জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মেয়াদ বৃদ্ধি এবং কমিশনের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে গণপরিষদ নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন।
রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুর রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে এ কথা বলেন তিনি। গত ১২ ফেব্রুয়ারি ঐকমত্য কমিশন গঠন করা হয়। গত ১২ আগস্ট এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কমিশনের মেয়াদ বাড়ানো হয়। সেই হিসেবে আগামীকাল কমিশনের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা।
বৈঠকে আখতার হোসেন বলেন, ঐকমত্য কমিশন দীর্ঘ সময় ধরে আলোচনা করেছে, আমরা প্রায় শেষ প্রান্তে এসে পৌঁছেছি। এখন বাস্তবায়নের বিষয় চূড়ান্ত হওয়ার পালা। আমরা ঐকমত্য কমিশনের সভাপতি স্যারের কাছে বিনীত অনুরোধ করবো, আমাদের আলোচনা প্রায় গুছিয়ে নিয়ে এসেছি। কমিশনের সময় প্রায় শেষের দিকে। কমিশন আরও কিছুদিন সময় যদি পায় সেক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলো আলাপ-আলোচনার মধ্যদিয়ে কমিশনের সহযোগিতায় আমরা ইতিবাচক সিদ্ধান্ত দিকে অগ্রসর হতে পারবো।
তিনি বলেন, কমিশনের সদস্য এবং সভাপতির কাছে আমাদের বিনীত আহ্বান কমিশনের সময় বৃদ্ধি করে বাস্তবায়নের পথ নিশ্চিতভাবে সবার কাছে প্রস্ফুটিত করে আমরা যেন এ কমিশনের কার্যক্রমকে সফলভাবে সমাপ্ত করতে পারি।
আখতার বলেন, আমরা দুটি বিষয়ে আলোচনা করেছি। যার একটি অংশের বিষয়ে আমরা একমত। যেগুলো সংবিধানের সঙ্গে সম্পর্কিত নয় সেগুলো এ সরকারের সময় থেকেই অর্ডিন্যান্স বা সরকারের এক্সিকিউটিভ অর্ডারের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে। কিন্তু রাষ্ট্র কাঠামোর অনেকগুলো বিষয় নিয়ে আমরা কথা বলেছি যাতে সংবিধানের অনেক মৌলিক জায়গাতে পরিবর্তন আসবে। এত বড় ধরনের পরিবর্তন শুধু সংশোধনের মধ্যদিয়ে এগুলোকে টেকসইকর করা সম্ভব কিনা সেই আশঙ্কার জায়গাটি আমাদের মধ্যে বিদ্যমান রয়েছে।
যেহেতু বাংলাদেশে এর আগে হাইকোর্টে সংশোধনী চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে এবং সেগুলো বাতিল হয়েছে। সেক্ষেত্রে আমরা সংবিধানের যে মৌলিক পরিবর্তনগুলো নিয়ে এসেছি সেগুলোকে কীভাবে টেকসই এবং কার্যকর করা যায় সেজন্য আমরা রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি উদাত্ত আহ্বান রেখেছি।
এনসিপি মনে করে একটি গণপরিষদ নির্বাচনের মধ্যদিয়েই নতুন সংবিধানে নতুন ভাবে লিখিত ধারা, উপধারা এবং অনুচ্ছেদের মধ্যদিয়ে আমরা যে সংশোধনীর বিষয় একমত হয়েছি, যেসব সংস্কারের বিষয়ে একমত হয়েছি সেগুলোকে টেকসই করা সম্ভব। সে ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলোকে অবশ্যই একটু ঐকমত্যের জায়গায় পৌঁছাতে হবে।
তিনি বলেন, আমরা দীর্ঘসময় ধরে ঐকমত্য কমিশনে আলোচনা করেছি এক নতুন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যাশা নিয়ে। যেখানে ক্ষমতাকে কেন্দ্রীকরণ না করে বিকেন্দ্রীকরণ করা, রাষ্ট্র কাঠামোতে পরিবর্তন আসবে, জবাবদিহি নিশ্চিত হবে। এমন এক বাংলাদেশের প্রত্যাশা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো বিগত সময়ে যে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধের মধ্যদিয়ে, ইতিবাচক পরিবেশের মধ্যদিয়ে যে আলোচনা এগিয়ে নিয়ে গেছে। এ জন্য এনসিপির পক্ষ থেকে সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
এনএস/এমএএইচ/জেআইএম