কর্মবিরতিতে রাবি শিক্ষকরা, বন্ধ ক্লাস-পরীক্ষা

3 months ago 57

সর্বজনীন পেনশন স্কিম সংক্রান্ত ‘বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন’ প্রত্যাহারের দাবিতে কর্মবিরতি পালন করছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষকরা। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ রয়েছে।

সোমবার (১ জুলাই) সকাল থেকে সর্বাত্মক আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করেন তারা। এদিন বেলা ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ সিনেট ভবন চত্বরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসার সমিতিও ১ থেকে ৩ জুলাই পর্যন্ত লাগাতার কর্মবিরতির ডাক দিয়েছে।

অবস্থান কর্মসূচিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মোজাম্মেল হোসেন বকুল বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিভিন্ন সময়ে শিক্ষকদের অনেক সুবিধা উঠিয়ে দেওয়া ও আর্থিক সুবিধা দেওয়ার ক্ষেত্রে কার্পণ্য হতে দেখেছি। উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান যদি সঠিকভাবে না চলে তাহলে জাতির সামনে অশনি সংকেত অপেক্ষা করে। যেসব মেধাবী শিক্ষার্থীরা পড়ালেখা করছেন, তারা যদি মেধাবী শিক্ষক না পান তাহলে তারা দেশকে কিছুই দিতে পারবে না। মেধাবী শিক্ষক পেতে গেলে মেধাবী শিক্ষার্থীদের আকর্ষণ করতে হবে। যেন তারা উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আসেন। তাদের আকর্ষণ করার জন্য আর্থিক সুযোগ-সুবিধা দিতে হবে। আরও কত সুযোগ-সুবিধা দেওয়া যায় সেই চেষ্টা করতে হবে। প্রতিবেশী অনেক দেশে শিক্ষকদের বেতন সাধারণ চাকরি থেকে অনেক বেশি। কিন্তু বাংলাদেশে স্বতন্ত্র বেতন স্কেলের কথা বার বার বলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি।

রাবির শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. ওমর ফারুক সরকার বলেন, জাতিকে ও দেশের জনগণকে জানাতে চাই, আমরা রাস্তায় দাঁড়িয়েছি। আমাদের প্রধানমন্ত্রী এটা দেখবেন, এই সমস্যার সমাধান করবেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষক রাস্তায় দাঁড়িয়ে বক্তব্য দিতে চায় না। তাদের বক্তব্য দেওয়ার জায়গা ক্লাসরুম, সেমিনার, ল্যাবরেটরি। আজ থেকে আমরা সব বন্ধ করে দিয়েছি। সব ধরনের ক্লাস বন্ধ রয়েছে, লিখিত ও ভাইবাসহ সব পরীক্ষা বন্ধ রয়েছে, সব ধরনের সেমিনার, সিম্পোজিয়াম বন্ধ রয়েছে, গবেষণা বন্ধ রয়েছে, শিক্ষকদের প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। যেটাকে আমরা বলি সর্বাত্মক কর্মবিরতি।

রাবির শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. হাবিবুর রহমান বলেন, গত দুই মাস থেকে আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি। ভেবেছিলাম এমন পরিস্থিতি আসবে যে আমাদের আর কর্মসূচির মধ্যে যেতে হবে না। যেহেতু তেমন কিছু হয়নি তাই কর্মসূচিতে যেতে হচ্ছে। আর এ বিষয়ে সরকারের অবস্থান অনড় বলেই মনে হচ্ছে। এজন্য আমাদের এটা আরও চালিয়ে যেতে হবে।

তিনি আরও বলেন, দেশে যখনই কোনো কিছু ঘটে তখন সবকিছু শিক্ষকদের ওপরে আসে। আর্থিক খাত থেকে বিভিন্ন জায়গায় বঞ্চিত করা হয়েছে। আপনারা জানেন ২০১৫ সালে অবনমন করা হয়। আবার সর্বজনীন পেনশন স্কিমের নামে আর্থিকভাবে ক্ষতি করছে। শুধু আর্থিকভাবে নয়, আমি মনে করি এটার সুদূরপ্রসারী প্রভাব রয়েছে। এটা উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংসের ষড়যন্ত্র বলে মনে করি।

মনির হোসেন মাহিন/জেডএইচ/এএসএম

Read Entire Article