এখনো পুড়ছে কড়াইল বস্তি, ইউনিট বেড়ে ১৯

প্রায় চার ঘণ্টা ধরে জ্বলছে রাজধানীর কড়াইল বস্তি। সময় গড়িয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মাত্রা বাড়ছে আগুনের। সঙ্গে বাড়ছে ফায়ার সার্ভিসের ইউনিটের সংখ্যাও। সর্বশেষ আরও তিন ইউনিট যোগ হয়েছে আগুন নিয়ন্ত্রণে। ফায়ার সার্ভিসের মোট ১৯টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে প্রাণপণে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) বিকেল ৫টা ২২ মিনিটে আগুন লাগার প্রায় ৪৫ মিনিট পর ফায়ার সার্ভিস পৌঁছাতে সক্ষম হয়। কারণে ফায়ার সার্ভিসের ইউনিটগুলো রাস্তায় ছিল যানজটে আটকা। ফায়ার সার্ভিসের ইউনিট পৌঁছালেও কিছু সময় পর শেষ হতে থাকে গাড়িতে থাকা পানি। পরে বিকল্প পানির উৎস খুঁজে পান ফায়ার ফাইটাররা। বস্তির ঝিলপাড় খালে জেনারেটর বসিয়ে সেখান থেকে পানির পাইপ টেনে নিয়ে যাওয়া হয় আগুনের উৎপত্তিস্থলে। কড়াইল বস্তি সরেজমিনে ঘুরে ও বস্তিবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আগুন লাগার সময় বস্তিতে মানুষ ছিল কম। বস্তির কর্মজীবী মানুষ ছিলেন সবাই বাইরে। আগুনের খবর পেয়ে অনেকেই ছুটে আসেন বস্তিতে। যে যেভাবে পেরেছেন ঘরের সম্বলটুকু বের করে এনেছেন। আবার কেউ কেউ ঘরেই যেতে পারেননি আগুনের তীব্রতার কারণে। সিরাজ আলী প্রায় ১০ বছর ধরে বস্তিতে থাকেন। তিনি একটি বেসরকারি প্রতিষ

এখনো পুড়ছে কড়াইল বস্তি, ইউনিট বেড়ে ১৯

প্রায় চার ঘণ্টা ধরে জ্বলছে রাজধানীর কড়াইল বস্তি। সময় গড়িয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মাত্রা বাড়ছে আগুনের। সঙ্গে বাড়ছে ফায়ার সার্ভিসের ইউনিটের সংখ্যাও। সর্বশেষ আরও তিন ইউনিট যোগ হয়েছে আগুন নিয়ন্ত্রণে। ফায়ার সার্ভিসের মোট ১৯টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে প্রাণপণে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) বিকেল ৫টা ২২ মিনিটে আগুন লাগার প্রায় ৪৫ মিনিট পর ফায়ার সার্ভিস পৌঁছাতে সক্ষম হয়। কারণে ফায়ার সার্ভিসের ইউনিটগুলো রাস্তায় ছিল যানজটে আটকা।

ফায়ার সার্ভিসের ইউনিট পৌঁছালেও কিছু সময় পর শেষ হতে থাকে গাড়িতে থাকা পানি। পরে বিকল্প পানির উৎস খুঁজে পান ফায়ার ফাইটাররা। বস্তির ঝিলপাড় খালে জেনারেটর বসিয়ে সেখান থেকে পানির পাইপ টেনে নিয়ে যাওয়া হয় আগুনের উৎপত্তিস্থলে।

কড়াইল বস্তি সরেজমিনে ঘুরে ও বস্তিবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আগুন লাগার সময় বস্তিতে মানুষ ছিল কম। বস্তির কর্মজীবী মানুষ ছিলেন সবাই বাইরে। আগুনের খবর পেয়ে অনেকেই ছুটে আসেন বস্তিতে। যে যেভাবে পেরেছেন ঘরের সম্বলটুকু বের করে এনেছেন। আবার কেউ কেউ ঘরেই যেতে পারেননি আগুনের তীব্রতার কারণে।

সিরাজ আলী প্রায় ১০ বছর ধরে বস্তিতে থাকেন। তিনি একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে নিরাপত্তাকর্মীর কাজ করেন। তার স্ত্রী একটি গার্মেন্টসে কাজ করেন। আর বড় ছেলেটা লেগুনা চালায় ছোট মেয়েটি স্কুলে পড়ে। আগুন লাগার সময় সিরাজের সাত বছর বয়সী মেয়ে ঘরে ছিল। মেয়েটি বাইরে বের হতে পারলেও সিরাজের ঘরে থাকা কোনো জিনিস বের করতে পারেননি।

বিলাপ করে কান্না করে সিরাজ বলেন, ‘একটা সংসারে কত কিছু থাকে সবকিছু পুইড়া শেষ হইয়া গেলো চোখের সামনে কিন্তু কিছুই বাইর করতে পারলাম না। আমি এখন কোথায় থাকবো, কি খাবো।’

কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘ও ভাই আমার সব পুইড়া শ্যাষ, কিচ্ছু নেই। সাত বছর ধরে এই বস্তিতে আছি। অনেক কষ্টে তিল তিল করে জিনিসপত্র কিনেছিলাম। ঘরে টিভি, ফ্রিজসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র কিনেছিলাম। মাসে মাসে কিস্তির টাকা পরিশোধ করতে হয়। এ আগুন আমার সব শ্যাষ করে দিল।’

আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করা ফায়ার ফাইটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বস্তির রাস্তা অনেক সরু এ কারণে প্রথমে গাড়ি ঢুকতে বেগ পেতে হয়। এরপর গাড়ি প্রবেশ করেল ছিল স্বল্পতা। বিকল্প হিসেবে খালের পানি উত্তোলন করে আগুনে ব্যবহার করা হচ্ছে।

ফায়ার সার্ভিসের ডিউটি অফিসার রাশেদ বিন খালিদ বলেন, এখন পর্যন্ত আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ১৯টি ইউনিট। যানজটের কারণে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি পৌঁছাতে দেরি হয়েছে। এছাড়া ঘটনাস্থলে পানির স্বল্পতা রয়েছে।

টিটি/বিএ

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow