেস (বিএউএইচএস), বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল (বিপিআইসিসি) এবং ইউ.এস. সয়াবিন এক্সপোর্ট কাউন্সিল (ইউএসএসইসি) যৌথভাবে সেমিনারটি আয়োজন করে।

‘উন্নত দেশ গড়তে ডিম-দুধ-মাংসের প্রাপ্যতা বাড়াতে হবে’

বিএউএইচএস’র উপাচার্য প্রফেসর ডা. ফরিদুল আলম বলেন, আপাত বিচারে মাথাপিছু আয় কম হওয়াকে প্রোটিন বা পুষ্টি ঘাটতির কারণ হিসেবে দায়ী করা হলেও সচেতনতার অভাবকেও এ দায় থেকে মুক্ত করা যায় না।

তিনি বলেন, বেসরকারি এমনকি সরকারি টিভি চ্যানেলগুলোতেও ডিম কিংবা দুধের বিজ্ঞাপন চোখে পড়ে না। অথচ প্রতিবেশী দেশে প্রচারিত দারুণ চিত্তাকর্ষক বিজ্ঞাপনগুলো সাধারণ মানুষকে আকৃষ্ট করছে।

‘উন্নত দেশ গড়তে ডিম-দুধ-মাংসের প্রাপ্যতা বাড়াতে হবে’

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব হেলথ সাইন্সেস জেনারেল হাসপাতালের মহাপরিচালক প্রফেসর ডা. মো. ফজলুর রহমান বলেন, তথ্যপ্রযুক্তির এ যুগে মানুষকে কোনো বিষয় সম্পর্কে অবহিত করা আগের চেয়ে অনেক বেশি সহজ। তবে আচরণে পরিবর্তন আনা অনেক কঠিন একটি কাজ। আশার কথা হলো অধিকাংশ মানুষ এখনো ডাক্তার, পুষ্টিবিদ কিংবা হেলথ প্রফেশনালদের কথা মনোযোগ দিয়ে শোনেন এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করেন। তাই প্রোটিন ও পুষ্টি বিষয়ক জনসচেতনতা বাড়াতে ডাক্তার ও হেলথ প্রফেশনালদের এগিয়ে আসতে হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের পরিচালক প্রফেসর ড. খালেদা ইসলাম বলেন, জাতি গঠনের প্রেক্ষাপটে প্রতিটি নাগরিকের জন্য পর্যাপ্ত প্রোটিন নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি। প্রোটিনের ঘাটতি একটি শক্তিশালী জাতিকেও দুর্বল জাতিতে পরিণত করতে পারে। অপুষ্টিতে আক্রান্ত ও দুর্বল শিশুর জন্মহার, খর্বাকৃতি ও কম ওজনের শিশুর সংখ্যা বাড়তে থাকলে পরিণামে বৃহত্তর সমাজ ও জাতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

‘উন্নত দেশ গড়তে ডিম-দুধ-মাংসের প্রাপ্যতা বাড়াতে হবে’

বারডেম হাসপাতালের প্রধান পুষ্টিবিদ শামসুন নাহার নাহিদ মহুয়া বলেন, ডিম সম্পর্কে অনেক ভুল ধারণা প্রচলিত আছে। যেমন- ডিম খেলে হার্টের সমস্যা হয়, প্রেসার হয়, শরীর মোটা হয়ে যায়, অপারেশনের রোগীকে ডিম দেওয়া যাবে না, বয়স্কদের ডিম-মাংস দেয়া যাবে না। ব্রয়লার মুরগির মাংস খাওয়া ঠিক নয় ইত্যাদি। অথচ ডিম ও দুধ হচ্ছে সুপার ফুড। অন্যদিকে ব্রয়লার মুরগির মাংস হচ্ছে পৃথিবীর অন্যতম জনপ্রিয় ও স্বাস্থ্যকর মাংস।

সেমিনারে প্রায় ২৫০ জন ডাক্তার, পুষ্টিবিদ, হেলথ প্রফেশনাল ও শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন।

জেডএইচ/জিকেএস

Read Entire Article