দৈনিক কালের কণ্ঠের সম্প্রতি প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপিত হয়েছে। এতে যোগ দিয়েছিলেন নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। ছিলেন সাংবাদিক ও বুদ্ধিজীবী সমাজও। তবে অনেকটাই অপ্রত্যাশিতভাবে দেশের সাংবাদিকতার দিকপাল দৈনিক যায় যায় দিন পত্রিকার সম্পাদক শফিক রেহমান সেই অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে যোগ দেন। এ ছাড়া বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহানকে নিজ হাতে তুলে কেক খাইয়ে দেন কথিতযশা এ সাংবাদিক।
এমনকি বিগত সরকারের নেপথ্য কারিগর বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যানের ভূয়সী প্রশংসা করতেও দেখা যায় তাকে। আকবর সোহানকে অমায়িক ও অসাধারণ মানুষ হিসেবে বর্ণনা করেন শফিক রেহমান।
যা নিয়ে নেট দুনিয়ায় চলছে ব্যাপক সমালোচনা। অন্যায়ের বিরুদ্ধে সর্বদা অবিচল থাকা সম্পাদক শফিক রেহমানের এমন আচরণে ক্ষুব্ধ অনেকেই। ফ্যাসিবাদী শাসনামলের অন্যতম পৃষ্ঠপোষক বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যানের সঙ্গে হৃদ্যতাপূর্ণ এমন ছবি হতবাক করেছে শফিক রেহমানের ভক্ত ও অনুসারীদের।
এ বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি পোস্ট করেছেন সাবেক জাতিসংঘ ও হোয়াইট হাউস করেসপন্ডেন্ট এবং দায়িত্বপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত মুশফিকুল ফজল আনসারী।
শুরুতেই নিজের অগ্রজ সাংবাদিক শফিক রেহমানকে সম্বোধন করে নেট দুনিয়ায় ভাইরাল ছবিটি সম্পর্কে বলেন, ‘এমন একটি ছবি শুধু ভাবায় না, কাঁদায়ও।’
এরপর তিনি লিখেছেন, ‘শফিক ভাই, আপনার যশ, খ্যাতি, আর বিত্ত-বৈভবের কোনো কমতি নেই। আনন্দ-বেদনার কতো গল্পই না আপনি অকপটে আমাদের সঙ্গে ভাগ করেছেন।’
‘আমি নিশ্চিত নই, কোন্ মতলববাজরা আপনার কাঁধে চড়ে এই নব্বই উর্ধ্ব বয়সে এমন লোভাতুর পথে আপনাকে ঠেলে দিল? হাজারো তাজা প্রাণকে বুলেটে ঝাঁঝরা করে দেওয়ার প্ররোচনাকারীর নিকট এই সমর্পণ-বড্ড কষ্টের, শফিক ভাই!’ যোগ করেন বাংলাদেশের গণতন্ত্র মানবাধিকার ও সুশাসনের পক্ষে দীর্ঘদিন কাজ করে যাওয়া সাবেক এই সাংবাদিক।
রাষ্ট্রদূত মুশফিকুল ফজল আনসারীর এ পোস্টে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষক দিলারা চৌধুরী লিখেছেন, ‘দুর্ভাগ্যবশত বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ শফিক রেহমানকে পছন্দ করে। লোভী, স্বার্থপর, ভন্ড।’
মো. আব্দুল কায়েস নামে একজন লিখেছেন, ‘এই ছবি দেখে কষ্ট পেয়েছি।’
মাসুদুর রহমান নামে একজন লিখেছেন, ‘কতিপয় ব্যক্তি যারা বিএনপির নাম ব্যবহার করে এখনো খালেদা জিয়া, তারেক রহমান তথা বিএনপির বিরুদ্ধে আড়াল থেকে ষড়যন্ত্র করেছেন এসব কর্ম তাদেরই। এদের চিহ্নিতকরণ সময়ের দাবি।’
শওকত আলী চৌধুরী নামে একজন লিখেছেন, ‘কার কী হিডেন এজেন্ডা, ভেতরের চেহারা কি, কার এজেন্ট, কখনকার মুখোশ খুলে যায়, কাউকেই আস্থায় নিতে কষ্ট হচ্ছে। এই লোকটি আমার শ্বশুর বন্ধু বলে বেশ। তাই একটু সমীহ করতাম।’
হুমায়ুন কবির বুলবুল লিখেছেন, ‘যায় যায় দিন পত্রিকার বর্তমান বিল্ডিংটা ম্যাডাম খালেদা জিয়ার সুপারিশে কারা দিয়েছিল সেটা জানলে এ ছবিটা দেখে হয়তো বিস্মিত হবেন না। তবে কালের পরিক্রমায় অনেক কিছু বদলে গেছে। সুতরাং শফিক ভাইয়ের একটু বাছ বিচার করে সব জায়গায় যাওয়া উচিত।’