নেপালে টানা সহিংস বিক্ষোভে অন্তত ১৯ জন নিহত হওয়ার পর মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) পদত্যাগ করেছেন প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি। পদত্যাগের পরই জোরালো হয়েছে গুঞ্জন- তিনি দেশ ছেড়ে পালাতে পারেন। এই আশঙ্কায় নেপাল ও ভারত দুই দেশই সীমান্ত এবং আকাশপথে কঠোর নজরদারি শুরু করেছে।
ওলির পদত্যাগের পর রাজধানী কাঠমান্ডুসহ বিভিন্ন শহরে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও কারফিউ অমান্য করে বিক্ষোভকারীদের রাস্তায় নামার ঘটনায় প্রশাসন হিমশিম খাচ্ছে। এই অবস্থায় সদ্য সাবেক প্রধানমন্ত্রীর দেশত্যাগ ঠেকাতে ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সব ধরনের উড্ডয়ন ও অবতরণ বাতিল করা হয়েছে। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, বিশেষ অনুমতি ছাড়া কোনো আন্তর্জাতিক বা অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট ছাড়তে দেওয়া হবে না। ফলে আকাশপথে ওলি দেশ ছাড়ার সুযোগ কার্যত বন্ধ হয়ে গেছে।
প্রতিবেশী ভারতও সীমান্তে নজরদারি জোরদার করেছে। বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গের পানিটাঙ্কি সীমান্তে বাড়তি পুলিশ ও আধাসামরিক বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। বসানো হয়েছে অতিরিক্ত তল্লাশি চৌকি। সীমান্ত পারাপার, যানবাহন ও যাত্রীদের চলাচল নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে জানিয়েছে, সীমান্ত এলাকায় এখন কার্যত উচ্চ সতর্কতা জারি রয়েছে, যাতে কোনোভাবেই ওলি গোপনে প্রবেশ করতে না পারেন।
যদিও মঙ্গলবার দুটি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট কাঠমান্ডু থেকে ছেড়েছে, তবে ওলির নাম যাত্রী তালিকায় ছিল কি না তা নিশ্চিত নয়। রাজনৈতিক মহলে ধারণা করা হচ্ছে, তিনি ভিন্ন পথে বা গোপন ব্যবস্থায় দেশ ছাড়ার চেষ্টা করতে পারেন। এই আশঙ্কায় সীমান্ত ও বিমানবন্দর উভয় জায়গাতেই নজরদারি সর্বোচ্চ পর্যায়ে রাখা হয়েছে।
নয়াদিল্লি জানিয়েছে, নেপালে প্রাণহানির ঘটনায় তারা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, নেপাল ভারতের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও প্রতিবেশী, তাই সব পক্ষের প্রতি সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানানো হচ্ছে। পাশাপাশি নেপালে অবস্থানরত ভারতীয় নাগরিকদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
সব মিলিয়ে, ওলি দেশ ছেড়ে পালাতে পারবেন কি না তা এখনো অনিশ্চিত। তবে নেপাল-ভারত উভয় দেশের কঠোর নজরদারি ও সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা তার সম্ভাব্য পালানোর পথ কার্যত রুদ্ধ করে দিয়েছে।
সূত্র: দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া
এসএএইচ