এ্যানি-স্বপনসহ রিমান্ডে আরও ৩৪, কারাগারে ১৭২ জন

1 month ago 20

কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে সহিংসতার ঘটনায় করা মামলায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানিসহ ৩৪ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। এছাড়া বিএনপি জামায়াতের ১৭২ জনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।

শনিবার ঢাকার মেট্রোপলিন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত এ আদেশ দেন।

এদিন বাংলাদেশ টেলিভিশন ভবনে হামলা-ভাঙচুরের মামলায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানিকে আদালতে উপস্থিত করে দশ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক মোহাম্মদ ইয়াসিন শিকদার। অন্যদিকে রিমান্ড বাতিল ও জামিন চেয়ে আবেদন করে আসামিপক্ষের আইনজীবী। শুনানি শেষে জামিন নামঞ্জুর করে এ্যানিকে সাতদিনের রিমান্ডে নেওয়ার আদেশ দেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শান্তা আক্তার।

এছাড়াও মিরপুর মেট্রোরেল স্টেশনে ভাঙচুর মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জহির উদ্দিন স্বপনকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। এছাড়াও এদিন এই মামলায় রিমান্ডে যাওয়া আসামিদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হলেন, জামায়াতে ইসলামীর কর্মপরিষদ সদস্য সামিউল হক ফারুকী ও বিএনপির কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার নাসির উদ্দিন আহমেদ আসীম। মিরপুরে মেট্রোরেল স্টেশনে ভাঙচুর মামলায় ফারুকীর পাঁচ দিনের ও অসীমের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন ঢাকার ম্যাজিস্ট্রের আদালত।

গত ২২ জুলাই বনানীর সেতু ভবনে হামলার মামলায় স্বপন, অসীম ও ফারুকীর পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। ওই রিমান্ড শেষে শনিবার মেট্রোরেলে নাশকতা মামলায় গ্রেফতার দেখানোসহ ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক শিকদার মহিতুল আলম। অন্যদিকে রিমান্ড বাতিল ও জামিন চেয়ে আবেদন করেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে তাদের জামিন নামঞ্জুর করে এসব রিমান্ড মঞ্জুর করেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুর রহমানের আদালত।

এদিন রিমান্ডে যাওয়া বিএনপি-জামায়াতের মোট ৩৪ আসামিদের মধ্যে যাত্রাবাড়ী থানার ১২ জন, সাভার থানার চারজন, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার তিনজন, রামপুরা থানার তিনজন, শাহবাগ থানার দুইজন, রূপনগর থানার একজন, শেরেবাংলা নগর থানার দুইজন, মিরপুর থানার দুইজন, কদমতলী থানার দুইজন ও ধানমন্ডি থানার তিনজন রয়েছেন।

এদিকে ঢাকার ৩৪ থানার মামলায় কারাগারে যাওয়া ১৭২ আসামিদের মধ্যে আশুলিয়া থানার ছয়জন, ধামরাই থানার একজন, দোহার থানার চারজন, কেরানীগঞ্জ মডেল থানার নয়জন, কেরানীগঞ্জ দক্ষিণ থানার তিনজন, নিউমার্কেট থানার একজন, কলাবাগান থানার একজন, রামপুরা থানার আটজন, সবুজবাগ থানার তিনজন, তেজগাঁও থানার সাতজন, হাতিরঝিল থানার একজন, আদাবর থানার পাঁচজন, মোহাম্মদপুর থানার আটজন, পল্লবী থানার ২১ জন, কাফরুল থানার একজন, পল্টন থানার সাতজন, মতিঝিল থানার পাঁচজন, শাহজাহানপুর থানার দুইজন, মিরপুর থানার চারজন, শেরেবাংলা নগর থানার ১১ জন, ভাটারা থানার তিনজন, বংশাল থানার নয়জন, কোতোয়ালি থানার তিনজন, চকবাজার থানার দুইজন, বনানী থানার নয়জন, গুলশান থানার একজন, শ্যামপুর থানার তিনজন, কদমতলী থানার তিনজন, তুরাগ থানার দুইজন, উত্তরা পূর্ব থানার ১৩ জন, হাজারীবাগ থানার দুইজন, ডেমরা থানার দুইজন, যাত্রাবাড়ী থানার পাঁচজন ও খিলগাঁও থানার সাতজন রয়েছেন।

এছাড়াও ১৯ জুলাইয়ের পর থেকে গত ২৬ জুলাই পর্যন্ত সাতদিনে অন্তত ১৯৯৬ জনকে ঢাকার ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। ফলে এ নিয়ে কারাগারে যাওয়া মোট আসামির সংখ্যা দাঁড়াল অন্তত ২১৬৮ জনে। এর মধ্যে অনেকেই বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ড ভোগ করেন। গ্রেফতার হয়ে কারাগারে ও রিমান্ডে যাওয়া আসামিদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হলেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও নজরুল ইসলাম খান, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক মন্ত্রী আমান উল্লাহ আমান, যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, বিএনপি নেত্রী নিপুণ রায় চৌধুরী, জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক সংসদ সদস্য মিয়া গোলাম পরওয়ার, নায়েবে আমির ও সাবেক এমপি ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের, ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নূর, ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ প্রমুখ।

জেএ/এমআরএম/এমএস

Read Entire Article