এমন পৈশাচিকতা আগে কখনও দেখেনি আগুয়াবাসী

1 week ago 11

হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে সিএনজি অটোরকিশার স্ট্যান্ড দখল নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষে নিহতরা সবাই একে অপরের স্বজন। তাদের মধ্যে আপন দুই ভাইও রয়েছেন। এ ঘটনায় গ্রামটিতে এখনও থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

নিহতরা হলেন, আপন দুই ভাই লিলু মিয়া (৫০) ও আনু মিয়া (৫২)। অপরজন সিরাজ মিয়া (৫০) তাদের চাচাতো ভাই। আর আব্দুল কাদির (২৫) সম্পর্কে তাদের ভাতিজা।

ঘটনাটি অত্যন্ত অমানবিক জানিয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শেখ শামছুল হক বলেন, এমন পৈশাচিকতা আগে কখনও দেখেনি আগুয়াবাসী। এ পৈশাচিকতা কারও কাম্য নয়। সামান্য ঘটনা থেকে চারটি প্রাণ ঝরে গেলো।

এমন পৈশাচিকতা আগে কখনও দেখেনি আগুয়াবাসী

এলাকাবাসী জানায়, আগুয়া গ্রামের বাসিন্দা সিএনজি অটোরিকশার স্ট্যান্ড ম্যানেজার বদির মিয়া এবং অটোরিকশার চালক আব্দুল কাদিরের মধ্যে স্ট্যান্ডে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিরোধ চলছিল। বৃহস্পতিবার সিএনজি স্ট্যান্ড দখলকে কেন্দ্রে করে তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। এসময় ম্যানেজার বদির মিয়া অটোরিকশা চালক আব্দুল কাদিরকে মারপিট করেন। বিষয়টি কাদিরের গোষ্ঠীর লোক জানতে পারলে তারা জড়ো হতে থাকে। অপরদিকে খবর পেয়ে বদির মিয়ার গোষ্ঠীর লোকজনও দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে জড়ো হয়। একপর্যায়ে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উভয়পক্ষের লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। মুহূর্তের মধ্যে পুরো গ্রামে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে।

এতে পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরণিত হয়। সংঘর্ষে যোগ দেয় মহিলা, শিশু ও কিশোররাও। সংঘর্ষে আব্দুল কাদির ও তার সম্পর্কে চাচা সিরাজ মিয়া ঘটনাস্থলেই মারা যান। তাদের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পরলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করে। হাঙ্গামাকারীরা বাড়িঘরে ভাংচুর ও লুটপাট চালায়। প্রায় একঘণ্টা স্থায়ী সংঘর্ষে আহত হন অন্তত ৫০ জন। পরে গুরুতর অবস্থায় সদর আধুনিক হাসপাতালে নেওয়ার পর মারা যান লিলু মিয়া। এছাড়া সিলেট নেওয়ার পথে মারা যান নিহত লিলু মিয়ার ভাই আনু মিয়া। খবর পেয়ে বানিয়াচং থানা ও হবিগঞ্জ থেকে বিপুল সংখ্যক পুলিশ পুরো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

এমন পৈশাচিকতা আগে কখনও দেখেনি আগুয়াবাসী

আরও পড়ুন

বানিয়াচং সার্কেলের অতরিক্তি পুলিশ সুপার পলাশ রঞ্জন দে জানান, আগুয়া গ্রামটি সম্পূর্ণ হাওরাঞ্চল অধ্যুষিত। যাতায়াত ব্যবস্থা খুবই নাজুক। পুলিশ পরিস্থিতি শান্ত করেছে। তবে এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। হাঙ্গামাকারীদের ধরতে অভিযান এবং ঘটনায় সংশ্লিষ্টতা নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়নে রয়েছে।

বানিয়াচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন বলেন, ঘটনাটি সত্যিই খুবই হৃদয়বিদারক ও পৈশাচিক। সামান্য ঘটনা থেকে চারটি প্রাণ ঝরে যেতে পারে তা সত্যিই অকল্পনীয়। গ্রামের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ সতর্ক রয়েছে।

সৈয়দ এখলাছুর রহমান খোকন/এএইচ/জিকেএস

Read Entire Article