কাশেম চেয়ারম্যানের জামিন, পিপির বিরুদ্ধে বিএনপি নেতার ক্ষোভ
জুলাই আন্দোলনে হামলার ঘটনায় বিস্ফোরক ও হত্যাচেষ্টার দুই মামলায় চট্টগ্রামের পটিয়ার আওয়ামী লীগ নেতা আবুল কাশেম চেয়ারম্যান জামিন পেয়েছেন। এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জেলা পিপির বিরুদ্ধে ক্ষোভ ঝেঁড়েছেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি গাজী মোহাম্মদ সিরাজ উল্লাহ। মঙ্গলবার রাতে পৃথক দুই পোস্টে এ ক্ষোভের কথা লেখেন গাজী সিরাজ। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আবুল কাশেম নৌকা প্রতীক নিয়ে জয়ী হয়েছিলেন। এর আগে মঙ্গলবার চট্টগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ আদালতে বিস্ফোরক এবং হত্যাচেষ্টার দুই মামলায় কারাবন্দি আওয়ামী লীগ নেতা আবুল কাশেমের জামিন শুনানি হয়। দুটি মামলাতেই তাকে জামিন দেন আদালত। তবে জামিন শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী জেলা পিপি অ্যাডভোকেট আশরাফ হোসেন রাজ্জাক ওই জামিনের বিরোধীতা না করার অভিযোগ করেন গাজী সিরাজ। মামলায় বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. ফোরকানুল ইসলামও একই অভিযোগ করেন জেলা পিপির বিরুদ্ধে। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন জেলা পিপি অ্যাডভোকেট আশরাফ হোসেন রাজ্জাক। গাজী মো. সিরাজ ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া)
জুলাই আন্দোলনে হামলার ঘটনায় বিস্ফোরক ও হত্যাচেষ্টার দুই মামলায় চট্টগ্রামের পটিয়ার আওয়ামী লীগ নেতা আবুল কাশেম চেয়ারম্যান জামিন পেয়েছেন। এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জেলা পিপির বিরুদ্ধে ক্ষোভ ঝেঁড়েছেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি গাজী মোহাম্মদ সিরাজ উল্লাহ।
মঙ্গলবার রাতে পৃথক দুই পোস্টে এ ক্ষোভের কথা লেখেন গাজী সিরাজ। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আবুল কাশেম নৌকা প্রতীক নিয়ে জয়ী হয়েছিলেন।
এর আগে মঙ্গলবার চট্টগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ আদালতে বিস্ফোরক এবং হত্যাচেষ্টার দুই মামলায় কারাবন্দি আওয়ামী লীগ নেতা আবুল কাশেমের জামিন শুনানি হয়। দুটি মামলাতেই তাকে জামিন দেন আদালত। তবে জামিন শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী জেলা পিপি অ্যাডভোকেট আশরাফ হোসেন রাজ্জাক ওই জামিনের বিরোধীতা না করার অভিযোগ করেন গাজী সিরাজ।
মামলায় বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. ফোরকানুল ইসলামও একই অভিযোগ করেন জেলা পিপির বিরুদ্ধে।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন জেলা পিপি অ্যাডভোকেট আশরাফ হোসেন রাজ্জাক।
গাজী মো. সিরাজ ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া) আসন থেকে এবং অ্যাডভোকেট আশরাফ হোসেন রাজ্জাক চট্টগ্রাম-১৬(বাঁশখালী) আসন থেকে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন।
জানা যায়, আবুল কাশেম চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের পৃষ্ঠপোষক, পটিয়া উপজেলা ইউপি চেয়ারম্যান সমিতির সভাপতি এবং কাশিয়াইশ ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান। কাশিয়াইশ এলাকায় তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের শেষ সময়ে এলাকায় প্রতিপক্ষকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ রয়েছে আবুল কাশেম চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। তাছাড়া জুলাই আন্দোলনে হামলা, বিস্ফোরণ ও হত্যা চেষ্টার একাধিক মামলায় আবুল কাশেম এজাহারভুক্ত আসামি ছিলেন।
