রংপুরের তারাগঞ্জে ৬ মাসের এক মেয়ে শিশুকে গলা কেটে হত্যা করেছেন মা। সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) ভোরে উপজেলার কুর্শা ইউনিয়নের পলাশবাড়ি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত শিশু ওই গ্রামের বাবুলাল ও তুলসী রানী দম্পতির দ্বিতীয় মেয়ে। এ ঘটনায় আটক করা হয়েছে তুলসী রানীকে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শিশুটি কান্নাকাটি করায় দাদি পাতানী রানী সকালে তাকে দুধ খাওয়ানোর জন্য মা তুলসী রানীর হাতে দেন। কিছুক্ষণ পর শিশুটিকে ঘরে নিয়ে গলা কেটে হত্যা করেন তুলসী রানী। পরে রক্তাক্ত দেহ স্বামী বাবু লালের হাতে তুলে দেন তিনি। এসময় পাতানী রানী চিৎকার করলে গ্রামের লোকজন ছুটে এসে তুলসী রানীকে আটক করে রাখেন।
শিশুটির বাবা হোটেল শ্রমিক বাবু লাল বলেন, কিছু বুঝে উঠতে পারছি না। মাসখানেক ধরে বউ অসুস্থ। বাচ্চাটা আমার মায়ের কাছে থাকত ৷ আজ ভোরে দুধ খাওয়ার জন্য কান্না করছিল৷ এজন্য ওর মার কাছে দেয়। মেয়েটার কান্না থামলো, কিন্তু এভাবে থামবে ভাবিনি কোনোদিন।
শাশুড়ি পাতানী রানী জানান, ৫-৬ দিন ধরে নাতনি আমার কাছেই ছিল। সকালে কান্না করছিল, তাই বউকে দিই দুধ খাওয়াতে। কিছুক্ষণ পর দেখি ছেলে হাতে গলাকাটা বাচ্চা নিয়ে কাঁদছে। বউ শুধু চুপ করে আছে।
এদিকে ঘটনার পর আটক তুলসী রানী গণমাধ্যম কর্মীদের সামনে অসংলগ্ন কথাবার্তা বলেন। শারীরিক অসুস্থতা ও মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থার কারণে এমন মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে বলে মনে করছেন প্রতিবেশীদের অনেকে।
তুলসী রানীর ভাই মানিক মিয়া বলেন, আমার বোন সন্তানদের খুব ভালোবাসে। কিন্তু অসুস্থ থাকলে মানসিকভাবে স্বাভাবিক থাকে না। সুস্থ থাকলে এ কাজ কোনোদিন করতো না।
কুর্শা ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য সবিত্রী সেন জানান, ঘটনাটি খুবই মর্মান্তিক। শুনেছি নিহত শিশুর মা মানসিক রোগে ভুগছেন।
তারাগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ ফারুক বলেন, ওই নারীকে আটক করা হয়েছে। তিনি হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। স্বজনেরা জানিয়েছেন, তিনি মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন।
জিতু কবীর/এফএ/জিকেএস