ওসি পরিচয়ে জিম্মি করে চাঁদাবাজির অভিযোগ ছাত্রদল নেতার বিরুদ্ধে

3 hours ago 6

দিনাজপুরে নিজেকে পুলিশের ওসি পরিচয় দিয়ে বাবা-ছেলেকে জিম্মি করে এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রদল নেতা আব্দুর রাজ্জাক ও তার সহযোগীর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় বিক্ষুব্ধ জনতা তাদের আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। 

আটক আব্দুর রাজ্জাক সদর উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক। অপর আটক হচ্ছেন মো. আপেল।

বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) রাতে জেলার সদর উপজেলার ৪নং শেখপুরা ইউনিয়নের ভাটিনা ঠাকুরবাড়ি গ্রামের চাকলাদার পুকুরপাড় নামক স্থানে এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় চৈতু বর্মন নামে এক ব্যক্তি বাদী হয়ে আব্দুর রাজ্জাকসহ আটজনের নাম উল্লেখ করে এবং কয়েকজনকে অজ্ঞাত আসামি করে থানায় একটি মামলা করেন। মামলার এজাহারে উল্লেখিত অন্য আসামিরা হলেন- মো. শাহাদাত হোসেনের ছেলে মো. আপেল, মো. আব্দুস সাত্তারের ছেলে মো. শাহীনুর ইসলাম, মো. আপনের ছেলে মো. শান্ত, মো. আক্তারুল, শ্রী উজ্জ্বল রায়, শ্রী তাপস রায় এবং শ্রী মহেশ চন্দ্র রায়।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, চৈতু বর্মনের ছেলে ইমন চন্দ্র বর্মন (২২) একই গ্রামের মিতু রানী রায়ের (১৯) সঙ্গে বিয়ে করে টাঙ্গাইলে অবস্থান করতে থাকেন। মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) কোতোয়ালি থানা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মো. আব্দুর রাজ্জাকসহ তার সঙ্গীয় লোকজন মাইক্রোবাস নিয়ে রাত পৌনে ১২টায় সদরের ঠাকুরবাড়ি গ্রামে বাদীর বাসায় যান। তাকে ডেকে নিয়ে মো. আব্দুর রাজ্জাক নিজেকে কোতোয়ালি থানার ওসি পরিচয় দেন। বলেন, তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, থানায় যেতে হবে। এরপর বাদী তার পরিবারের লোকজনকে ডাকতে চাইলে আব্দুর রাজ্জাকসহ তার লোকজন তাকে জোরপূর্বক আটক করে সাদা রঙের মাইক্রোবাসে তোলেন। জানতে চান, ছেলে ইমন কোথায় আছে। তার ঠিকানা জানার পর বাদীকে বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখিয়ে টাঙ্গাইলে অপহরণ করে নিয়ে যান।

টাঙ্গাইল থেকে ছেলে ইমনসহ তার বাবা বাদী চৈতুকে নিয়ে বুধবার (৮ জানুয়ারি) রাত ১০টায় পুনরায় দিনাজপুর নিয়ে আসে। এরপর ৪নং শেখপুড়া ইউনিয়নের মাধবপুর গোয়ালপাড়া নামক স্থানে নিয়ে গিয়ে মহেশ চন্দ্র রায় নামে এক ব্যক্তির বাসায় আটকে রেখে শারীরিক নির্যাতন চালায় এবং বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি দেখিয়ে এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে ।

নিরুপায় হয়ে ছেলে ও নিজের জীবন রক্ষার্থে বাদী তাদের টাকা দিতে স্বীকার করেন এবং একদিনের সময় চান। বিবাদী আব্দুর রাজ্জাক ও সঙ্গীয় লোকজন টাকা না দিলে বা কাউকে জানাজানি করলে বিভিন্ন মামলাসহ প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে ওই রাতে ছেড়ে দেয়।

তারই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) রাত ৮টায় ছাত্রদল নেতা আব্দুর রাজ্জাক ও তার সঙ্গীয় মো. আপেল ওই এলাকায় ডেকে নেয় এবং পুনরায় নিজেকে ওসির পরিচয় দিয়ে মিথ্যা মামলা দিয়ে ফাঁসিয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে এক লাখ টাকা দাবি করে। এ সময় এলাকার লোকজন এগিয়ে এলে পরিস্থিতি বেগতিক দেখে আব্দুর রাজ্জাক ও আপেল পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে বিক্ষুব্ধ জনতা তাদের ধরে উত্তম-মধ্যম দিয়ে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল দিয়ে পুলিশের হাতে সোপর্দ করে।

ঘটনা নিশ্চিত করে দিনাজপুর কোতোয়ালি থানার ওসি মো. মতিউর রহমান বলেন, এ ঘটনায় একটি মামলা রুজু করা হয়েছে।

এদিকে এ ঘটনায় সংগঠনের শৃঙ্খলা ভঙের সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে সাংগঠনিক পদ থেকে বহিষ্কার করেছে জেলা ছাত্রদল। এ ছাড়াও ছাত্রদলের সব পর্যায়ের নেতাকর্মীদের তার সঙ্গে কোনো সাংগঠনিক সম্পর্ক না রাখার জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হয়।

Read Entire Article