তাওয়াফ শব্দের অর্থ ঘোরা বা প্রদক্ষিণ করা। পরিভাষায় তাওয়াফের নিয়ত করে পবিত্র কাবা ঘরের হাজরে আসওয়াদের কোনা থেকে শুরু করে চারপাশে সাত বার ঘোরাকে তাওয়াফ বলা হয়। তাওয়াফ হজ ও ওমরাহর অপরিহার্য আমল। ওমরাহর সময় পবিত্র কাবা ঘর তাওয়াফ করা ফরজ। হজের সময় তাওয়াফে জিয়ারত করা ফরজ। আরাফায় অবস্থানের পর এ তাওয়াফ করতে হয়।
ওমরাহ ও হজের তাওয়াফ ছাড়াও নফল তাওয়াফ করা যায়। ফরজ তাওয়াফ যেভাবে আদায় করা হয়, একইভাবে নফল তাওয়াফ আদায় করতে হয়। ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে তাওয়াফের ফজিলত বর্ণনা করে আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন,
مَنْ طَافَ بِهَذَا الْبَيْتِ أُسْبُوعًا فَأَحْصَاهُ كَانَ كَعِتْقِ رَقَبَةٍ لَا يَضَعُ قَدَمًا وَلَا يَرْفَعُ أُخْرَى إِلا حطَّ اللَّهُ عنهُ بهَا خَطِيئَة وكتبَ لهُ بهَا حَسَنَة
যে ব্যক্তি বায়তুল্লাহর চারদিকে সাতবার তাওয়াফ করবে ও তা যথাযথভাবে সম্পন্ন করবে, তা তার জন্য গোলাম মুক্ত করে দেবার সমতুল্য হবে। কোন লোক এতে এক পা ফেলে অপর পা ওঠানোর আগেই আল্লাহ তাআলা তার একটি গুনাহ মাফ করে দেন ও তার জন্যে একটি সাওয়াব নির্ধারণ করেন। (সুনানে তিরমিজি: ৯৫৯)
তাওয়াফের সময় অজু অবস্থায় থাকা ওয়াজিব। অজু ছাড়া তাওয়াফ করা নিষিদ্ধ। নবিজি (সা.) তাওয়াফকে নামাজের সাথে তুলনা করেছেন। নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,
الطَّوَافُ بِالْبَيْتِ صَلاةٌ إلا أَنَّكُمْ تَتَكَلَّمُونَ فِيهِ
বায়তুল্লাহর তাওয়াফ নামাজের মতো; তবে আপনারা তাওয়াফের মধ্যে কথা বলতে পারেন। (সুনানে তিরমিজি:৯৬০)
আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে তিনি বলেন, যখন নবিজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাওয়াফ করতে চাইতেন তখন তিনি ওজু করে নিতেন। (সহিহ মুসলিম: ১২৯৭)
তাওয়াফের তিন চক্কর বা এর কম আদায়ের পর কারো যদি অজু ভেঙে যায়, তাহলে অজু করে এসে পুনরায় শুরু থেকে সাত চক্কর পূর্ণ করা মুস্তাহাব। তবে অজু করে আসার পর অবশিষ্ট চক্করগুলো করে নিলেও তাওয়াফ আদায় হয়ে যাবে।
আর তাওয়াফের চার চক্কর বা এর বেশি আদায়ের পর অজু ভেঙে গেলে উত্তম হলো অজু করে এসে পুনরায় প্রথম থেকে চক্কর শুরু না করে শুধু অবশিষ্ট চক্করগুলো আদায় করা। তবে এ ক্ষেত্রেও কেউ যদি পুনরায় প্রথম থেকে সাত চক্করই পূর্ণ করে তাহলে সেটিও শুদ্ধ হবে।
ওএফএফ/এএসএম