গত ৫ আগস্ট ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানের’ প্রথম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচি চলাকালীন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ৫ নেতার ব্যক্তিগত সফরে কক্সবাজার যাওয়ার ঘটনার রেশ এখনো কাটেনি। এই ৫ নেতাকে শোকজের পর এবার দলীয় সাধারণ সভায়ও এ ঘটনা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন কেন্দ্রীয় নেতারা।
বুধবার (১৩ আগস্ট) বিকেল ৫টা থেকে রাত ৩টা পর্যন্ত ১০ ঘণ্টার বেশি সময় চলা দলের সপ্তম সাধারণ সভা কক্সবাজার ইস্যুতে অনেকটা গরম ছিল। গণঅভ্যুত্থানের বিশেষ দিনে দলটির মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ, যুগ্ম আহ্বায়ক খালেদ সাইফুল্লাহ, তার স্ত্রী এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব তাসনিম জারা, মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম এবং মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর কক্সবাজার যাওয়াকে ভালো চোখে দেখেননি বেশিরভাগ সদস্য।
রাজধানীর বাংলামোটরে দলটির অস্থায়ী কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে দলটির আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলাম, সদস্য সচিব আখতার হোসেন, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব তাসনিম জারাসহ আহ্বায়ক কমিটির সদস্যরা বৈঠকে অংশ নেন।
সভা সূত্রে জানা যায়, সভার প্রায় দুই ঘণ্টা ধরেই কক্সবাজার ইস্যু নিয়ে কথা হয়। দলটির শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের এই কাজের সমালোচনা করেন অনেক সদস্য। কিছু সদস্য ফেসবুকে শোকজের জবাব দেওয়া, দল এবং আহ্বায়ক, সদস্য সচিবকে নিয়ে প্রশ্ন তোলারও নিন্দা জানান। গুরুত্বপূর্ণ এই সময়ে ব্যক্তিগত সফরে কক্সবাজারে যাওয়াকে ভালো সিদ্ধান্ত নয় বলে মন্তব্য করেছেন নেতারা। জবাবে হাসনাত-সারজিসরাও তাদের ব্যাখ্যা জানান।
এনসিপির আহ্বায়ক কমিটির এক নেতা কালবেলাকে বলেন, ‘কক্সবাজার ইস্যুতে দলের ক্ষতি হয়েছে। তাই এটা নিয়ে প্রায় দুই ঘণ্টা আলোচনা হয়। এসময় বিভিন্ন জন বিভিন্ন মন্তব্য করেছেন। ৫ আগস্ট কেন এনসিপির কোনো কর্মসূচি ছিল না, এটা নিয়েও অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন।’
ওই নেতা আরও বলেন, ‘৫ আগস্ট আমাদের ছাত্র-জনতার মুক্তি দিবস পালন করার সিদ্ধান্ত হয়েছিল, কিন্তু সেটা এক প্রকার সবাই ভুলেই গিয়েছিল। তা নিয়েও বেশ কিছুক্ষণ আলোচনা চলে।’
এ ছাড়া সভা থেকে দ্রুত আহ্বায়ক কমিটি থেকে কার্যনির্বাহী কমিটি গঠন করা এবং আগামী এক সপ্তাহ এনসিপির সাংগঠনিক সপ্তাহ পালনের সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানা যায়। সাংগঠনিক সপ্তাহ চলাকালীন ৫টি জেলায় পদযাত্রা সম্পন্ন করা, জেলা, উপজেলা সমন্বয়কারীদের সঙ্গে বসা এবং বাকি থাকা কমিটিগুলো গঠন করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে দলীয়ভাবে এখনো পর্যন্ত কোনো কর্মসূচি ঘোষণা করেনি এনসিপি।