কালো বোরো ধানে স্বপ্ন বুনছেন যমুনাপাড়ের চাষিরা

বগুড়ার ধুনট উপজেলায় বহমান উত্তাল যমুনা এখন মরা নদী। কূলে জেগে উঠেছে বিশাল চর। চরের কোথাও সমতল, কোথাও উঁচু-নিচু। কিছু জায়গায় ছোট ছোট গর্ত। সেখানে আছে ছোপ ছোপ জমে থাকা পানি। চরের এসব গর্তে জমে থাকা পানিতে বোরো ধান রোপণকাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা। এ ধান রোপণে জমিতে কোনো চাষ দিতে হয়নি। এ কারণে উৎপাদন খরচ নেই বললেই চলে। তাই এ ধান চাষ করে লাভবান হচ্ছেন যমুনাপাড়ের চাষিরা। স্থানীয়রা জানান, শুকনো মৌসুমে এ বছর যমুনা নদীর কূলে জেগে ওঠা চরে বোরো ধান চাষ করেছেন শত শত কৃষক। প্রতি বছরই শুষ্ক মৌসুমে যমুনা নদী পানিশূন্য হয়ে যায়। তবে উজান থেকে নেমে আসা সামান্য পানিতেই নদীর কূলের ভূমিহীনরা প্রতি বছর চাষ করেন বোরো ধান। সেই ধারাবাহিকতা রক্ষা করে ধান চাষ করেছেন তারা। অধিকাংশ চাষি জেগে ওঠা চরে ৮-১০ বছর ধরে বোরো ধান চাষ করছেন। শুষ্ক মৌসুমের শুরুতেই নদীতে পানি কমে যায়। তখন বালুচরের জায়গা নিজেদের দখলে নিয়ে বোরো চাষের উপযোগী করে তোলার জন্য কাজে নেমে পড়েন চাষিরা। যমুনাপাড়ের বোরো চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নিজস্ব জমি না থাকায় তারা কোনো ফসলই চাষাবাদ করতে পারেন না। অন্যদিকে সেচ দেওয়া পানির চেয়ে নদীর চুয়ে

কালো বোরো ধানে স্বপ্ন বুনছেন যমুনাপাড়ের চাষিরা

বগুড়ার ধুনট উপজেলায় বহমান উত্তাল যমুনা এখন মরা নদী। কূলে জেগে উঠেছে বিশাল চর। চরের কোথাও সমতল, কোথাও উঁচু-নিচু। কিছু জায়গায় ছোট ছোট গর্ত। সেখানে আছে ছোপ ছোপ জমে থাকা পানি। চরের এসব গর্তে জমে থাকা পানিতে বোরো ধান রোপণকাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা। এ ধান রোপণে জমিতে কোনো চাষ দিতে হয়নি। এ কারণে উৎপাদন খরচ নেই বললেই চলে। তাই এ ধান চাষ করে লাভবান হচ্ছেন যমুনাপাড়ের চাষিরা।

স্থানীয়রা জানান, শুকনো মৌসুমে এ বছর যমুনা নদীর কূলে জেগে ওঠা চরে বোরো ধান চাষ করেছেন শত শত কৃষক। প্রতি বছরই শুষ্ক মৌসুমে যমুনা নদী পানিশূন্য হয়ে যায়। তবে উজান থেকে নেমে আসা সামান্য পানিতেই নদীর কূলের ভূমিহীনরা প্রতি বছর চাষ করেন বোরো ধান। সেই ধারাবাহিকতা রক্ষা করে ধান চাষ করেছেন তারা। অধিকাংশ চাষি জেগে ওঠা চরে ৮-১০ বছর ধরে বোরো ধান চাষ করছেন। শুষ্ক মৌসুমের শুরুতেই নদীতে পানি কমে যায়। তখন বালুচরের জায়গা নিজেদের দখলে নিয়ে বোরো চাষের উপযোগী করে তোলার জন্য কাজে নেমে পড়েন চাষিরা।

যমুনাপাড়ের বোরো চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নিজস্ব জমি না থাকায় তারা কোনো ফসলই চাষাবাদ করতে পারেন না। অন্যদিকে সেচ দেওয়া পানির চেয়ে নদীর চুয়ে আসা পানিতে বোরো চাষ অনেক বেশি উপকারী। তাই নদীর কূলে চরের নরম পলিমাটিতে বোরো ধান লাগানো হয়। এতে সার ও সেচসহ প্রতিটি ক্ষেত্রেই সাশ্রয় হয় চাষিদের। এ জাতের ধানের ফলন প্রতি বিঘায় প্রায় ৮-৯ মণ করে পাওয়া যায়।

jagonews

আরও পড়ুন
আমন ধান ঘরে তোলার আনন্দে মেতেছেন কৃষকেরা 
আমন ধানের ক্ষেতে পার্চিং পদ্ধতিতে আগ্রহ বাড়ছে 

নভেম্বরের শুরুর দিকে কালো বোরো ধানের বীজতলা তৈরি করেন চরাঞ্চলের চাষিরা। চারাগাছের বয়স ২৫-৩০ দিন হলে চাষিরা নদীর কূলে জেগে ওঠা চরে বিনা চাষে সেই চারা রোপণ করেন। এ ধান উৎপাদনে জমিতে হালচাষের প্রয়োজন হয় না, রাসায়নিক সারও তেমন একটা লাগে না। মার্চের শেষের দিকে এ ধানের ফসল ঘরে তোলা হয়।

যমুনার বাঁধে আশ্রিত সবুর মিয়া জানান, তিনি স্ত্রী, ২ ছেলে ও ১ মেয়েকে নিয়ে প্রায় ১০ বছর ধরে বাস করছেন বাঁধে। নিজের জমি না থাকায় বাড়ির পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া যমুনা নদীর বুকে জেগে ওঠা চরে প্রায় ১ বিঘা জমিতে কয়েক বছর থেকে বোরো ধান চাষ করে আসছেন। এ জমির ধান থেকেই তার পরিবারের কয়েক মাসের খাবারের জোগান হয়।

ধুনট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ছামিদুল ইসলাম জানান, নদীর তীরবর্তী দরিদ্র জনগোষ্ঠী কালো বোরো ধান চাষ করছেন। আগে এসব বালুচর পতিত থাকতো। নদীর এসব পতিত জমিতে বোরো ধান চাষ করে চাষিরা সচ্ছলতা পাচ্ছেন। এদিকে যমুনাপাড়ের কৃষকদের বোরো ধান চাষে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রায় সহায়ক ভূমিকা এবং চাষাবাদে ভূমিহীনদের আর্থিক অনটন ঘোচার পাশাপাশি এলাকার খাদ্য চাহিদা পূরণেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।’

এলবি/এসইউ

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow