উন্নয়নশীল দেশে উন্নীতের পর বাণিজ্য-ঋণে কিছু সুবিধা থাকবে না

3 months ago 45

স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার পর বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও স্বল্প সুদে ঋণ পাওয়ার ক্ষেত্রে কিছু সুবিধার অবসান ঘটবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে অর্থনৈতিক সক্ষমতার বিকাশের মাধ্যমে কিছু বাড়তি সুবিধা তৈরি হবে বলেও জানান তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশ ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে উন্নয়নশীল দেশের তালিকাভুক্ত হবে। এটি নিশ্চিতভাবে স্বাধীনতা পরবর্তীকালে বাংলাদেশের জন্য অন্যতম উল্লেখযোগ্য অর্জন। এলডিসি থেকে উত্তীর্ণ পরবর্তী কিছু অভিঘাত বিশেষ করে বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও স্বল্প সুদে ঋণ পাওয়ার ক্ষেত্রে কিছু সুবিধার অবসান ঘটবে। একইসঙ্গে অর্থনৈতিক সক্ষমতার বিকাশের মাধ্যমে কিছু বাড়তি সুবিধা পাওয়ার সুযোগ তৈরি হবে।’

বুধবার (৫ জুন) বিকেলে জাতীয় সংসদের অধিবেশনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য মো. খসরু চৌধুরীর এক লিখিত প্রশ্নের উত্তরে এসব কথা বলেন তিনি। অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।

ঢাকা-১৪ আসনের সংসদ সদস্য মো. মাইনুল হোসেন খানের অপর এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রত্যন্ত গ্রামের সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে কমিউনিটি বেজড স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে সারাদেশে কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণ করেছে সরকার। তার সরকারের সময়ে শুরু হওয়া এ কার্যক্রমের মধ্যে ৯৯টি কমিউনিটি ক্লিনিক ধ্বংস হয়ে যায় বলে জাতীয় সংসদে জানান প্রধানমন্ত্রী।

আরও পড়ুন

তিনি বলেন, ‘কমিউনিটি ক্লিনিক বর্তমান সরকারের সাফল্যের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। এ কার্যক্রমের মাধ্যমে দেশের দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত গ্রামীণ জনগণ কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে সমন্বিত স্বাস্থ্য, পরিবার পরিকল্পনা ও পুষ্টি সেবা পাচ্ছে। এটি জনগণ ও সরকারের যৌথ প্রয়াসে বাস্তবায়িত একটি কার্যক্রম। জনমুখী এ কার্যক্রম ১৯৯৬ সালে নেওয়া হয়, বাস্তবায়ন শুরু হয় ১৯৯৮ সালে। ১৯৯৮ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত সময়ে ১০ হাজারেরও বেশি কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণ ও অধিকাংশই চালু করা হয়। জনগণও সেবা পেতে শুরু করে। কিন্তু ২০০১ সালে সরকার পরিবর্তনের পর এ কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। এ অবস্থা ২০০৮ সাল পর্যন্ত চলমান থাকে। দীর্ঘদিন অব্যবহৃত থাকায় নদীভাঙন ও অন্যান্য কারণে ৯৯টি কমিউনিটি ক্লিনিক ধ্বংস হয়ে যায় এবং ১০ হাজার ৬২৪টি বিদ্যমান থাকে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘২০০৯ সাল থেকে রেভিটালাইজেশন অব কমিউনিটিজ হেলথ কেয়ার ইনিশিয়েটিভ ইন বাংলাদেশ (আরসিএইচসিআইবি) প্রকল্পের মাধ্যমে কমিউনিটি ক্লিনিক পুনরুজ্জীবিত করার কার্যক্রম শুরু হয়। এ কার্যক্রমের মাধ্যমে ১৯৯৮ থেকে ২০০১ সময়ে নির্মিত কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোর প্রয়োজনীয় মেরামত, জনবল পদায়ন, ওষুধ ও প্রয়োজনীয় সামগ্রী সরবরাহ করে নতুন নির্মিত কমিউনিটি ক্লিনিক পর্যায়ক্রমে চালু করা হয়। পরবর্তীতে কমিউনিটি ক্লিনিক কার্যক্রম পরিচালনার লক্ষ্যে ৪র্থ এইচপিএনএসপি অপারেশনাল প্ল্যান অন্তর্ভুক্ত করা হয়। বর্তমানে কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্টের আওতায় কমিউনিটি বেজড হেলথ কেয়ারের (সিবিএইচসি) মাধ্যমে কমিউনিটি ক্লিনিকের সব কার্যক্রম বাস্তবায়িত হচ্ছে। সারাদেশে বর্তমানে ১৪ হাজার ২৯২টি কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণ শেষ হয়েছে। এর মধ্যে মোট ১৪ হাজার ২৭৫টি কমিউনিটি ক্লিনিক চালু রয়েছে এবং ৯৮টি কমিউনিটি ক্লিনিকের নির্মাণকাজ চলমান।’

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে গ্রামীণ জনগণকে মূলত স্বাস্থ্য শিক্ষা, স্বাস্থ্য উন্নয়ন, পুষ্টি, পরিবার পরিকল্পনা, উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস রোগ শনাক্ত, সীমিত নিরাময়মূলক সেবাসহ জরুরি ও জটিল রোগীদের যথাযথ ব্যবস্থাপনার জন্য উচ্চতর পর্যায়ে রেফার সংক্রান্ত সেবা দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া অসংক্রামক রোগ প্রাথমিকভাবে নিরূপণ এবং উচ্চতর পর্যায়ে রেফার যেমন- উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, আর্সেনিকোসিস, অটিজম ইত্যাদি কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে কমিউনিটি ক্লিনিকে নিয়মিত স্বাস্থ্য শিক্ষা কার্যক্রম আরও জোরদার করা এবং একটি কার্যকর রেফারেল ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।’

আইএইচআর/কেএসআর/জিকেএস

Read Entire Article