কাঁচামরিচের কেজি ৪০০ টাকা

1 month ago 24

রাজধানীতে হঠাৎ অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে কাঁচামরিচের দাম। বিভিন্ন বাজারে খুচরা পর্যায়ে কাঁচামরিচের কেজি ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বৃষ্টির কারণে কাঁচামরিচের এমন দাম বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ব্যবসায়ীরা এক পোয়া (২৫০ গ্রাম) কাঁচামরিচ বিক্রি করছেন ১০০-১১০ টাকা। আর আধাকেজি নিলে দাম রাখা হচ্ছে ১৮০- ২০০ টাকা এবং এক কেজি নিলে দাম রাখা হচ্ছে ৩৬০-৪০০ টাকা।

ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, দু’দিন আগে শুক্রবার এক পোয়া কাঁচামরিচ ৬০-৭০ টাকায় বিক্রি হয়। কিন্তু বৃষ্টির কারণে মরিচের খেতের ক্ষতি হয়েছে। তাছাড়া গতকাল দিন-রাত বৃষ্টি হয়েছে। এ অজুহাতে আড়তে কাঁচামরিচ কম এসেছে। তার কারণেই কাঁচামরিচের কেজি ৪০০ টাকা ছুঁয়েছে।

তবে কাঁচামরিচের এমন দামে বিরক্তি প্রকাশ করেছেন ক্রেতারা। তারা বলছেন, বাজারে কার্যকর তদরকি না থাকায় মুনাফার লোভে ব্যবসায়ীরা বৃষ্টির অজুহাতে কাঁচামরিচের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। শুধু কাঁচামরিচ নয়, বাজারে সব ধরনের সবজিও চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে।

বাজার ঘুরে ক্রেতাদের এমন অভিযোগের সত্যতাও পাওয়া গেছে। বাজারে একাধিক সবজির কেজি একশ টাকার ওপরে বিক্রি হচ্ছে। ৫০ টাকার নিচে কোনো সবজি মিলছে না।

বাজারে এখন সব থেকে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে গাজর। প্রতিকেজি গাজর বিক্রি হচ্ছে ১৮০-২০০ টাকা। একই দামে বিক্রি হচ্ছে সিম। পাকা টমেটোর কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৪০-১৬০ টাকা। একশ টাকার (কেজি) ওপরে বিক্রি হচ্ছে বরবটিও। বিক্রেতারা বরবটির কেজি চাচ্ছেন ১০০-১২০ টাকা।

এছাড়া পটলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকা। করলা বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকা কেজি। চিচিঙ্গা ও ধুন্দল বিক্রি হচ্ছে ৫০-৭০ টাকা কেজি। প্রতি পিস লাউ বিক্রি হচ্ছে ৫০-৭০ টাকা। আলুর কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা। পেঁয়াজের কেজি ১১০-১২০ টাকা। রসুন বিক্রি হচ্ছে ২০০-২২০ টাকা কেজি। আদার কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৪০-২৭০ টাকা। কাঁচ কলার হালি বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকা।

অবশ্য বেশি কিছুদিন ধরেই সব ধরনের সবজি চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। তবে বৃষ্টির কারণে গত দুইদিনে কিছু কিছু সবজির দাম কেজিতে ১০-২০ টাকা বেড়েছে। সবজির দামের বিষয়ে খিলগাঁওয়ের ব্যবসায়ী মো. আলামিন বলেন, বৃষ্টির কারণে সবজির দাম কিছুটা বেড়েছে। চিচিঙ্গা, করলা, পটোল, ধুন্দলের দাম কেজিতে ১০ টাকার মতো বেড়েছে। তবে সব থেকে বেশি বেড়েছে কাঁচামরিচের দাম। এক লাফে কাঁচামরিচের দাম প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে।

তিনি বলেন, বৃষ্টিতে সব থেকে বেশি ক্ষতি হয় কাঁচামরিচের। ইতোমধ্যে অনেক কাঁচামরিচ পচে গেছে। অনেক খেত নষ্ট হয়েছে। আবার বৃষ্টির কারণে বাজারে মরিচ কম আসছে। সবকিছু মিলেই মরিচের দাম বেড়ে গেছে।

তিনি আরও বলেন, গত শুক্রবারও এক পোয়া কাঁচা মরিচ ৬০ টাকায় বিক্রি করেছি। কিন্তু আড়ত থেকে আজ যে দামে কিনেছি তাতে পোয়া ১০০ টাকার নিচে বিক্রি করার উপায় নেই। তবে আধাকেজি, এক কেজি নিলে ১০-২০ টাকা কম রাখা যাবে।

কাঁচামরিচের দামের বিষয়ে প্রায় এইক কথা বলেন, রামপুরার ব্যবসায়ী মো. ফিরোজ। তিনি বলেন, বৃষ্টির কারণে বাজারে কাঁচামরিচ খুব কম এসেছে। ভোর রাতে আড়তে মোকাম করতে গিয়ে ভালো কাঁচামরিচ খুব একটা খুঁজে পায়নি। আড়তে কাঁচামরিচ কম এসেছে। ভালো মালের দামও বেশি।

তিনি বলেন, আড়তে যে দাম নিয়েছে তাতে ফ্রেশ কাঁচামরিচ আজ কেউ ১০০ টাকার নিচে পোয়া বিক্রি করতে পারবেন না। তবে বোটা পচা, মান খারাপ এমন কাঁচামরিচ হয়তো কেউ কেউ কিছুটা কমে বিক্রি করতে পারেন। বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে কাঁচামরিচের দাম আরও বেড়ে যেতে পারে।

রামপুরা বাজারে বাজার করতে আসে কাজী সদরুল হোসেন বলেন, কিছুদিন আগেও এক পোয়া কাঁচামরিচ ৫০ টাকা দিয়ে কিনেছি। কিন্তু আজ কেউ এক পোয়া কাঁচামরিচ ১০০ টাকার নিচে বিক্রি করছেন না। শুধু কাঁচামরিচ নয় বাজারে সব জিনিসের দাম বেশি। ৫০০ টাকা নিয়ে বাজারে আসলে তেমন কিছুই কেনা যায় না।

তিনি বলেন, জিনিসপত্রের যে দাম তাতে সাধারণ মানুষ এখন বেশ কষ্টে আছে। সরকারের উচিত এখন বাজারের দিকে নজর দেওয়া। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম কমানোর জন্য যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে। সাধারণ মানুষ গাড়ি-বাড়ি চায় না, তারা শান্তিতে পেট পুরে খেতে চায়। কিন্তু বাজারে জিনিপত্রের যে দাম, তাতে সবারই নুন আনতে পান্তা ফুরায় অবস্থা।

এমএএস/জেএইচ/এমএস

Read Entire Article