একরাতেই ইউক্রেনে ৬ শতাধিক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। বৃহস্পতিবার ইউক্রেনের বিমান বাহিনী জানিয়েছে, রাশিয়া এক রাতেই ইউক্রেনে শত শত ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। দুদেশের মধ্যে যুদ্ধ থামাতে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে বিভিন্ন দেশ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু এর মধ্যেই বড় ধরনের হামলা চালালো মস্কো।
ইউক্রেনের বিমান বাহিনী জানিয়েছে, রুশ বাহিনী ৫৭৪টি ড্রোন এবং ৪০টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। এতে কমপক্ষে একজন নিহত হয়েছে। বিমান প্রতিরক্ষা ইউনিট ৫৪৬টি ড্রোন এবং ৩১টি ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করতে সক্ষম হয়েছে।
এদিকে গত শুক্রবারের আলাস্কা সম্মেলনে ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধের প্রধান শর্ত হিসেবে পুরো ডনবাস অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ চেয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক নিয়ে গঠিত ডনবাস অঞ্চলটি ইউক্রেনের পূর্বাংশে অবস্থিত। এর মধ্যে লুহানস্ক প্রায় পুরোপুরি রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তবে ক্রামাতোরস্ক ও স্লোভিয়ানস্ক শহরসহ দোনেৎস্কের গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলো এখনো ধরে রেখেছে ইউক্রেন। তাই ইউক্রেনের শিল্পাঞ্চল হিসেবে পরিচিত দোনেৎস্ক অঞ্চল পুরোপুরি দাবি করেছেন পুতিন।
তবে ভূখণ্ড ছেড়ে দেওয়ার প্রস্তাব বরাবরই প্রত্যাখান করে আসছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। কিয়েভ ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব সোসিওলজির পরিচালিত জরিপ অনুযায়ী, ইউক্রেনের কোনো ভূখণ্ড আনুষ্ঠানিকভাবে রাশিয়ার কাছে হস্তান্তরের বিরোধিতা করছেন দেশটির প্রায় ৭৫ শতাংশ নাগরিক। ফলে ডনবাস অঞ্চলটি ঘিরেই শান্তি আলোচনায় একপ্রকার অচলাবস্থা তৈরির আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
দ্য গার্ডিয়ান বলছে, দোনেৎস্ক অনেক আগে থেকে মস্কোর প্রধান লক্ষ্যবস্তু। ২০১৪ সালে প্রথমবারের মতো এ অঞ্চলে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে শুরু করে রুশ বাহিনী। পরে ২০২২ সালে ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রার আগ্রাসন শুরু পর অঞ্চলটির বড় একটি অংশের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় রাশিয়া।
বর্তমানে ডনবাসের ৪৬ হাজার ৫৭০ বর্গ কিলোমিটার বা ৮৮ শতাংশই রাশিয়ার দখলে। এর মধ্যে লুহানস্কের পুরোটাই এবং দোনেৎস্কের এক তৃতীয়াংশ নিয়ন্ত্রণ করছে মস্কো। তবে দোনেৎস্কের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোর বেশিরভাগই এখনো নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হয়েছে ইউক্রেন। এর জন্য অবশ্য চড়া মূল্যও দিতে হয়েছে কিয়েভের। এই অঞ্চলের দখল ধরে রাখতে হাজার হাজার মানুষের জীবন গিয়েছে।
টিটিএন