ফেনীর ফুলগাজীতে ৬০ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত একটি স্লুইস গেট অকেজো হয়ে পড়ে আছে। উপজেলার মুন্সিরহাট ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী অঞ্চল বদরপুরের বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) বাস্তবায়িত এ স্লুইস গেট উল্টো গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে দাবি কৃষকদের।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ সালে ব্যয়বহুল এই স্লুইস গেট নির্মাণ করেন মেসার্স রিয়া এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মুন্সীরহাট ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ভিপি নুরুল আমিন। ওই বছর ২০ জানুয়ারি উদ্বোধনের সময়ে দেখা যায় স্লুইস গেটটি অপরিকল্পিতভাবে নির্মাণের ফলে ৫০০-৬০০ শত হেক্টর উঁচু জমিতে পানি সেচ করা দুরূহ হয়ে পড়ে।
- আরও পড়ুন
- উপজেলার অর্থনীতির চাকা ঘোরাচ্ছে ৭৩ বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান
- অকেজো সব স্লুইস গেট, চুরি হয়ে গেছে যন্ত্রপাতি
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, স্লুইস গেট অকেজো অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে। প্রায় ৫ বছরে ভারত থেকে নেমে আসা তেতৈয়া ছড়ায় নির্মিত সুইস গেটের দুইপাশের বাঁধের মাটি কেটে নিয়েছে মাটিদস্যুরা। কৃষকদের অভিযোগ, নির্মাণের পর বিএডিসি কর্তৃপক্ষের আর সাড়া পাওয়া যায়নি। এভাবেই সীমান্তবর্তী বদরপুরের মাঠেই সরকারের অর্ধকোটি টাকারও বেশি অর্থ গচ্ছা গেছে।
স্থানীয়রা জানান, সেসময় গেট বন্ধ করা হলেও এতে পানি ধরে রাখা যাচ্ছিল না। গেটের নিচ দিয়ে পানি বের হয়ে যেত। অন্যদিকে খালের পাড়ের উচ্চতার তুলনায় নিচুতে গেটটি নির্মাণের ফলে আবাদি জমির বড় অংশেই সেচ নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। ফলে কৃষকদের মাঝে আশা সঞ্চার হলেও বর্তমানে তা হতাশায় রূপ নিয়েছে।
বদরপুর তেতৈয়া ছড়ার আশেপাশের স্থানীয় কৃষক আবদুল কুদ্দুস বলেন, ‘নুরুল আমিন চেয়ারম্যান আন্ডা টেয়াদি কাম কইচ্ছে, চাইর হইসার উপকারো অয়নো।’
কৃষক তোফায়েল আহাম্মদ বলেন, ‘২০২১ সালে এই কাম কইচ্ছে, প্রতিবাদ কইচ্ছে আর চেয়ারম্যান আঁর মামতো ভাইরে মাইচ্ছে।’
কৃষক এয়ার আহমেদ বলেন, ‘দুই ফসলের আশায় নির্মিত স্লুইস গেটের কারণে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে এখানে আর ফসল করা যাবে না।’
স্থানীয় কৃষক আলম জানান, ‘হানির লাই উপকার কইচ্ছে হানি কিন্তু নাই, ২-৩ বার বরাদ্দ আইনছে, অনগা সুইস গেইট খাড়ই রইছে।’
স্লুইসগেটটি পুনরায় নির্মাণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছে স্থানীয় এলাকাবাসী।
এ বিষয়ে ফেনী বিএডিসির উপ-পরিচালক মো. আলি মিয়াজী বলেন, বিষয়টি প্রকৌশলের, আমার নয়।
দপ্তরটির সহকারী প্রকৌশলী কামরুল হাসানকে বারবার ফোন করা হলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।
মৌসুমে পানি ধরে রেখে চাষাবাদ অব্যাহত রাখতে তেতৈয়া খালের বদরপুর এলাকায় ৬০ লাখ টাকা ব্যয়ে স্লুইস গেইট নির্মাণ করে বিএডিসি। ক্ষুদ্র সেচ উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ২০১৯-২০ অর্থবছরে তেতৈয়া খালের ওপর অপরিকল্পিতভাবে বড় আকারের হাইড্রোলিক স্ট্রাকচার (স্লুইস গেট) নির্মাণ করা হয়।
আবদুল্লাহ আল-মামুন/এমএন/জিকেএস