এক কর্মীর বাহুতে হাত রাখার ঘটনায় পদত্যাগ করেছেন নিউজিল্যান্ডের বাণিজ্যমন্ত্রী অ্যান্ড্রু বেইলি। তার বিরুদ্ধে ‘অত্যধিক কর্তৃত্বপূর্ণ আচরণের’ অভিযোগ উঠেছে। সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) এক বিবৃতিতে বেইলি বলেছেন, তিনি ঘটনাটির জন্য ‘গভীরভাবে দুঃখিত’।
তবে তার দাবি, এটি কোনো বিতর্ক ছিল না, বরং ‘উৎসাহী আলোচনা’ ছিল মাত্র।
পদত্যাগের ফলে মন্ত্রিত্ব হারালেও সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করে যাবেন বেইলি।
এর আগে, গত অক্টোবর মাসে এক মদ প্রস্তুতকারক কর্মীকে ‘পরাজিত ব্যক্তি’ বলে কটাক্ষ করারও অভিযোগ উঠেছিল তার বিরুদ্ধে। অভিযোগ রয়েছে, তিনি ওই কর্মীর সামনে কপালে ‘এল’ আকৃতির চিহ্ন দেখান এবং অশ্রাব্য শব্দ ব্যবহার করেন।
আরও পড়ুন>>
- দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় জাপানে চার মন্ত্রীর পদত্যাগ
- লকডাউনে বিদেশভ্রমণে যাওয়ায় কানাডীয় মন্ত্রীর পদত্যাগ
- সহকর্মীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার: পদত্যাগ করলেন ব্রিটিশ মন্ত্রী
বেইলি বলেন, অনেকের মতো আমিও আমার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালনে দ্রুত পরিবর্তন আনতে চেয়েছি। গত সপ্তাহে এক কর্মীর সঙ্গে কর্মসংক্রান্ত বিষয়ে উৎসাহী আলোচনা করছিলাম। তবে, আমি আলোচনাটিকে অত্যধিক বাড়িয়ে ফেলেছি এবং তার বাহুতে হাত রেখেছি, যা অনুপযুক্ত ছিল।
নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ক্রিস্টোফার লাকসন জানিয়েছেন, বেইলি গত শুক্রবার পদত্যাগপত্র জমা দেন। তবে ঘটনাটি ঘটেছিল তার আগের মঙ্গলবার।
লাকসন বলেন, সরকার বিষয়টি মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে সমাধান করেছে, যা যথেষ্ট দ্রুত এবং কার্যকর সিদ্ধান্ত।
তবে বিরোধী দলীয় নেতা ও লেবার পার্টির প্রধান ক্রিস হিপকিন্স লাকসনের ভূমিকার সমালোচনা করে বলেন, এটি পুরো সপ্তাহান্ত ঝুলিয়ে রাখা উচিত হয়নি। প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রীদের আচরণের মান এত নিচে নামিয়েছেন যে, সেটি পেরোনো প্রায় অসম্ভব হয়ে গেছে।
বেইলি বলেন, পদত্যাগের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে তিনি পরিবারের সঙ্গে আলোচনা করেছেন এবং তার জন্য আগে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হওয়া কঠিন ছিল।
২০১৪ সালে সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হওয়া বেইলি রাজনীতিতে আসার আগে আর্থিক খাতে কাজ করতেন। তার পদত্যাগের পর ন্যাশনাল পার্টির সিনিয়র হুইপ স্কট সিম্পসন নতুন বাণিজ্য ও ভোক্তা বিষয়ক মন্ত্রী এবং অ্যাকসিডেন্ট কম্পেনসেশন করপোরেশন (এসিসি) মন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করবেন।
এদিকে, নিউজিল্যান্ডে লাকসন সরকারের জনপ্রিয়তা ক্রমশ কমছে। সাম্প্রতিক ১নিউজ-ভেরিয়ান জরিপে দেখা গেছে, তার নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল পার্টি নেতৃত্বাধীন জোট সরকার ভোটারদের সমর্থন হারাচ্ছে।
সরকারের সাম্প্রতিক কিছু সিদ্ধান্ত, বিশেষ করে মাওরি জনগোষ্ঠীর প্রতি নেতিবাচক মনোভাবপূর্ণ নীতির অভিযোগ বিতর্ক তৈরি করেছে। এসবের মধ্যে রয়েছে এক নতুন বিল, যা মাওরি জনগোষ্ঠীর অধিকার খর্ব করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে এবং মাওরি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ বিলুপ্ত করার সিদ্ধান্ত, যা পূর্ববর্তী লেবার সরকার স্বাস্থ্য বৈষম্য কমাতে প্রতিষ্ঠা করেছিল।
সূত্র: বিবিসি
কেএএ/