আদালত-সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত ১২ নভেম্বর সীতাকুণ্ড উপজেলার সোনাইছড়ি এলাকার কেডিএস লজিস্টিক এলাকা থেকে আবুল কাশেম চেয়ারম্যান গ্রেপ্তার হন। তার বিরুদ্ধে চারটি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছিল। ১৩ নভেম্বর বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মিছিলে গুলিবর্ষণ, বোমা বিস্ফোরণ ও হামলা-ভাঙচুরের দুটি পৃথক মামলায় তাকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। ওই দিন পটিয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন বিচারক বেগম তাররাহুম আহমেদ।
পরে গত ১৭ নভেম্বর জেলা ও দায়রা জজ আদালতে মিস মামলা করে জামিন আবেদন করেন আবুল কাশেমের আইনজীবী। ২৪ নভেম্বর চট্টগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ মো. হেমায়েত উদ্দিনের আদালতে জামিন শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। তবে কাশেম চেয়ারম্যানের পক্ষে সময়ের আবেদন করলে মঙ্গলবার একই আদালতে জামিন শুনানি হয়। দুই মামলায় আদালত তার জামিন শুনানি করেন।
বাদীপক্ষের আইনজীবীদের অভিযোগ মিস মামলার এক সপ্তাহের মধ্যে জামিন শুনানি একই মামলার অন্য আসামিদের ক্ষেত্রে হয়নি। আওয়ামী লীগপন্থি আসামিদের ক্ষেত্রে গ্রেপ্তারের এক মাস পর শুনানির তারিখ নির্ধারণ হলেও কাশেমের ক্ষেত্রে দ্রুত শুনানির দিন ধার্য হয়েছে।
বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ফোরকানুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, ‘বিস্ফোরণ ও হত্যাচেষ্টা মামলার এজাহারভুক্ত আসামির এভাবে দ্রুত জামিন হয় না। এ ধরনের মামলায় অজ্ঞাত আসামিদেরও এক মাস, দেড় মাস পরে জামিন হয়। অথচ কাশেম চেয়ারম্যান গ্রেপ্তার হয়েছে দুই সপ্তাহও হয়নি। আমরা (মঙ্গলবার) আদালতে জামিনের বিরোধীতা করেছি। কিন্তু রাষ্ট্রপক্ষের পিপি জামিনের বিরোধীতা করেননি। তিনি চেয়ার থেকে দাঁড়ানওনি। অথচ আসামির জামিনের বিরোধীতা করা পিপি হিসেবে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীর দায়িত্ব। পিপির সহযোগিতা না থাকলে এত দ্রুত জামিন শুনানি হওয়ার কথা নয়।’
এদিকে কাশেম চেয়ারম্যানের জামিনের বিষয়ে জেলা পিপির বিরুদ্ধে ফেসবুকে ক্ষোভ প্রকাশ করেন গাজী মো. সিরাজ। মঙ্গলবার রাত ৮টা ৫০ মিনিটে তার নিজের ফেসবুক পেজে লেখেন, ‘পটিয়ার আওয়ামী লীগের দোসর আবুল কাশেম চেয়ারম্যানকে জামিন নিজ দায়িত্ব করিয়ে নিলেন জেলা পিপি এডভোকেট আশরাফ হোসেন রাজ্জাক। তাকে অপসারণের জন্য চট্টগ্রাম বিএনপির দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। ১৭ বছর আন্দোলনে রাজপথে তার কোন ভূমিকা ছিল না’
এর আগে সন্ধ্যা ৭টা ৩১ মিনিটে গাজী মো. সিরাজ ফেসবুক পেজে লেখেন, ‘চট্টগ্রাম জেলা আদালতে চলছে জমজমাট ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ নেতাদের জামিন বাণিজ্য। রাষ্ট্রপক্ষ নিরব! একটা সংঘবদ্ধ বিএনপি নেতা নামধারী চক্র বিশেষ সুবিধা নিয়ে মামলা ও জামিন বাণিজ্য করছেন। এ জামিন বাণিজ্যের কারণে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এতে তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের মাঝে ক্ষোভ সৃষ্টি হচ্ছে। বিএনপি ও রাষ্ট্রের হাইকমান্ডের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।’
গাজী সিরাজ জাগো নিউজকে বলেন, ‘ওই জামিন শুনানিতে কাশেম চেয়ারম্যানের পক্ষে বিএনপিপন্থি অনেক আইনজীবী ছিলেন। অন্য আদালতের পিপিও কাশেমের পক্ষে জামিন শুনানিতে অংশ নেন। জেলা পিপির সম্মতি থাকায় কাশেম চেয়ারম্যানের জামিন হয়েছে।’
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন পিপি অ্যাডভোকেট আশরাফ হোসেন রাজ্জাক। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘ওখানে বাদীপক্ষের ল’ইয়্যার ছিলো প্রায় ১০-১২ জন। রাষ্ট্রপক্ষের শক্ত বিরোধীতা থাকে সবসময়। বাদী পক্ষের ল’ইয়্যাররা আমার অনুমতি নিয়ে শুনানিতে সাবমিশন দিয়েছেন। তারা রাষ্ট্রপক্ষের অনুমতি নিয়েই আসামির জামিনের বিরোধীতা করেছে। আদালতে তাদের বক্তব্য মানে আমার বক্তব্য। তবে জামিন দেওয়ার বিষয়টি আদালতের এখতিয়ার। তাতে আমার কোনো বক্তব্য নেই।’
এমডিআইএইচ/এমএমএআর/জেআইএম
What's Your Reaction?