এবার নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে চটেছেন ইসরায়েলিরা। তারা ইসরায়েলের পার্লামেন্ট নেসেটে প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর কার্যালয় অবরোধ করেছেন।
বুধবার (২৭ নভেম্বর) ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরায়েলের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজায় এক বছরেরও বেশি সময় ধরে আটক রয়েছেন ইসরায়েলি জিম্মিরা। বুধবার তাদের স্বজনেরা প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর নেসেট অফিসের প্রবেশথ অবরোধ করেছে। জিম্মিদের ফেরাতে গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তির দাবিতে তারা এ অবরোধ করেন।
লেবাননের প্রতিরোধ যোদ্ধা হিজবুল্লাহর সঙ্গে ইসরায়েলের যুদ্ধবিরতি চুক্তির পর এ বিক্ষোভ পালিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, হিজবুল্লাহ সীমান্তের কাছে তার উপস্থিতি বাড়ালে ইসরায়েল পুনরায় তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবে।
গত ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামীদের সংগঠন হামাসের হামলায় বন্দি হওয়া জিম্মিদের একজন এলি আলবাগ বলেন, নেতানিয়াহু লেবাননে যেভাবে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছেন ঠিক সেভাবে গাজাতেও চুক্তি করতে হবে।
তিনি বলেন, আপনি যদি চান তাহলে আপনি এটি করতে পারেন। আমরা আপনার অনুগ্রহ আশা করছি।
টাইমস অব ইসরায়েল জানিয়েছে, নেসেট নিরাপত্তাকর্মীরা পরে তাদের সরিয়ে দেন। এরপর তারা নিচে নেমে সিঁড়ি অবরোধ করেন। জায়গাটিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল সভা ও সংবাদ সম্মেলন করে থাকে।
জিম্মিদের স্বজনদের একজন শারাবি বলেন, আমরা এমন সময় যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছেছি যখন উত্তরের বাসিন্দা এবং ইসরায়েলি নাগরিকদের জন্য এখনও স্পষ্ট বিপদ রয়েছে। ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (অইডিএফ) এখনও হিজবুল্লাহর সক্ষমতা নিঃশেষ করতে পারেনি।
তিনি আরও বলেন, এখন আমাদের গাজা থেকে ফিরে আসা এবং প্রয়োজনমতো গাজায় আবারও ফিরে যাওয়া সম্ভব। তবে সবার আগে আমাদের জিম্মিদের দেশে ফেরাতে হবে।
উল্লেখ্য, ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় এক বছর ধরে হামলা চালিয়ে আসছে ইসরায়েল। দেশটির অব্যাহত এ হামলায় সৃষ্ট ধ্বংসস্তূপ পরিষ্কার করতে অন্তত ১৫ বছর সময় লাগবে। এ জন্য প্রতিদিন ১০০টি লরি ব্যবহার করতে হবে।
জাতিসংঘের হিসাবমতে, গাজায় ভবন ধসে এ পর্যন্ত ৪২ মিলিয়ন টনেরও বেশি ধ্বংসস্তূপ জমা হয়েছে। এ ধ্বংসস্তূপগুলো যদি একসঙ্গে এক জায়গায় রাখা যায়, তাহলে তা মিসরের ১১টি গ্রেট পিরামিডের সমান হবে। এ ধ্বংসস্তূপ সরাতে ব্যয় হবে ৫০০ থেকে ৬০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৭ হাজার কোটি টাকার বেশি)।
ইউএন এনভায়রনমেন্ট প্রোগ্রামের হিসাব অনুসারে, গাজায় ১ লাখ ৩৭ হাজার ২৯৭টি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যা অঞ্চলটির মোট ভবনের অর্ধেকের বেশি। ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের মধ্যে এক-চতুর্থাংশ পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। এ ছাড়া এক-দশমাংশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং এক-তৃতীয়াংশ বেশ খানিকটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব ভবনের ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে ফেলার জন্য ২৫০ থেকে ৫০০ হেক্টর জমির প্রয়োজন পড়বে