এনসিপির সঙ্গে জোটের বিষয়ে যা বললেন সালাহউদ্দিন

2 hours ago 3

বিএনপির স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, এনসিপির সঙ্গে রাজনৈতিক আলোচনা হচ্ছে। তবে বিএনপি আর এনসিপি জোটভুক্ত হবে কি না, সেটা দেখতে অপেক্ষা করতে হবে।

তিনি বলেন, ‘এনসিপির সঙ্গে জোটভুক্ত হওয়ার বিষয়ে আনুষ্ঠানিক আলোচনা হয়নি।’

শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) বিকেলে গুলশানের নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ তথ্য জানান।

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, জোটভুক্ত হলে দলগুলো অন্য রাজনৈতিক দলের প্রতীকে নির্বাচন করতে পারতেন। এটি পরিবর্তনে সম্মতি ছিল অধিকাংশ দলের। আমরা আশ্বস্ত ছিলাম। কিন্তু যেভাবে আরপিও পাস হলো, তাতে আকারে ছোট দলগুলো জোটবদ্ধ হতে উৎসাহিত হবে না।

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে চলতি অক্টোবরেই ২০০ আসনে একক প্রার্থীকে বিএনপি গ্রিন সিগন্যাল দেবে বলে জানান তিনি।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, প্রত্যেক আসনে একাধিক যোগ্য প্রার্থী রয়েছেন। তবে শরিকদের সঙ্গেও আলোচনা করে চূড়ান্ত মনোনয়ন নির্ধারণ করতে হয়। যারা মনোনয়ন পাবেন না, তাদের অন্যভাবে মূল্যায়নের সুযোগ থাকে।

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের শরিক এবং গণতন্ত্রের পক্ষে থাকা অন্য শক্তিগুলোকে সঙ্গে নিয়ে ৩১ দফা বাস্তবায়নে কাজ করবে বিএনপি। জোট গঠন ও সরকার গঠনের ক্ষেত্রেও শরিকদের যথাযথ গুরুত্ব দেওয়া হবে। তাদের প্রয়োজনীয় সংখ্যক আসন ছাড় দেওয়ার পরিকল্পনাও রয়েছে।

দলীয় নেতৃত্ব প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘তারেক রহমান দিন-রাত নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন, পরামর্শ নিচ্ছেন। এটি নেতৃত্বের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। মনোনয়ন প্রক্রিয়াও সেই আলোচনার ওপর ভিত্তি করেই এগোচ্ছে।’

এদিকে, আসন্ন ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে প্রচারে নতুন মাত্রা যোগ করতে যাচ্ছে বিএনপি। দলটি এবার মাঠের পাশাপাশি ডিজিটাল দুনিয়াতেও সমানভাবে সক্রিয় হতে চায়। সে লক্ষ্যেই গঠন করা হচ্ছে নতুন একটি অনলাইন ও তৃণমূলভিত্তিক প্ল্যাটফর্ম— ‘বাংলাদেশ গ্রাসরুটস নেটওয়ার্ক’ (বিজিএন)।

এই প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে বিএনপি তাদের তৃণমূলের শক্তিকে সুসংগঠিত করবে এবং অনলাইন প্রচারকে আরও জোরদার করবে। একই সঙ্গে অপপ্রচার মোকাবিলায় কার্যকর প্রতিরোধ গড়ে তোলাই এর অন্যতম উদ্দেশ্য। বিজিএন গঠনের প্রস্তাব এরই মধ্যে বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনার পর অনুমোদিত হয়েছে। দলটির পরিকল্পনা অনুযায়ী, খুব শিগগির সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এই প্ল্যাটফর্মের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া হবে।

বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ড. জিয়াউদ্দিন হায়দার ১৫ সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতৃত্ব দেবেন। প্রত্যেক কেন্দ্রীয় নেতা ২০টি আসনের সমন্বয় করবেন। বিজিএনের অধীনে দেশের ৩০০টি সংসদীয় আসনে দুজন করে মোট ৬০০ স্নাতক পাস অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট নিয়োগ দেওয়া হবে। এই অ্যাক্টিভিস্টরা সরাসরি তৃণমূল পর্যায়ে কাজ করবেন এবং নিয়মিত কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে যুক্ত থাকবেন। তাদের প্রতি মাসে নির্দিষ্ট হারে সম্মানী দেওয়া হবে। বিজিএন স্থায়ী কমিটিতে নিয়মিত রিপোর্ট জমা দেবে, যা দলের নীতিনির্ধারণী আলোচনায় ব্যবহৃত হবে। এরই মধ্যে সম্ভাব্য অ্যাক্টিভিস্টদের সংক্ষিপ্ত আত্মজীবনী জমা পড়েছে এবং সেখান থেকে যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে চূড়ান্ত তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত ৮ অক্টোবর বিএনপির বিভাগীয় সাংগঠনিক ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদকদের সঙ্গে সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর বৈঠকে বিজিএনের কাঠামো ও কার্যক্রম নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। দলটির ধারণা, এই নতুন উদ্যোগ শুধু তৃণমূল স্তরে সাংগঠনিক সক্ষমতা বাড়াবে না, একই সঙ্গে অনলাইন স্পেসেও ‘বট বাহিনী’র প্রভাব মোকাবিলায় নতুন সম্ভাবনা তৈরি করবে। বিএনপির লক্ষ্য হলো— নির্বাচনী প্রচারে অনেক আগেই দলের বার্তা দেশের প্রতিটি প্রান্তে এবং অনলাইন মাধ্যমে সক্রিয়ভাবে পৌঁছে দেওয়া।

বিএনপির তথ্য অনুযায়ী, বিজিএনের কেন্দ্রীয় কমিটিতে প্রাথমিকভাবে ১৫ নেতা থাকবেন, প্রয়োজনে এ সংখ্যা বাড়ানো হবে। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বই সংগঠনের সব কার্যক্রম তদারকি করবেন। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো মাঠ পর্যায়ের কাঠামো— দেশের প্রতিটি সংসদীয় আসনে দুজন করে অ্যাক্টিভিস্ট নিয়োগ দেওয়া হবে। তারা হবেন তৃণমূল পর্যায়ে বিজিএনের মূল চালিকাশক্তি।

Read Entire Article