নড়াইলের লোহাগড়ায় মারা যাওয়ার পরও পাঁচ বছর ধরে পেনশনের টাকা উত্তোলন করা হয়েছে সখিনা বেগম নামের এক মৃত নারীর নামে। অন্য একজনকে সখিনা সাজিয়ে এবং তার সই জাল করে টাকা উত্তোলনের অভিযোগ উঠেছে সখিনার মেয়ে ও নাতনির বিরুদ্ধে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, লোহাগড়া উপজেলার কুমড়ি মধ্যপাড়া গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য ফজর শেখ ২০-২২ বছর আগে মারা যান। এরপর তার স্ত্রী সখিনা বেগম পেনশনের টাকা উত্তোলন করতেন। ২০১৮ সালের মার্চ মাসে সখিনা বেগমও মারা যান। কিন্তু সখিনার মেয়ে ঝর্ণা খানম ও নাতনি ডালিয়া সখিনার মৃত্যুর বিষয়টি গোপন রাখেন। পরে অন্য এক নারীকে সখিনা বেগম সাজিয়ে তার সই জাল করে ২০১৮ থেকে ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত পাঁচ বছরে প্রায় চার লাখ টাকা উত্তোলন করেন তারা।
তবে বিষয়টি অস্বীকার করেছেন মেয়ে ঝর্ণা খানম। তিনি বলেন, ‘মা মারা যাওয়ার পর আমরা কোনো পেনশনের টাকা উত্তোলন করেনি। কে বা কারা ওই টাকা তুলে নিয়েছে তা হিসাবরক্ষণ অফিস ও ব্যাংকের লোকজন জানে। এটা তাদের ব্যাপার।’
এ বিষয়ে সোনালী ব্যাংক লক্ষ্মীপাশা শাখার ম্যানেজার নুরুল আমিন বলেন, ‘সবশেষ সখিনা বেগমের ব্যাংক হিসাব নম্বরে ৬৫১০ টাকা করে জমা হয়েছে। ওই হিসাবের নমিনি রয়েছেন ঝর্ণা নামের একজন। ওই হিসাব থেকে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে সখিনার সইয়ে টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। তাদের সই যাচাই-বাছাই করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
লোহাগড়া উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা বি এম তামজিদ হাসান বলেন, ‘সখিনার নামে খোলা অনলাইন অ্যাকাউন্টে ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত পেনশনের টাকা ট্রান্সফার করা হয়েছে। তার মৃত্যুর বিষয়টি গোপন করে টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
জানতে চাইলে খুলনা অঞ্চলের অডিট অ্যান্ড অ্যাকাউন্টস অফিসার মীর এনামুল হক বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে ওই হিসাবধারীর নমিনিকে উত্তোলনের অতিরিক্ত টাকা সরকারি কোষাগারে ফেরত দিতে চিঠি দেওয়া হবে। প্রয়োজনে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
হাফিজুল নিলু/এসআর/জিকেএস