ইউক্রেনে হামলার পর থেকেই রুশ হুমকির মুখে আছে ইউরোপ। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এই অঞ্চলে যুদ্ধের দামামা আতঙ্কিত করে রেখেছে গোটা অঞ্চলকে। আশঙ্কা করা হচ্ছে অদূর ভবিষ্যতে সামরিক জোট ন্যাটোর সঙ্গে সংঘাতে লিপ্ত হতে পারে মস্কো। এমন পরিস্থিতির মধ্যেই নতুন করে জার্মানিতে হামলা চালাতে পারে রাশিয়া এ আশঙ্কা করছেন দেশটির সরকার। ঠিক কবে নাগাদ এ হামলা করা হবে তা নিয়েও সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে জার্মান সরকারের পক্ষ থেকে।
সংবাদমাধ্যম পলিটিকোর এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সম্প্রতি জার্মানির প্রতিরক্ষামন্ত্রী বোরিস পিস্টোরিওস জানান, নির্বাচনকে সামনে রেখে জার্মানিতে হাইব্রিড হামলা চালাতে পারে রাশিয়া। এ জন্য দেশের প্রশাসনকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন জার্মান এই মন্ত্রী। পিস্টোরিওস জানান, রাশিয়ার সম্ভাব্য হাইব্রিড আক্রমণের জবাব দিতে বার্লিনকে অবশ্যই প্রস্তুত থাকতে হবে।
হাইব্রিড হামলা মূলত এক ধরনের সাইবার আক্রমণ। বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে এই হামলার মাধ্যমে একটি দেশের আইটি, নেটওয়ার্ক এবং বিভিন্ন ডিভাইসে প্রবেশের চেষ্টা করা হয়।
রোববার জার্মানির সংবাদমাধ্যম ফুংকে মেডিয়েন গ্রুপকে জার্মান প্রতিরক্ষামন্ত্রী জানান, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের হাইব্রিড হামলার পরবর্তী লক্ষ্য হলো জার্মানি। এ সময় জার্মানিকে কীভাবে খোঁচা দিতে হয় তা পুতিন ভালো করেই জানেন বলেও মন্তব্য করেন পিস্টোরিওস। জার্মান প্রতিরক্ষামন্ত্রী দেশটির অবকাঠামো এবং জ্বালানি সরবরাহ ব্যবস্থার সাম্প্রতিক ঘটনাগুলোর কথা উল্লেখ করেন। এরমধ্যে রয়েছে নর্থ সি এবং বাল্টিক সি’র ঘটনা- যার জন্য রাশিয়াকে দায়ী করা হয়।
পিস্টোরিওসের মতে, জার্মান সমাজকে বিভক্ত করতে ক্রেমলিনপন্থি গোষ্ঠীগুলো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভুয়া তথ্য ছড়িয়ে দিতে পারে। যার ফলে ডানপন্থি এবং জনপ্রিয়তা পাওয়া দলগুলো লাভবান হবে।
তিনি জানান, এরইমধ্যে সামাজিক মাধ্যমে ক্যাম্পেইন চলছে, নির্বাচনী প্রচারণায় হস্তক্ষেপ এবং বিভিন্ন মতবাদকে অর্থায়ন করা হচ্ছে, যারা বলছে, জার্মানি নিজেদের সুরক্ষার বিষয়ে উদ্বিগ্ন না হয়ে রাশিয়ার সাথে যুদ্ধের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। পুতিনের এই কৌশল ঠেকাতে সামর্থ্য অনুযায়ী সবকিছুই করতে হবে বলে জানান পিস্টোরিওস।
নিকট ভবিষ্যতে মস্কোর পক্ষ থেকে কোনো সামরিক হুমকি না থাকলেও পিস্টোরিওস জানান, রাশিয়াকে ২০৩০ সালের মধ্যে নতুন অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত করতে পারেন পুতিন। এর ফলে দেশটি ন্যাটোর সদস্যদের ওপর হামলা চালানোর সক্ষমতা লাভ করবে। আগামী কয়েক বছরে ন্যাটো ভূখণ্ডের বিভিন্ন জায়গায় দিকে এগিয়ে এসে সামরিক জোটটি কতেটা জোটবদ্ধ তা-ও পরখ করার চেষ্টা করতে পারেন পুতিন। জার্মান প্রতিরক্ষামন্ত্রীর মতে প্রতিমাসে রাশিয়া যেই পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদ উৎপাদন করছে তা ইউরোপীয় ইউনিয়নের সব দেশ এক বছরে উৎপাদন করে থাকে।