‘এবছর ৫০ টাকার বেশি দরে আলু কিনতে হবে’

1 month ago 21

উৎপাদন কম হওয়ায় এ বছর ৫০ টাকার বেশি দাম দিয়ে ভোক্তাদের আলু কিনে খেতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সোস্তফা আজাদ চৌধুরী।

তিনি বলেন, ‘গত বছর কোল্ড স্টোরেজে যেসব আলু সংরক্ষণ করা হয়েছিল সেগুলো ৮ থেকে ১২ টাকা কেজি দরের আলু ছিল। এবার যেগুলো রাখা হচ্ছে সেগুলো ২৫ থেকে ৩০ টাকায় কেনা। কৃষকরা এবার এই দামে আলু বিক্রি করেছেন। কয়েকগুণ বেশি দাম দিয়ে কেনা এসব আলু যখন বাজারে আসবে তখন এর দামও বেশি হবে।’

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) পল্টনে বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশন ও সেভার ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড আয়োজিত মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।

অনুষ্ঠানে সমন্বিত কুল চেইন নীতি নির্ধারণ ও কোল্ড স্টোরেজ বাবসায়ীদের জন্য স্বল্প সুদে ঋণের ব্যবস্থা করে এ খাতের উন্নয়নের আহ্বান জানান বক্তারা।

দেশে বর্তমানে ৪ শতাধিক কোল্ড স্টোরেজ রয়েছে। যেগুলোতে আলু সংরক্ষণ করা হয়। কিন্তু দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে উদ্যোক্তারা চান পেঁয়াজ, টমেটো, গাজর, মাংস, খেজুর সহ বিভিন্ন পণ্য সংরক্ষণের জন্য কোল্ড স্টোরেজ তৈরিতে নতুন বিনিয়োগ করতে। এ জন্য সরকারের কাছে কম সুদে মূলধন চান এ খাতের উদ্যোক্তারা।

মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সোস্তফা আজাদ চৌধুরী বলেন, ‘বর্তমানে ব্যাংক ঋণের সুদ ১৩ থেকে ১৪ শতাংশ। উচ্চ সুদে ঋণ নিয়ে আমরা প্রজেক্ট করলে সেটা লাভজনক করা মুশকিল হয়ে পড়বে। এ কারণে সরকার যদি আমাদের বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে বা বিদেশ থেকে ফান্ড নিয়ে ৩ থেকে ৪ শতাংশ সুদে ঋণ দেয় তাহলে আমরা এ খাতে বিনিয়োগ করতে পারবো।’

‘এবছর ৫০ টাকার বেশি দরে আলু কিনতে হবে’

তিনি বলেন, ‘দেশের কোল্ড স্টোরেজগুলোতে ৪টি করে চেম্বার রয়েছে। যেগুলো দুর্বলভাবে ব্যবসা করছে, সেগুলোর একটি বা দুটি চেম্বারকে বিশেষভাবে পেঁয়াজ বা অন্য কৃষিপণ্য সংরক্ষণের জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে। এজন্য দরকার বিনিয়োগ, যে সহায়তাটুকু সরকারের কাছ থেকে আমরা চাই।’

এদিকে, সাপ্লাই চেইনে কোল্ড স্টোরেজ কী ভূমিকা রাখতে পারে তা নিয়ে বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশন ও সেভার ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড তিন দিনব্যাপী প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে। আগামী ১৬ থেকে ১৮ মে ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) এ প্রদর্শনী হবে। এতে কোল্ড স্টোরেজের নানান প্রযুক্তি প্রদর্শন করা হবে।

অনুষ্ঠানে রেফ্রিজারেশন, এয়ার কন্ডিশনিং এবং কোল্ড চেইন পলিসি ইমপ্লিমেন্টেশন সংক্রান্ত এফবিসিসিআইয়ের স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান বলেন, ‘পুরো একটি কোল্ড স্টোরেজ আমদানি করতে আমাদের এক শতাংশ শুল্ক দিতে হয়। কিন্তু যখন এর একটা পার্টস আমদানি করতে হয় তখন আমাদের এই শুল্ক ১৩০ শতাংশ হয়ে যায়। বিনিয়োগের জন্য এটা একটা বড় সংকট। এটা ৩ থেকে ৫ শতাংশের মধ্যে হলে ভালো হয়।’

বক্তারা বলেন, ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করলেই সংকট হয়, অথচ আমাদের পেঁয়াজ নষ্ট হয়। এ জন্য স্পেশালাইজড কোল্ড স্টোরেজ দরকার। তরমুজ, আম, টমেটে, গাজরের জন্য কোল্ড স্টোরেজ দরকার। কারণ হাজার হাজার টন এসব খাদ্যপণ্য উৎপাদন করলেও তা একটা সময় মাঠেই নষ্ট হয়। এখানে খাদ্য নিরাপত্তার জন্য স্টোরেজ গুরুত্বপূর্ণ।

কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ইসতিয়াক আহমেদ বলেন, ‘কোল্ড স্টোরেজ শুধু খাদ্য নিরাপত্তা নয়, নিরাপদ খাদ্যের জন্যও দরকার। কারণ অনেক খাবারে প্রিজারভেটিভ দিয়ে সংরক্ষণ করতে হয়, যেটা কোল্ড স্টোরেজে রাখতে হলে দরকার হবে না। এখানেও আমাদের গুরুত্ব দিতে হবে।’

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সেভার ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ফয়জুল আলম চৌধুরী।

এনএইচ/কেএসআর/জিকেএস

Read Entire Article