কালো টাকা সাদা করার সুযোগ অর্থপাচার রোধ করবে

3 months ago 54

প্রস্তাবিত বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ অর্থপাচার রোধ করবে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম চেম্বার সভাপতি ওমর হাজ্জাজ। তিনি বলেন, ১৫ শতাংশ কর পরিশোধের মাধ্যমে অপ্রদর্শিত আয় বা সম্পদ প্রদর্শন করার যে সুযোগ রাখা হয়েছে তা অর্থপাচার রোধে ভূমিকা রাখতে পারে।

বৃহস্পতিবার (৬ জুন) বিকেলে আগ্রাবাদের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের বঙ্গবন্ধু কনফারেন্স হলে তাৎক্ষণিক বাজেট প্রতিক্রিয়ায় তিনি এসব কথা বলেন।

ওমর হাজ্জাজ বলেন, বাজেটে মোট ব্যয় সাত লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা, মোট আয় পাঁচ লাখ ৪১ হাজার কোটি টাকা এবং মোট ঋণ দুই লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা। বাজেট ঘাটতি মেটাতে অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক উৎস থেকে ঋণ নেওয়া হবে। ঘাটতি বাজেট মোকাবিলায় বৈদেশিক ঋণের চেয়ে অভ্যন্তরীণ উৎসে গুরুত্ব দেওয়াকে দেশীয় সক্ষমতার বহিঃপ্রকাশ বলে মনে করি আমরা।

তিনি বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বড় মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে মূল্যস্ফীতি। বাজেটে মূল্যস্ফীতি ৬ দশমিক ৫ শতাংশের মধ্যে সীমিত রাখার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হলেও বাস্তবে দুই বছর যাবৎ মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশেরও বেশি। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির চাপে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমে যাচ্ছে। এই প্রেক্ষিতে বাজেটে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানির এলসিতে ব্যাংক কিংবা আর্থিক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক কর্তনকৃত কর আগের দুই শতাংশ থেকে কমিয়ে এক শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে, যা আশাব্যঞ্জক।

আরও পড়ুন

শিল্প মন্ত্রণালয়ের বাজেট কমানো দেশের শিল্প উন্নয়নের সহায়ক নয় দাবি করে তিনি বলেন, সরকার ২০২৪-২৭ সালের রপ্তানি নীতিখসড়া চূড়ান্ত করেছে। অথচ দেশের অভ্যন্তরীণ শিল্পায়নের ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখা শিল্প মন্ত্রণালয়ের গতবারের চেয়ে কম বরাদ্দ শিল্প উন্নয়নের ক্ষেত্রে সহায়ক নয়। তাই এই মন্ত্রণালয়ের বাজেট বাড়ানো প্রয়োজন।

এছাড়া নির্মাণখাতে অত্যাবশ্যকীয় সব ধরনের ইটের ওপর সুনির্দিষ্ট করহার বৃদ্ধি চলমান বিভিন্ন প্রকল্পের ব্যয় বাড়িয়ে দেবে যা নির্মাণ শিল্পে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে মত দেন চেম্বার সভাপতি।

তিনি আরও বলেন, বাজেটে স্বাভাবিক ব্যক্তি করদাতা ও ফার্মের করধাপ ও করহার নতুন শ্রেণিবিন্যাস অনুযায়ী মধ্যম আয়ের করদাতাদের ওপর করের চাপ কিছুটা কমে আসবে, যা তাদের জন্য মূল্যস্ফীতির চাপ মোকাবিলায় এবং অভ্যন্তরীণ বাজার চাহিদা সচল রাখতে সহায়ক হবে। কিন্তু বেশি আয়ের করদাতার করের হার বৃদ্ধি পাওয়ায় সামগ্রিক বিনিয়োগের ওপর কিছুটা বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে।

চেম্বার সভাপতি বলেন, প্রাইভেট কোম্পানির করহার শর্তসাপেক্ষে ২৭ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে ২৫ শতাংশ করা হয়েছে এবং এক ব্যক্তি কোম্পানির ক্ষেত্রে ২২ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে ২০ শতাংশ করা হয়েছে, যা বিনিয়োগ বৃদ্ধিকে উৎসাহিত করবে এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সহায়ক হবে। স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আইটিভিত্তিক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রমকে ক্যাশলেস হওয়ার শর্তে তিন বছর করমুক্ত রাখার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, যা প্রশংসনীয়।

একই সঙ্গে কিছু কিছু দেশীয় শিল্পের জন্য প্রয়োজনীয় কাঁচামাল আমদানিতে শুল্ক কমানো হয়েছে, যা ইতিবাচক বলে মত দেন চেম্বার সভাপতি।

এ সময় বাজেটে চট্টগ্রামে ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ প্রতিষ্ঠা ও মাতারবাড়ীতে দৈনিক এক হাজার মিলিয়ন ঘনফুট ক্ষমতাসম্পন্ন ল্যান্ড বেইজড এলএনজি টার্মিনাল স্থাপনের সিদ্ধান্তের জন্য সরকারকে সাধুবাদ জানিয়ে প্রকল্পসমূহ দ্রুত বাস্তবায়নের অনুরোধ জানান চেম্বার সভাপতি।

এএজেড/ইএ/জিকেএস

Read Entire Article