এস আলমের মালিকানাধীন বিদ্যুৎকেন্দ্রের সাগরে ড্রেজিং বন্ধে রিট

4 hours ago 6

চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন এসএস পাওয়ার প্ল্যান্ট কর্তৃপক্ষের সাগরে ড্রেজিং বন্ধ এবং পাথর ফেলে জেটি নির্মাণের (ব্রেকওয়াটার) কাজ সরানোর নির্দেশনা চেয়ে রিট করা হয়েছে।

পাশাপাশি রিটে জেটিঘাটে এস আলমের কয়লাবাহী লাইটার জাহাজ ভেড়ার কারণে জেলেদের জীবিকার ক্ষতিপূরণ দাবি করা হয়েছে। সেই সঙ্গে অর্থনৈতিক অঞ্চল ১ ও ২ বন্ধের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।

বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় ‘গন্ডামারা বরগুনা বহুমুখী সমবায় সমিতি’র সহকারী সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেন এ রিট করেন। এতে বিবাদী করা হয়েছে বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের সচিব, এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মাদ সাইফুল আলম, এসএস পাওয়ার প্ল্যান্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, বাঁশখালী উপজেলা সহকারী কমিশনারসহ (ভূমি) ১১ জনকে।

হাইকোর্টের বিচারপতি মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি বিশ্বজিৎ দেবনাথের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে রিটের ওপর শুনানি হবে বলে জানিয়েছেন রিটকারীর আইনজীবী মোহাম্মাদ ফারুক হোসেন।

আইনজীবী ফারুক বলেন, গন্ডামারা এলাকাটি দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় জেলেদের কর্মব্যস্ততার প্রাণকেন্দ্র। সেখানকার জেটিঘাট থেকে ৩ হাজারেরও বেশি জেলে নৌকা ও সাম্পান নিয়ে গভীর সাগরে মাছ আহরণে যান এবং এভাবেই জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। কিন্তু সম্প্রতি বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য কয়লাবাহী লাইটার জাহাজ ভেড়ানোকে কেন্দ্র করে জেটিঘাটে জেলেদের জীবিকা চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বসানো জাল জাহাজের ধাক্কায় ছিঁড়ে যাওয়া ও রাতের আঁধারে সাম্পানে ধাক্কা লেগে দুর্ঘটনা ঘটা নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমনকি নৌকা ডুবিয়ে দেওয়ার মতো গুরুতর অভিযোগও তুলেছেন স্থানীয় জেলেরা।

জেলেদের সূত্রে জানা গেছে, গত ১ সেপ্টেম্বর দুপুরে গন্ডামারার পশ্চিম বড়ঘোনা জেটিঘাট এলাকায় বিক্ষোভ করেন ক্ষতিগ্রস্তরা। সে সময় তারা জানান, জেটিঘাট থেকে মাছ ধরতে প্রতিদিন ২০-৩০ কিলোমিটার দূরে যেতে হয়। সাগর থেকে মাছ নিয়ে ফেরার সময় প্রকল্পের লোকজন মাছ দাবি করেন, না দিলে নৌকা ভিড়তে দেওয়া হয় না। এতে তাদের জীবিকা হুমকির মুখে পড়ছে। এ ছাড়া ইলিশ মৌসুমে চার মাসব্যাপী ব্যবসা-বাণিজ্যের মূল ভরসা এ ঘাট। কিন্তু নানা বাধার কারণে এখন এ অঞ্চলের অর্থনীতি মারাত্মক সংকটে পড়েছে।

জেলেদের অভিযোগ, বিদ্যুৎ প্রকল্পের কারণে তাদের ঐতিহ্যবাহী জীবিকা ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। তাই অবিলম্বে নৌকা ও সাম্পান নিরাপদে জেটিতে ভেড়ার নিশ্চয়তা দেওয়া এবং স্থানীয়দের জন্য এস আলম গ্রুপে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করার দাবি জানান তারা।

তবে এসএস পাওয়ার প্ল্যান্ট সূত্রে জানা গেছে, জেটিঘাটটি শুধু এ প্রকল্পের কাজের স্বার্থে নির্মিত হয়েছে। ঘাট এলাকাটি প্রকল্পের নিজস্ব জায়গা। জেলেরা ঘাটে নৌকা রাখায় এবং জাল বসানোর ফলে লাইটার জাহাজগুলো কয়লা নিয়ে জেটিতে ভিড়তে পারে না। এরই মধ্যে ড্রেজিংয়ের কাজ চলছে, প্রতিনিয়ত লাইটার জাহাজগুলো জেটিতে আসতে শুরু করেছে।

কর্মকর্তারা দাবি করেন, তাদের লাইটার জাহাজগুলোতে চুরি-ডাকাতি সংঘটিত হচ্ছে। সাম্পান বা জাল বসানোর কারণে প্রকল্প পরিচালনার কাজে ব্যাঘাত সৃষ্টি হচ্ছে। নিরাপত্তার স্বার্থে জেটি এলাকায় কোনোরকম জাল বসানো বা নৌযান ভেড়ানোর অনুমতি নেই। তা বন্ধে এলাকায় মাইকিং করা হচ্ছে।

এফএইচ/একিউএফ/এমএস

Read Entire Article