এবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশের ডাক দিয়েছেন তাবলিগ জামাতের একাংশ দিল্লির মাওলানা সাদ কান্ধলভীর অনুসারীরা। আগামী ৭ ডিসেম্বর মহাসমাবেশ করবেন তারা। এর আগে তাবলিগ জামাতের অন্য অংশ জুবায়েরপন্থিরা মহাসমাবেশের ডাক দিয়েছিল।
শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) সাদপন্থি কাকরাইল মারকাজ মসজিদের ইমাম মুফতি মুহাম্মদ আযীমুদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ওইদিন সকালে কাকরাইলের মারকাজ মসজিদে প্রবেশ করে সেখানে অবস্থান নেন সাদপন্থিরা। এতে মাওলানা সাদ ও জুবায়েরপন্থিদের মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা দেখা দেয়। এ কারণে আগে থেকে ওই এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করে প্রশাসন।
সাদপন্থিদের ব্যাপক সমাগমে কাকরাইল মসজিদের আশপাশের রাস্তায় যানচলাচল সকাল থেকেই বন্ধ হয়ে যায়। এ ছাড়া নিরাপত্তার স্বার্থে রমনা ও প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনে যাওয়ার পথটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। বেশ কিছুদিন ধরে কাকরাইল মসজিদ ও টঙ্গীর ইজতেমা ময়দানের দখলকে কেন্দ্র করে তাবলিগ জামাতের দুপক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব তীব্র হচ্ছে। দুপক্ষই পালটাপালটি বক্তব্য দিচ্ছে।
জানা যায়, কাকরাইল মসজিদে নির্ধারিত অবস্থানের সময় শেষ হওয়ায় মাওলানা জুবায়েরের অনুসারীরা সকালে মসজিদ থেকে সরে যান। শুক্রবার সকাল ৮টার পরে প্রবেশ করেন সাদপন্থিরা। নিয়ম হলো ১৪ দিন থাকবে সাদপন্থিরা ২৮ দিন থাকবে জুবায়েরপন্থিরা।
রমনা জোনের ডিসি মো. মাসুদ আলম বলেন, এখন দুই সপ্তাহ অবস্থান করবেন সাদপন্থিরা। যাতে করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কোনো অবনতি না ঘটে সেজন্য অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। আজকে শান্তিপূর্ণভাবে বের হয়ে গিয়েছেন জুবায়েরপন্থিরা, তারপর সুশৃঙ্খলভাবে প্রবেশ করেছেন সাদপন্থিরা।
এর আগে শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) সকাল থেকেই কাকরাইল মারকাজ মসজিদে আসতে শুরু করেন সাদপন্থিরা। এতে তাবলিগ জামাতের মাওলানা সাদ কান্ধলভী ও জুবায়েরপন্থিদের মধ্যে ফের উত্তেজনা বিরাজ করছে। এরইমধ্যে সাদপন্থিরা কাকরাইলের মারকাজ মসজিদের সামনে অবস্থান নিয়েছেন।
তাবলিগ-জামাতের বিবদমান দ্বন্দ্বের পর থেকে বিগত ৭ বছর ধরে প্রশাসনের সিদ্ধান্তে কাকরাইল মসজিদে অবস্থানের ক্ষেত্রে জুবায়েরপন্থিরা ৪ সপ্তাহ ও সাদপন্থিরা দুই সপ্তাহ করে পর্যায়ক্রমে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। যদিও বিগত সরকারের এমন বৈষম্যপূর্ণ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করে আসছিল সাদপন্থিরা। এখন পুরো কাকরাইল মসজিদ অবৈধ দখল করে ১৫ নভেম্বর থেকে অবস্থান নিতে চায় জুবায়েরপন্থিরা। বুধবার (১৩ নভেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান সাদ অনুসারীরা।
তারা আরও জানান, অপরদিকে কাকরাইল মসজিদের একটি অংশে এমনিতেই জুবায়েরপন্থিরা সারা বছর মাদ্রাসার নামে আলাদা অবস্থান নিয়ে থাকেন। কিন্তু হেফাজতপন্থি আলেমদের সাম্প্রতিক ঘোষণার প্রেক্ষাপটে জুবায়েরপন্থিরা সরকারি সিদ্ধান্ত অমান্য করে কাকরাইল মসজিদ স্থায়ীভাবে দখল নেওয়ার ঘোষণা দেওয়াকে রক্তক্ষয়ী সংঘাতের দিকে ঠেলে দেওয়ার আশঙ্কা করছেন তারা।