কচুরিপানা থেকে পণ্য তৈরির উপায় উদ্ভাবন
গ্রামাঞ্চলের জলাশয়ের জঞ্জাল কচুরিপানা শুকিয়ে তাতে পানি ও নানা উপাদান মিশিয়ে তৈরি করা হচ্ছে কালো একটি মিশ্রণ। সেটি মেশিনের ভেতর ভালো করে মেশানো হচ্ছে। মিশ্রণটি ভালো করে মিশে গেলে তা কয়েকটি ট্রেতে ঢেলে রাখা হচ্ছে। তারপর সেগুলো শুকিয়ে বানানো হচ্ছে বিভিন্ন পণ্য। তাতে ভাগ্য বদলে যাচ্ছে অনেকের।
নদ-নদী বা খাল-বিলের এক সময়ের এই জঞ্জালকে এখন কালো সোনায় পরিণত করছে একটি স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠান। জলজ এই উদ্ভিদ দিয়ে কীভাবে পরিবেশবান্ধব বিভিন্ন জিনিস বানানো যায় তা-ই করে দেখিয়েছে কেনিয়ার হায়াপাক টেকনোলজিস।
দ্রুত বর্ধনশীল এই উদ্ভিদের কারণে মাছের উৎপাদন ব্যাহত হয়। তাই এই উদ্ভিদ কিভাবে কাজে লাগানো যায়, তা নিয়ে ভাবতে শুরু করে নাইরোবি ভিত্তিক হায়াপাক টেকনোলজিস। বিশেষ করে নাইভাশা হ্রদকে কীভাবে কচুরি মুক্ত করা যায়, সেই ভাবনা থেকেই এই অভিনব উপায় খুঁজে পেয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
ভিয়োরি এক ভিডিও প্রতিবেদনে কচুরিপানা থেকে পণ্যের কাঁচামাল তৈরির আদ্যোপান্ত দেখিয়েছে। তাতে দেখা যায়, হ্রদ থেকে কচুরি তুলে এনে তা রোদে শুকানো হয়। তারপর সেগুলোকে মেশিনে দিয়ে গুঁড়া করা হয়। সেই গুঁড়াকে একটি সলিউশনের সঙ্গে মিশিয়ে বানানো হচ্ছে শিট। শুকনো সেই শিটগুলো পরে খাম এবং গাছের টব হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। হায়াপাক টেকনোলজিসের প্রতিষ্ঠাতা জোসেফ এনগুথিরুর দাবি, তাদের পণ্য কার্বন নেগেটিভ।
কচুরির কারণে নাইভাশা হ্রদে মাছ ধরা, চলাফেরা, চাষাবাদ ও অন্যান্য কাজ কঠিন হয়ে পড়েছে। আবার কচুরি কারণে মশার প্রজননক্ষেত্র হয়ে উঠেছে এই হ্রদ। এতে ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। স্বাদুপানির জন্য এই কচুরি বড় মাথাব্যথার কারণ। এমনকি স্থানীয় মৎস্যজীবীদের অভিযোগ, কচুরির কারণে মাছের চাষাবাদও কমে গেছে।
২০২৩ সালে করা এক গবেষণায় দেখা যায়, কেনিয়ার হ্রদগুলোতে কচুরির কারণে প্রতি বছর ১৫ থেকে ৩৫ কোটি ডলার ক্ষতি হয়। মাছ ধরা, পরিবহন ও পর্যটন খাতেই এত বিপুল পরিমাণ আর্থিক ক্ষতি হয় বলে ইস্ট আফ্রিকান জার্নাল অব এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড ন্যাচারাল রিসোর্চের গবেষণায় উঠে আসে। এমতাবস্থায় নতুন এই উদ্ভাবন অর্থনীতির নতুন দুয়ার খুলে দিয়েছে।