সারাদেশের অবৈধ ইটভাটা অপসারণ করে আগামী ১৭ মার্চের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। অবৈধ ইটভাটা বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়ার প্রেক্ষাপটে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও খুলনার বিভাগীয় কমিশনার, নীলফামারী, লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক এবং সাভার ও ধামরাই উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা আদালতে হাজির হয়ে লিখিত ব্যাখ্যার পর সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) হাইকোর্টের বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
একই সঙ্গে যেসব বিভাগীয় কমিশনাররা এখনো প্রতিবেদন দেননি তাদের আগামী ১৭ মার্চ আদালতে হাজির হয়ে অবৈধ ইটভাটা বন্ধের বিষয়ে পরিপূর্ণ প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। এছাড়া আজ (রোববার) যারা লিখিত ব্যাখ্যা দিয়েছেন তাদের ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি দিয়ে ১৭ মার্চ পরিপূর্ণ প্রতিবেদন দিতে বলা হয়।
শুনানিতে হাইকোর্ট আজ বলেন, দেশের পরিবেশ আমাদের রক্ষা করতে হবে। আমাদের স্বাভাবিক জীবন দিনদিন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এভাবে পরিবেশ দূষণ হলে আমরা কেউ বাঁচবো না।
আদালতে আজ রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি) সিনিয়র আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। ইট ভাটা মালিক সমিতির পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ফাহিমা নাসরিন মুন্নি। আর রাষ্ট্র পক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনিক আর হক।
এর আগে অবৈধ ইটভাটার কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে ২০২২ সালে পরিবেশবাদী ও মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) পক্ষে হাইকোর্টে রিট আবেদন করা হয়। জনস্বার্থে করা এই রিটে প্রাথমিক শুনানির পর হাইকোর্ট রুল জারির পাশাপাশি অবৈধ ইটভাটা বন্ধের নির্দেশ দেন। কিন্তু বিভাগীয় কমিশনাররা কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়ায় রিট আবেদনকারী পক্ষের সম্পূরক আবেদনে গত বছর ২৮ নভেম্বর ফের একই নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
দেশের আট বিভাগের কোথাও যাতে অবৈধ ইটভাটার কার্যক্রম না চলে সে বিষয়ে সাত দিনের মধ্যে পদক্ষেপ নিতে বিভাগীয় কমিশনারদের নির্দেশ দেওয়া হয়। আদালতের এই আদেশ বাস্তবায়ন করে গত ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়। এই আদেশের পর বিভাগীয় কমিশনাররা আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন।
প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা যায়, বন্ধ করা অবৈধ ইটভাটার যে তালিকা প্রতিবেদনে দেওয়া হয়েছে তাতে আগে বন্ধ করা অবৈধ ইটভাটার নামও রয়েছে। আর নতুন করে যেগুলো বন্ধের কথা বলা হয়েছে, সেগুলোর কার্যক্রম চলছে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের ব্যাখ্যা জানতে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশনা চেয়ে এইচআরপিবির পক্ষ থেকে সম্পূরক আবেদন করা হয়।
সে আবেদনের শুনানির পর গত ২৯ জানুয়ারি আদালত তিন বিভাগীয় কমিশনার, তিন জেলা প্রশাসক ও দুই ইউএনওকে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেন। সে অনুযায়ী তারা আজ হাইকোর্টে হাজির হয়ে লিখিত ব্যাখ্যা দেন।
এফএইচ/এমআইএইচএস/এমএস