দৈনিক কালবেলা পত্রিকার সাংবাদিক জাহাঙ্গীর মাহমুদের ওপর সন্ত্রাসী হামলা চালানো হয়েছে। এ সময় তার মাথা ও শরীর ইট দিয়ে থেঁতলে দেওয়া হয়। সংবাদ প্রকাশের জেরে ও দাবি করা চাঁদার টাকা না পেয়ে ছাত্রদল নেতা ইয়াসিন ও তার বাহিনী এ হামলা করেছেন বলে অভিযোগ করেন জাহাঙ্গীর।
রোববার (১৭ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার গোলাকান্দাইল দক্ষিণপাড়া ৫ নম্বর ক্যানাল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় আল রাফি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আহত জাহাঙ্গীর মাহমুদ দীর্ঘদিন ধরে কালবেলা পত্রিকার রূপগঞ্জ প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
অভিযুক্ত ইয়াসিন মিয়া ওরফে ফেন্সি ইয়াসিন নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহসাধারণ সম্পাদক। তিনি উপজেলার ভুলতা ইউনিয়নের সোনাব এলাকার আবু বক্করের ছেলে।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জাহাঙ্গীর মাহমুদ জানান, ইয়াসিন মিয়া ও তার বাহিনীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় মাদক, চাঁদাবাজি, জমি দখলসহ নানা অপরাধ নিয়ে ভুক্তভোগীদের বক্তব্যসহ এবং প্রশাসনের বরাতে কালবেলা পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়। এতে তার ক্ষতি হয়েছে দাবি করে এই প্রতিবেদকের ওপর ক্ষিপ্ত হন ইয়াসিন। গত ১৫ দিন ধরে ইয়াসিন সেই ক্ষতিপূরণ বাবদ জাহাঙ্গীর মাহমুদের কাছে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে বসেন। তাকে সংবাদের বিষয়ে কোনো প্রতিবাদ থাকলে যুক্তিসহ জানাতে বলেন জাহাঙ্গীর এবং সঠিক সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে কোনো চাঁদা দেওয়ার সুযোগ নেই বললে ইয়াসিন বিভিন্ন সময় জাহাঙ্গীর মাহমুদকে হত্যাসহ মামলা-হামলার হুমকি দিয়ে আসছিলেন।
তিনি আরও বলেন, এর জেরে রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ইয়াসিন মিয়ার নেতৃত্বে রাব্বি, ইমনসহ ৪০ থেকে ৫০ জন সন্ত্রাসী কায়দায় দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে জাহাঙ্গীর মাহমুদকে অবরুদ্ধ করে চাঁদা দাবি করে। একপর্যায়ে চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তারা ইট দিয়ে জাহাঙ্গীরের শরীরের বিভিন্ন অংশ ও মাথা থেঁতলে দেয়। এ সময় জাহাঙ্গীরের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে ইয়াসিন বেশ কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে এলাকা ত্যাগ করেন। পরে স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
এ ঘটনায় রূপগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সাংগঠনিক সম্পাদক ও দৈনিক কালের কণ্ঠের সাংবাদিক রাসেল আহমেদ বাদী হয়ে রূপগঞ্জ থানায় একটি অভিযোগ করেছেন।
ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে রূপগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট মাহফুজুর রহমান হুমায়ুন বলেন, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, মাদক ব্যবসায়ী ও অপরাধীরা দলের কেউ না। বিএনপিতে কোনো অপরাধীদের ঠাঁই নেই। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার করতে অনুরোধ জানাচ্ছি।
নারায়ণগঞ্জ জেলার সহকারী পুলিশ সুপার (গ. সার্কেল) মেহেদী ইসলাম বলেন, এটি একটি ন্যক্কারজনক ঘটনা। ইতোমধ্যে যৌথবাহিনী ঘটনাস্থলে অভিযান চালিয়েছে। এ হামলার সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের চিহ্নিত করে দ্রুত আইনের আওতায় আনব।