গাইবান্ধার সাঘাটায় কলেজছাত্র সিজু মিয়া হত্যার ঘটনায় সাঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ (ওসি) ১৫ জনের নামে মামলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) মামলাটি করেন নিহত সিজুর মা রিক্তা বেগম। গাইবান্ধা সাঘাটা থানার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। আদালতের বিচারক পাঁপড়ি বড়ুয়া অভিযোগ আমলে নিয়ে সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ দেন। আগামি ৬০ দিবসের মধ্যে প্রতিবেদন আদালতে জমা দিতে বলা হয়েছে।
মামলার ১৫ জনের নাম উল্লেখসহ ৪-৫ জনকে অজ্ঞাত করে আসামি করা হয়। নামীয় আসামিরা হলেন, সাঘাটা থানার ওসি বাদশা আলম, এএসআই রাকিবুল ইসলাম, এএসআই মশিউর, এএসআই মহসিন আলী সরকার, এএসআই আহসান হাবিব, এএসআই উজ্জল, এএসআই (ডেউটি অফিসার) লিটন মিয়া, হামিদুল ইসলাম, আজাদুল ইসলাম, নয়ন চন্দ্র, জয় চন্দ্র, ধর্মচন্দ্র বর্মণ, সাব্বির হোসেন, ইউসুফ আলী, মমিনুল ইসলাম।
অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়, কলেজছাত্র সিজু মিয়াকে পরিকল্পিতভাবে থানায় ডেকে নিয়ে আসামিরা হত্যা করেন। পরে তা ভিন্নভাবে উপস্থাপনের চেষ্টা করে।
গাইবান্ধা আদালতের পুলিশের উপ-পরিদর্শক জামাল উদ্দিন বলেন, আদালত অভিযোগপত্রটি গ্রহণ করে সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন বলে শুনেছি। তবে, আদেশের কাগজটি এখনো হাতে পাইনি।
উল্লেখ্য, গত ২৪ জুলাই বিকালে সদর উপজেলার কলেজছাত্র ও সদর উপজেলা গিদারী ইউনিয়ন ছাত্র শিবির সভাপতি সিজু মিয়াকে কৌশলে থানার ডেকে ও তার কাছে থাকা ফোন জব্দ করে এসআই রাকিব। এর কয়েক ঘণ্টা পরে ফোন ফেরত না পেয়ে রাত পৌনে ১০টার দিকে সিজু মিয়া গাইবান্ধার সাঘাটা থানায় ঢুকে এসআই রাকিবের উপর হামলার চেষ্টা করলে পুলিশের এএসআই মহসিন আলী বাধা দেয়। এসময় তাকে ছুরিকাঘাত করে থানার থেকে পালিয়ে থানার সামনের পুকুরে ঝাঁপ দেয় সিজু মিয়া। পরদিন শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সাঘাটা থানার সামনের পুকুরের কচুরিপানার মধ্য থেকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা অজ্ঞাতনামা হিসেবে সিজুর মরদেহ উদ্ধার করে। পরদিন শনিবার পুকুরে সিজুকে পুলিশ কর্তৃক পিটিয়ে হত্যার একটি ভিডিও ভাইরাল হলে এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়। পরে সেই দিনই গাইবান্ধা পুলিস সুপারের কর্যালয় ঘেরাও করে এলাকাবাসি। পরদিন সাঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন করে সচেতন নাগরিক ও স্থানীয়রা ৷ এ ঘটনায় সংবাদ প্রকাশের পরে টনক নড়ে প্রশাসনের।
এএনএইচএস/এএইচ/জিকেএস